রাজীব গান্ধি হত্যা মামলায় দোষী সাব্যস্ত নলিনী-সহ ৬ জনকেই মুক্তি দিল সুপ্রিম কোর্ট

শুক্রবার রাজীব গান্ধি হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রাপ্ত ৬ জন আসামীকেই মুক্তির আদেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতি বিআর গাভাই এবং বিচারপতি বিভি নাগারত্নের বেঞ্চ বলেছে, ‘এই আবেদনকারীদের মুক্ত করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হল।’ এর আগে চলতি বছরের ১৭ মে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল এই মমলার আরেক অভিযুক্ত পেরিভালানকে। এদিন মুক্তি দেওয়া হল নলিনী, শান্তন, মুরুগান, শ্রীহরণ, রবার্ট পায়াস এবং রবিচন্দ্রনকে। এরা প্রত্যেকেই রাজীব গান্ধি ও আরও ২১ জনের হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত। ফলে, রাজীব হত্যা মামলার সকল আসামীই মুক্তি পেয়ে গেলেন।

১৯৯১ সালের ২১ মে তামিলনাড়ুর শ্রীপেরুম্বুদুরে কংগ্রেস প্রার্থীর হয়ে নির্বাচনী প্রচারে গিয়েছিলেন রাজীব গান্ধি। সেখানে আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ঘটায় জঙ্গি সংগঠন লিবারেশন টাইগারস অফ তামিল ইলম (এলটিটিই)। এলটিটিই-র (LTTE) সদস্য ধানু নামে এক মহিলা আত্মঘাতী জঙ্গি নিজেকে বোমার সঙ্গে উড়িয়ে দিয়েছিলে। তাতেই মৃত্যু হয় ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর। এই ঘটনায় মোট সাতজনকে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ দেয় আদালত। অভিযুক্ত ছিল মুরুগান, সান্থান, পেরারিভালান, জয়াকুমার, রবিচন্দ্রন, রবার্ট পায়াস ও নলিনী। প্রথমে এদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হলেও পরে সাজা কমিয়ে যাবজ্জবীন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। মূলত সোনিয়া গান্ধির হস্তক্ষেপেই সাজা কমে তাদের।

আদালত জানিয়েছে পেরিভালানকে যে কারণে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল,সেই একই কারণে মুক্তি দেওয়া হয়েছে বাকি ৬ জনকে। পেরিভালানের ক্ষেত্রে শীর্ষ আদালত বলেছিল, তাঁর ক্ষমার আবেদনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে রাজ্যপাল অনেক বিলম্ব করেছেন। তাই সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১৪২-এর আওতায় পাওয়া বিশেষ ক্ষমতার ব্যবহার করেছিল আদালত। অনুচ্ছেদ ১৪২-এ বলা হয়েছে, বিচারাধীন কোনও মামলার ক্ষেত্রে ন্যায়বিচার করার জন্য সুপ্রিম কোর্ট তার এক্তিয়ার প্রয়োগ করে প্রয়োজনীয় আদেশ দিতে পারে। তামিল নাড়ু সরকারের পক্ষ থেকেও তাঁর মুক্তির সুপারিশ করেছিল বলে জানিয়েছিল আদালত।

আদালত আরও জানিয়েছে, আসামীদের প্রত্যেকেরই তিন দশকের বেশি সময় কারাগারে কাটিয়েছেন। সেই সময়ে তাদের আচার-আচরণ ভাল ছিল এবং তারা সকলেই জেলে বসে বিভিন্ন ডিগ্রি অর্জন করেছেন। আসামীদের মধ্যে কয়েকজন বিভিন্ন অসুস্থতাতেও ভুগছেন। সবদিক বিবেচনা করেই তাদের মুক্তি দেওয়া হল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

20 + eight =