নিজস্ব প্রতিবেদন, কাঁকসা: কোনও কারণ ও নোটিশ ছাড়াই ৭২ জন ঠিকা শ্রমিককে ছাঁটাই করার অভিযোগে প্রতিবাদে কাঁকসার গোপালপুরের একটি বেসরকারি কারখানার সামনে বুধবার ভোর ৫টা থেকে কারখানার গেটের সামনে প্ল্যাকার্ড-পোস্টার নিয়ে বিক্ষোভে বসেন। অবশেষে সন্ধ্যা নাগাদ কাঁকসা থানার পুলিশের হস্তক্ষেপে কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার পর কারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের দাবি মেনে নেয়। বৃহস্পতিবার থেকে শ্রমিকরা পুনরায় কাজে যোগ দেবে এমনই প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পরেই বিক্ষোভ উঠিয়ে নেন শ্রমিকরা। একে অপরকে সবুজ আবির মাখিয়ে আনন্দে মেতে ওঠেন শ্রমিকরা। ছাঁটাই হওয়া শ্রমিকরা সকলেই তৃণমূল শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটি ইউসির সমর্থক এবং স্থানীয় বাসিন্দা বলে দাবি। যাদের মধ্যে অধিকাংশই তপশিলি জাতি ও উপজাতি সম্প্রদায়ের। শ্রমিকদের অভিযোগ, কোনও কারণ ছাড়াই এবং আগে থেকে নোটিশ না দিয়েই আচমকা ১ নভেম্বর থেকে কাজ থেকে বসিয়ে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
এই ঘটনায় অন্যান্য কারখানার ঠিকা শ্রমিকদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। হয়তো তাদের ভাগ্যেও ছাঁটাইয়ের খাঁড়া নেমে আসতে পারে আগামী দিনে। বেসরকারি ওই ইস্পাত কারখানার কাজ হারানো শ্রমিকদের দাবি, তাঁদেরকে অন্যান্য বিভাগে নিয়োগ করা হোক কিন্তু তাদের ছাঁটাই করা চলবে না। তাঁদের কাজ ফিরিয়ে না দিলে তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। এক শ্রমিক ডালু টুডুর দাবি, কারখানায় স্থায়ীভাবে কাজ করছিলেন। কোনও নোটিশ ছাড়াই কাজ থেকে বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে। চাষের জমি দিয়েছিলাম কাজ পাব বলেই। আজ ভিন রাজ্য গুজরাত, উত্তরপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ড থেকে শ্রমিক এনে কাজ করানোর চক্রান্ত করছে মালিকপক্ষ। কিন্তু তাঁরা তা হতে দেবেন না। তাঁরা এই কারখানার গেটেই বসে থেকে আন্দোলন করবেন। কাজ চলে গেলে সংসার চালাবেন কী করে? প্রয়োজন হলে কারখানার গেটে আত্মহত্যা করবেন কিন্তু কারখানার গেট ছেড়ে যাবেন না বলেই স্পষ্ট জানিয়েছেন তিনি।
ভুপেন রজক বলে এক শ্রমিকের দাবি, আচমকাই কাজ থেকে বসিয়ে দিয়েছে। এখন কোথায় কাজ পাবেন। আসলে কারখানা কর্তৃপক্ষ লুকিয়ে ভিন রাজ্যের শ্রমিকদের নিয়ে আসছে কারখানায় কাজ করানোর জন্য। তাই তাঁদের কাজ থেকে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তঁরাা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। এর শেষ দেখেই ছাড়বেন বলে দাবি তাঁর। ঘটনার কথা জানতে পেরে তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে লেবার কমিশন,মহকুমা শাসক, কাঁকসার বিডিও, কাঁকসা থানা ও বেসরকারি ওই কারখানা কর্তৃপক্ষের কাছে ওই ৭২ জন শ্রমিক যাতে পুনরায় কাজ ফিরে পায় তার দাবি জানানো হয়েছে।
এই বিষয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তাদের মতামত পাওয়া যায়নি। অপর দিকে শ্রমিকদের আন্দোলনের কথা জানতে পেরে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় কাঁকসা থানার পুলিশ। ™ুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি সামাল দেয়।