এসএসসি মামলায় বড় সিদ্ধান্ত সুপ্রিম কোর্টের। কলকাতা হাইকোর্টের রায়ে বাতিল ২৫ হাজার ৭৫৩ জনের চাকরি। এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য। ওই মামলার শুনানি শেষে আপাতত চাকরি বাতিলের রায়ে স্থগিতাদেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের বেতন ফেরতের নির্দেশের উপর অন্তর্র্বতী স্থগিতাদেশ জারি করল শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, পুরো প্যানেল বাতিল করা শেষ পদক্ষেপ হওয়া উচিত। যোগ্য-অযোগ্য পৃথকীকরণ সম্ভব হলে, সেক্ষেত্রে শুধুমাত্র তাঁদেরই চাকরি বাতিল হওয়া উচিত। যদিও আইনজীবী ফিরদৌস শামিম জানিয়েছেন, আদালত আপাতত বেতন ফেরতের উপর অন্তর্র্বতী স্থগিতাদেশ দিয়েছে। তবে একইসঙ্গে এও জানিয়েছে, যাদের নিয়োগ বেআইনি ধরা পড়বে, তাদের বেতন ফেরত দিতে হবে। এর পাশাপাশি সুপার নিউমেরারি তদন্তে মন্ত্রিসভার সদস্যদের বিরুদ্ধে এখনই সিবিআই কোনও কড়া পদক্ষেপ করতে পারবে না বলে জানিয়েছে শীর্ষ আদালত। যদিও সিবিআই তদন্ত চালিয়ে যেতে পারবে বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। আগামী ১৬ জুলাই এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টে দাঁড়িয়ে এসএসসির আইনজীবী দাবি করেন, কারও চাকরি বাতিল করতে পারে না আদালত। পালটা ওএমআর শিট নষ্ট নিয়েও প্রধান বিচারপতির প্রশ্নের মুখে পড়ে এসএসসি। তাদের দাবি, ডিজিটাল তথ্য রয়েছে। তাহলে কেন চেয়ারম্যান ওএমআর শিটের ‘মিরর ইমেজ’ নেই বলে দাবি করলেন, প্রশ্ন প্রধান বিচারপতির। এসএসসির দাবি, নাইসার কাছ থেকে ‘মিরর ইমেজ’ নেওয়া হয়েছে। এবং সেগুলি প্রকাশও করা হয়েছে।
নাইসাকে বরাত দেওয়ার ক্ষেত্রে কেন যথাযথভাবে টেন্ডার ডাকা হয়নি, সে প্রশ্নও তোলেন প্রধান বিচারপতি। তিনি বলেন, ‘নাইসাকে বরাত দেওয়া হল। নাইসা আবার আরও এক সংস্থাকে টেন্ডার দিল। কেন বলেননি নিজে না পারলে বরাত নেওয়ার প্রয়োজন নেই। গুরুত্বপূর্ণ গোপনীয় নথি কেন অন্যের হাতে তুলে দিলেন। তথ্য সংরক্ষণের দায়িত্ব সম্পূর্ণ এসএসসির। এটা নিরাপত্তা লঙ্ঘন। এসএসসি দায়িত্ববানের মতো কাজ করেনি।’
একনজরে কি কি বলল সুপ্রিম কোর্ট
১. ২৫ হাজার ৭৫৩ জনের চাকরি বাতিলে আপাতত স্থগিতাদেশ।
২. যোগ্যদের আলাদা করা গেলে পুরো প্যানেল বাতিল করা অন্যায্য হবে।
৩. চাকরিহারারা মুচলেকা দেবেন। এখনই বেতম ফেরত নয়।
৪. নিয়োগ অবৈধ প্রমাণিত হলে টাকা ফেরত দিতে হবে।
৫. অবৈধ নিয়োগ নিয়ে সিবিআই তদন্ত চালিয়ে যাবে। কিন্তু কড়া পদক্ষেপ করতে পারবে না।
৬. সুপারনিউমেরারি পদ তৈরি নিয়ে সিবিআই তদন্তে স্থগিতাদেশ বহাল থাকবে।
৭. আগামী ১৬ জুলাই এই মামলার চূড়ান্ত নির্দেশ দেবে তিন বিচারপতির বেঞ্চ।
‘সুপ্রিম কোর্টে ন্যায়
মিলেছে, আমি খুশি’
এসএসসি মামলা নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট যে নির্দেশ দিয়েছে, তাতে তিনি খুশি। এ জন্য সমগ্র শিক্ষক সমাজকে অভিনন্দন জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সুপ্রিম কোর্টকে জানিয়েছেন আন্তরিক শ্রদ্ধা। নিজের এক্স হ্যান্ডলে এ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, ‘সুপ্রিম কোর্টে ন্যায় প্রাপ্তির পর আমি বাস্তবিকই খুব খুশি এবং মানসিক ভাবে তৃপ্ত। সামগ্রিক ভাবে শিক্ষক সমাজকে জানাই আমার অভিনন্দন এবং মাননীয় সুপ্রিম কোর্টকে জানাই আমার আন্তরিক শ্রদ্ধা।’