চার কেন্দ্রীয় এজেন্সির শীর্ষকর্তা বদলের দাবিতে নির্বাচন কমিশনে তৃণমূল, বসেন ধর্নাতেও

ভোটের সময় এনআইএ, সিবিআই, ইডি এবং আয়কর দপ্তরের ডিরেক্টর এখনই বদল করুক কমিশন। এই দাবিতে দিল্লির জাতীয় নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছে তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। জানা গিয়েছে কমিশনের সামনে ধর্নায় বসেন তৃণমূলের ১০ সদস্য। ২৪ ঘণ্টার জন্য তাঁরা ধর্না দেবেন বলে খবর ছিল। কিন্তু ধর্নায় বসার মিনিট পনেরোর মধ্যে দিল্লি পুলিশ তাঁদের তুলে দেয়। অভিযোগ, তৃণমূল সাংসদের টেনে হিঁচড়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। তাদের আটক করেছে দিল্লি পুলিশ। এর আগেও বার দু’য়েক কেন্দ্রীয় এজেন্সির বিরুদ্ধে কমিশনে অভিযোগ জানিয়েছে তৃণমূল। গত সোমবার দিল্লিতে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার এবং অন্য নির্বাচন কমিশনারদের সঙ্গে দেখা করে চিঠিও দেয় তৃণমূল।

এদিন হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে ধর্না শুরু করেন তৃণমূলের ১০ সদস্য। প্ল্যাকার্ডে লেখা, এনআইএ, সিবিআই, ইডি এবং আয়কর দপ্তরের ডিরেক্টরের বদল চাই। এর ১৫ মিনিটের মধ্যে দিল্লি পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। প্রথমে বুঝিয়ে তাঁদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু তাতে কাজ না হওয়ায় রীতিমতো টেনে হিঁচড়ে তৃণমূল সদস্যদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। তোলা হয় দুটি বাসে। সূত্রের দাবি, তাদের মন্দিরমার্গ থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। যখন তাঁদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, সেই সময় কেন্দ্রী বিরোধী স্লোগান দিতে শুরু করেন বিদায়ী সাংসদরা।

এ প্রসঙ্গে তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন জানান, ‘কৃষিভবনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হল আজ। আমরা তো বলেছি, দেশজুড়ে জমিদারি রাজ চলছে। এদিন সেটাই আরও একবার প্রমাণ হয়ে গেল।’

সোমবার দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনের দপ্তরে যায় তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। সেই দলে ছিলেন ডেরেক ও’ব্রায়েন, মহম্মদ নাদিমুল হক, দোলা সেন, সাকেত গোখলে, সাগরিকা ঘোষ, বিবেক গুপ্তা, অর্পিতা ঘোষ, শান্তনু সেন, অধীররঞ্জন বিশ্বাস এবং সুদীপ রাহা। সেখান থেকে বেরিয়ে তৃণমূল সাংসদ দোলা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। এই কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিকে কেন্দ্র নিজের কাজে ব্যবহার করছে বসেও অভিযোগ এনেছে তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। গোটা দেশে নির্বাচনী আচরণবিধি জারি রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে তৃণমূলের আরও আর্জি, ঝড়বিধ্বস্ত উত্তরবঙ্গে এখনই নতুন ঘর তৈরির অনুমতি দেওয়া হোক রাজ্য প্রশাসনকে।

এনআইএর হাতে দুই তৃণমূলকর্মীর গ্রেফতারি প্রসঙ্গ তুলেই তিনি আক্রমণ করেন বিজেপিকে। তাঁদের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় সংস্থাকে কাজে লাগানোর অভিযোগ করেন। দোলা বলেন, ‘বিজেপির তিওয়ারি এবং এনআইএর মধ্যে কী ভাব-ভালবাসা হল জানি না। তার ফল, ২০২২ সালের ঘটনায় ২০২৪ সালে ভোটের আগে এনআইএ  গ্রেপ্তার করল। তা-ও রাত সাড়ে তিনটের সময় এসে। মেয়েদের হেনস্থা করল।’

এর পর দোলা আক্রমণ করেন প্রধানমন্ত্রীকে। বলেন, ‘মোদিবাবু যদি মনে করেন, সবই জমিদারি, কেন্দ্রীয় সংস্থা তাঁদের, তাহলে ভুল করছেন। আমরা কমিশনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। চাই, সমান মাঠে খেলার ব্যবস্থা করুক। বিজেপির জমিদারি যেন বন্ধ হয়। দাবি করেছি, এখনই চার সংস্থার প্রধানকে বদল করা হোক। যাতে বিজেপি ওঁদের খেলার যন্ত্র ভাবতে না পারে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

17 − 3 =