উপাচার্য নিয়োগে জট কাটাতে সার্চ কমিটি গঠন করতে চলেছে সুপ্রিম কোর্ট

বাংলার উপাচার্য নিয়োগ বিতর্কে নয়া মোড়। এবার উপাচার্য নিয়োগে জট কাটাতে সার্চ কমিটি গঠন করবে শুক্রবার এমনটাই জানাল সুপ্রিম কোর্ট। একইসঙ্গে শীর্ষ আদালতের তরফ থেকে এও জানানেো হয়, উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে চলতি সঙ্কট কাটাতে সাহায্য করতে হবে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে। এর পাশাপাশি পারস্পরিক মতভেদ দূরে সরিয়ে রেখে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নতির দিকে নজর দেওয়ার জন্য রাজ্য এবং রাজ্যপাল, দু’পক্ষকেই উদ্যোগী হতেও বলে শীর্ষ আদালত। আপাতত মৌখিক ভাবে জানালেও আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর এই কমিটি গঠন করে দেবে সুপ্রিম কোর্টই।

মূলত রাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগের ক্ষেত্রে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে এই সার্চ কমিটি। অর্থাৎ উপাচার্য নিয়োগে পুরো রাশ নিজের হাতে নিল শীর্ষ আদালত। উল্লেখ্য, এর আগের শুনানিতে আদালত স্পষ্ট করে বলে দিয়েছিল, রাজ্যপাল অর্থাৎ চ্যান্সেলর, রাজ্য সরকারের তরফ থেকে শিক্ষামন্ত্রীকে আলোচনায় বসতে হবে। রাজ্যের শিক্ষাক্ষেত্রে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে যে জটিলতা তৈরি হয়েছে, তা নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে একটি সমাধানসূত্র খুঁজে বার করতে হবে। শুক্রবারের শুনানিতে সেই বিষয়টি আবার উত্থাপিত হয়। আদালত এদিনও জানতে চায়, আদৌ রাজ্য সরকার ও রাজ্যপাল এই ধরনের কোনও আলোচনায় বসেছিল কিনা।

এরই পাশাপাশি শুক্রবার শীর্ষ আদালতের তরফ থেকে রাজ্য সরকার, রাজ্যপাল, ইউজিসি-কে নাম জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয়। আর এই নামের প্রস্তাব জমা দেওয়ার নির্দেশ জানানো হয়েছে এক সপ্তাহের মধ্যেই। শুক্রবারের শুনানিতে বিচারপতিরা রাজ্য সরকার ও রাজ্যপালের আইনজীবীর কাছে জানতে চান, যদি আদালত একটি সার্চ কমিটি গঠন করতে চায়, তাহলে তাঁদের কী বক্তব্য। এদিকে রাজ্য সরকারের তরফে এ আবেদনও করা হয়, তাহলে কমিটিতে কে কে থাকবেন এই দায়িত্বও যেন আদালত-ই নেয়। রাজ্যপাল ও ইউজিসির তরফ থেকেও আইনজীবীরা জানিয়ে দেন, তাঁদের কোনও আপত্তি নেই।এরপরই সুপ্রিম কোর্ট তিন পক্ষকেই বলে, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে কমিটি তৈরির জন্য তিন থেকে পাঁচ জন বিশেষজ্ঞের প্রস্তাবিত নামের তালিকা তৈরি করতে। সেই প্যানেল থেকেই বিশেষজ্ঞদের কমিটি তৈরি করবে শীর্ষ আদালত। তার ভিত্তিতে আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর পরবর্তী শুনানি হবে। একটি সার্চ কমিটি গঠন করবে সুপ্রিম কোর্ট।

এদিকে রাজ্য সরকারের তরফে আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি অভিযোগ করেন, তাঁরা বারবার আলোচনার আবেদন করেছেন, কিন্তু রাজ্যপালের তরফ থেকে কোনও সদুত্তর মেলেনি। এরপর রাজ্যপালের আইনজীবী শীর্ষ আদালতের কড়া প্রশ্নের মুখে পড়েন। বিচারপতি জানতে চান, আদালতের নির্দেশের পরও কেন রাজ্যপাল আলোচনায় বসেননি তা নিয়েও। উত্তরে রাজ্যপালের আইনজীবীর অভিযোগ, রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী প্রকাশ্যে রাজ্যপালকে যে ধরনের মন্তব্য করছেন, তা কখনই কাম্য নয়। যদিও রাজ্যপালের আইনজীবীর এই বক্তব্য গৃহীত হয়নি। আদালত স্পষ্ট করে দেয়, এটা কোনও ব্যক্তিগত অহংয়ের জায়গা নয়। শিক্ষাব্যবস্থাকে সুষ্ঠভাবে পরিচালনা করতে গেলে এই পদক্ষেপ অত্যন্ত জরুরি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

two × four =