থমথমে রিষড়ায় আতঙ্ক তাড়া করে বেড়াচ্ছে, বন্ধ দোকানপাট, চলছে রুটমার্চ

রিষড়া: কোথাও পড়ে রয়েছে রেললাইনের পাথর, কোথাও কাচের ভাঙা টুকরো। তার সঙ্গে কাঁদানে গ্যাসের সেলের খোল। রিষড়ার ৪ নম্বর রেলগেট এলাকায় মঙ্গলবার দিনের বেলা অশান্তি নেই, তবে এলাকা থমথমে। স্পষ্ট সোমবার রাতের তাণ্ডবের চিহ্ন।রিষড়া থানার সামনে মৈত্রী পথে সমস্ত দোকানপাট বন্ধ। শুনশান করছে এলাকা। জনবহুল রিষড়ায় ৪ নম্বর গেট চত্বরে লোক বেরিয়েছেন এদিন সকালে খুব কম।
রবিবার রামনবমীর শোভাযাত্রা দিয়ে অশান্তির সূত্রপাত। সেই পরিস্থিতি সামাল দিতে না দিতেই ফের সোমবার রাতে তপ্ত হয়ে ওঠে রিষড়ার পরিস্থিতি। রিষড়া ৪ নম্বর রেল গেট এলাকায় মুড়িমুড়কির মতো বোমাবাজি, পাথর ছোড়া শুরু হয়। পাল্টা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে পুলিশ। কিন্তু হামলাকারীরা সংখ্যায় বেশি থাকায় মুহূর্তে অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় পুলিশের গাড়িতে। পাল্টা পুলিশও ছোড়ে কাঁদানে গ্যাসের সেল।সোমবার রাতে রেললাইন চত্বকে বোমাবাজির মুখে পড়ে একটি লোকাল ট্রেন। দাঁড়িয়ে যায় ট্রেন। যাত্রীদের নামতে বারন করা হয়। অভিযোগ ওঠে, ট্রেন লক্ষ্য করে পাথর ছোড়ার। ভয়ে ট্রেনের দরজা-জানলা বন্ধ করে আতঙ্কে ভেতরে সিঁটিয়ে যান ট্রেনের যাত্রীরা।
এদিকে প্রবল তাণ্ডবে রেলগেট বন্ধ করা সম্ভব না হওয়ায় একের পর এক ট্রেন দাঁড়িয়ে যেতে থাকে। এদিকে পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার নেওয়ায় বিশাল পুলিশ বাহিনীর পাশাপাশি নামানো হয় ব়্যাফ, কমব্যাট ফোর্স। রাতে একসময় ট্রেন চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অফিস ও কাজ থেকে ফেরত যাত্রীরা আটকে পড়েন। থমকে যায় দুটি দূরপাল্লার ট্রেন। চরম ভোগান্তির মুখে পড়েন যাত্রীরা। শেষে রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ ধীরে ধীরে ট্রেন পরিষেবা স্বাভাবিক হয়।
এদিকে, সোমবার রাতের ঘটনার পর মঙ্গলবার থেকে ভয়েই ছিলেন রিষড়াবাসী। আদৌ বের হওয়া ঠিক হবে কিনা তা নিয়ে সংশয়। তবে এদিন সকাল থেকে স্বাভাবিক ভাবেই ট্রেন চলে। তবে তাণ্ডবের ভয় এখনও বাসিন্দাদের চোখেমুখে। পরপর দুদিন এমন অশান্তি হওয়ায়, রিষড়বাসী উদ্বিগ্ন। আবার কখন, কী হয়। এদিকে ৪ নম্বর রেলগেট সংলগ্ন কারখানাগুলিতে শ্রমিকের হাজিরাও এদিন খুব কম। সূত্রের খবর, রাতের অশান্তিস্থল সংলগ্ন জয়শ্রী টেক্সটাইলে বেশিরভাগ কর্মী ছুটি নিয়ে নিয়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক যুবকের কথায়, ‘গতকাল রাতে অফিস থেকে বের হতে গিয়ে যে ছবি দেখেছি, তাতে আজ আর অফিস যাওয়ার সাহস নেই। বাড়ির লোকও ভয় পাচ্ছে।’
এখানকার লোকজনের কথায়, রিষড়ায় কখনও এক বড়মাপের গন্ডগোল হয়নি। শান্তিপূর্ণ এলাকা বিভিন্ন ভাষাভাষির মানুষের বাস। সকলে মিলেমিশে থাকেন। হঠাত্ করে কেন এই শহর তেতে উঠছে তা নিয়ে প্রশ্ন সকলের মনেই। এদিকে, মঙ্গলবার সকাল থেকেই রাস্তায় পুলিশ রয়েছে। চলছে রুটমার্চ। শ্রীরামপুর-সহ রিষড়ার একাধিক জায়গায় ১৪৪ ধারা জারি হয়েছে। বিভিন্ন কমিশনারেট থেকে বাড়তি পুলিশ বাহিনী নিয়ে আসা হয়েছে রিষড়ায়।বন্ধ ইন্টারনেট পরিষেবা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

seven − seven =