বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জেরে খুন! দিঘা থেকে ধৃত যুবক ও সঙ্গিনী

ব্যারাকপুর : ত্রিকোণ প্রেমের ভয়াবহ পরিণতি!
শ্যামনগরের নিমতলা ঘাট রোডের বাসিন্দা সুপ্রিয়া ঘোষের ( ২৯) দেহ উদ্ধারের তিন দিনের মাথায় তাঁর ‘প্রেমিক’ ও প্রেমিকের বান্ধবীকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ। গত ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে নিখোঁজ ছিলেন জগদ্দল থানার শ্যামনগর নিমতলা ঘাট রোডের বাসিন্দা সুপ্রিয়া ঘোষ। মহিলা বিবাহিত। ১৭ সেপ্টেম্বর জগদ্দল থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। ইতিমধ্যে মঙ্গলবার বেলায় পূর্ব মেদিনীপুরে তমলুক-দিঘা রেলপথে রামনগর স্টেশনের কিছুটা দূরে একটি ঝোপ-জঙ্গল থেকে পুলিশ এক বধূর মৃতদেহ উদ্ধার করে।
তারপরই তদন্তের সূত্রে ধরে সামনে আসে ত্রিকোন প্রেমের গল্প। ঘটনার তদন্তে নেমে মোবাইল টাওয়ার লোকেট করে জগদ্দল থানার পুলিশ দিঘার একটি হোটেল থেকে মঙ্গলবার রাতে দীপ শেখর বসু ও সুস্মিতা রায়কে গ্রেপ্তার করে। এঁরা বরানগরে ঘরভাড়া করে লিভ ইন থাকতেন। প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান, সুপ্রিয়াকে দিঘায় ঘুরতে যাওয়ার নাম করে নিয়ে যান দীপশেখর। দিঘা যাওয়ার আগেই দীপশেখর ও তাঁর আগের বান্ধবী সুস্মিতা মিলে ‘পথের কাঁটা’ সুপ্রিয়াকে খুন করে ঝোপে ফেলে দেন।
তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, শ্যামনগর গাঙ্গুলি পাড়ায় একটি জুম্বা অনুশীলন সেন্টারে প্রশিক্ষক ছিলেন মৃত তরুণী। ওই সেন্টারের কর্নধারের মাধ্যমে দীপশেখরের সঙ্গে পরিচয় ঘটে বিবাহিতা ওই তরুণীর। পরবর্তীতে দু’জনের মধ্যে প্রণয়ের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সেই সম্পর্কের বিষয় জানতে পারেন দীপের সঙ্গিনী সুস্মিতা। সম্পর্কের তীব্র আপত্তি জানায় সুস্মিতা। দীপ-সুস্মিতার মধ্যে অশান্তি শুরু হয়। ™থের কাঁটা সরাতে পরিকল্পনা মাফিক সুপ্রিয়াকে নিয়ে তারা গত ১৬ সেপ্টেম্বর দিঘায় বেড়াতে যায়। পুলিশ জানিয়েছে, দিঘার একটি হোটেলে দীপ-সুস্মিতা মিলে সুপ্রিয়াকে শ্বাসরোধ করে খুন করে করে। তারপর সেই মৃতদেহ একটি ট্রলি ব্যাগে ভোরে রামনগর স্টেশনের কাছে ঝোপে তারা ফেলে দেয়।
মৃতার পরিবার জানিয়েছে সুপ্রিয়া নিখোঁজের অভিযোগ জানানোর দিনই রামনগর থানার পুলিশ মারফত খবর আসে রামনগরে এমনই এক মহিলার দেহ মিলেছে। শ্যামনগর থেকে সুপ্রিয়ার পরিবারের লোকজন সেখানে গিয়ে মৃতদেহ শনাক্ত করেন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, তরুণী মারা যাওয়ার আগে তাঁর এক বান্ধবীকে ফোনে মেসেজ করেছিলেন। তাতে মৃত তরুণী লিখেছিলেন, খুব খারাপ অবস্থায় আছি। এই মুহুর্তে বলতে পারছি না।
মৃতার স্বামী অতনু ঘোষ বলেন, ‘গত ১৬ সেপ্টেম্বর ভোরে তাঁর স্ত্রী বাড়ি থেকে বাড়িয়েছিলেন। কাজের সূত্রে স্ত্রী হয়তো ওখানে গিয়েছিল। মঙ্গলবার বেলায় রামনগর থানা থেকে খবর পেয়ে ওখানে গিয়ে স্ত্রীর দেহ শনাক্ত করি। জগদ্দল থানায় অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ দীপশেখর বসু ও তাঁর সঙ্গিনীকে গ্রেপ্তারও করেছে।’

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

5 × 1 =