মনোনয়ন পর্বের প্রথম দিন থেকেই গ্রাম দখল নিয়ে শুরু হয়েছে শাসক বিরোধী লড়াই। ঘটেছে রক্তপাতও। এদিকে বৃহস্পতিবার ছিল মনোনয়নের শেষ। শেষ দিনে ১.৩৮ লক্ষ মনোনয়ন জমা দেওয়া বাকি ছিল। তবে এরপর কীভাবে এতো মনোনয়ন সম্ভব তা নিয়েই দোলাচলে ছিলেন বিরোধীরা। গত ১৪ তারিখ প্রথম চার ঘণ্টাতেই মনোনয়ন জমা পড়ে ৪০ হাজার। অর্থাৎ গড় করলে প্রতি দু’মিনিটে পড়ল একটি মনোনয়ন জমা। আদৌ কি প্রযুক্তিগতভাবেও সম্ভব তা নিয়ে প্রশ্ন তোলে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।
শুক্রবার থেকে রাজ্যে ভোটের মনোনয়ন জমা দেওয়ার পর্ব শুরু হয়েছে। মনোনয়নের জমা দেওয়ার প্রথম দু’দিনের প্রবণতায়, প্রথমেই ছিল বিজেপি, তারপর সিপিএম, তারপর কংগ্রেস। কমিশনের দেওয়া হিসাব অনুযায়ী, শনিবার পর্যন্ত বিজেপি একাই মনোনয়ন দিয়েছে ৪,৯০৩টি। দ্বিতীয় স্থানে ছিল সিপিএম। কিন্তু শেষবেলাতেই চমক দিয়েছে তৃণমূল।
এরপর শুক্রবার সকালে সুকান্ত মজুমদার একটি পরিসংখ্যান দিয়ে টুইট করে লেখেন, ‘মনোনয়ন জমা দেওয়ার পর্বে কেবল চার ঘণ্টাতেই জমা পড়েছে ৪০ হাজার মনোনয়ন। তার মানে গড় করলে একটি মনোনয়ন জমা করতে সময় লেগেছে ২ মিনিট। তার মানে এটাই প্রমাণ করে রাজ্য সরকার কিছু একটা সন্দেহজনক কাজ করেছে।‘
প্রসঙ্গত, রাজ্যে মোট গ্রাম পঞ্চায়েতের সংখ্যা ৩, ৩১৭ টি। জেলা পরিষদের সংখ্যা ২০, পঞ্চায়েত সমিতি ৩৪১ টি। এদিকে ১৪ জুন পর্যন্ত পরিসংখ্যান দেখাচ্ছে, জেলা পরিষদে তৃণমূল ৪১৮, বামফ্রন্ট ৭২৭, বিজেপি ৭৫৯টি মনোনয়ন। পঞ্চায়েত সমিতিতে তৃণমূল ৬,০৫৮টি, বামফ্রন্ট ৫,৫৮৭টি, বিজেপি ৬,৭৮৬ টি মনোনয়ন। গ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূল ৪৩,০১৫টি, বামফ্রন্ট ৩১,৭২৫, বিজেপি ৩৮, ৭৬৩টি মনোনয়ন। সর্বমোট তৃণমূল ৪৯,৪৯১টি, বামফ্রন্ট ৩৮,০৩৯টি ও বিজেপি ৪৬,৩০৮টি মনোনয়ন।
এই একদিনেই শীর্ষে উঠে আসে তৃণমূল। ১৫ জুন মনোনয়ন পর্ব শেষ হয়েছে। তার প্রেক্ষিতে পরিসংখ্যান এখনও কমিশন সূত্রে পাওয়া যায়নি। কিন্তু চার ঘণ্টায় কী আদৌ ৪০ হাজার মনোনয়ন জমা দেওয়া তা নিয়েই প্রশ্ন তোলেন বিজেপি নেতা।
তবে এই প্রসঙ্গে তৃণমূল নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, ‘আসলে বিজেপি দলটাই বিভ্রান্ত। তাদের নেতারা কে কী ,কখন বলেন, সেটাই বোঝা যায় না। আগে বলছিলেন মনোনয়ন জমা দিতে দেওয়া হচ্ছে না, তারপর দিলীপ ঘোষ বলেন, মনোনয়নে তাঁরাই এগিয়ে। এদিকে আবার সুকান্ত মজুমদার প্রশ্ন তুলছেন ৪০ হাজার মনোনয়ন চার ঘণ্টায় কীভাবে?’ পাশাপাশি কটাক্ষের সুরে বলেন, ‘সুকান্ত ৪০ হাজার মনোনয়ন তো বলছেন, তবে কাদের তা তো বলছেন না। রাজ্যে কতগুলি বিডিও অফিসে কতগুলো টেবিলে মনোনয়ন জমা নেওয়া হচ্ছে, তা কী উনি জানেন?’