কোচের পদত্যাগেও ‘ভাগ্য’ বদলাল না, দুর্বল পেনাল্টি-আত্মঘাতী গোল

জামশেদপুর এফসির হোম ম্যাচ। গ্যালারিতে তাদের সমর্থনই বেশি। এমনটাই স্বাভাবিক। তবে ইস্টবেঙ্গলের গ্যালারিতেও অনেক সমর্থক উপস্থিত ছিলেন। নজর কাড়ে একটি ব্যানার। কার্লেস কুয়াদ্রাতকে নিয়ে বার্তা দেওয়া। সেখানে দেখা গেল গো-ব্যাক, বলা খুব সহজ, কঠিন সময়ে পাশে থাকা জরুরি! ইন্ডিয়ান সুপার লিগের নতুন মরসুমে প্রথম দুটিই অ্যাওয়ে ম্যাচ। জোড়া হারও। ঘরের মাঠে ফিরে স্বস্তিতে ছিল লাল-হলুদ ব্রিগেড। সমর্থকদের সামনে ভালো পারফরম্যান্সের বিশ্বাস। কিন্তু এফসি গোয়ার বোরহার হ্যাটট্রিকে ইস্টবেঙ্গলেরও হারের হ্যাটট্রিক। গ্যালারি থেকে গো-ব্যাক স্লোগান কার্লেস কুয়াদ্রাতকে। এরপরই পদত্যাগ স্প্যানিশ কোচের। হয়তো সে কারণেই এই ব্যানার বেশি চোখ টানে।

গত মরসুমে কার্লেসের কোচিংয়ে দুর্দান্ত পারফর্ম করেছিল ইস্টবেঙ্গল। দীর্ঘ ১২ বছরের ব্যবধানে জাতীয় স্তরের ট্রফি জিতেছিল লাল-হলুদ। টানা আটটি হারের পর অবশেষে ডার্বি জয়ের স্বাদ পেয়েছিল। এ মরসুমের শুরু থেকেই সব এলোমেলো। কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাত পদত্যাগ করলেও দুর্ভাগ্য পিছু ছাড়ল না ইস্টবেঙ্গলের। মাদিহ তালালের সহজ সুযোগ নষ্ট, পেনাল্টি, আত্মঘাতী গোল। পুরো পরিস্থিতিই যেন ইস্টবেঙ্গলের বিপক্ষে। জামশেদপুরের কাছে ০-২, টানা চার ম্যাচে হার ইস্টবেঙ্গলের।

ম্যাচের শুরুতেই দুর্দান্ত গোলের সুযোগ পেয়েছিলেন মাদিহ তালাল। প্র্যাক্টিসে এমন বলে কত গোল করেছেন, ইয়ত্তা নেই। ম্যাচে হল না। রিজার্ভবেঞ্চের প্লেয়াররা অবাক ভঙ্গিতে লাফিয়ে উঠলেন। এত দুর্বল শট কেন! ইস্টবেঙ্গলের প্রথম গোল হজম মিডফিল্ডের দোষে। ডিফেন্সে ধাক্কা খেয়েছিল জামশেদপুর। বক্সের বাইরে বল পান রেই তাচিকাওয়া। সেখান থেকেই দুর্দান্ত শট। কাছাকাছি ৬ ফুটবলার ছিলেন। মিডফিল্ড থেকে কেউই চ্যালেঞ্জে গেলেন না! ইস্টবেঙ্গল গোলকিপার দেবজিৎ মজুমদারের কাছে কোনও সুযোগই ছিল না। ২১ মিনিটেই ১-০ এগিয়ে যায় জামশেদপুর।

বিরতিতে পরিসংখ্যান বলছিল, বল পজেশন সহ সব দিক থেকেই এগিয়ে ইস্টবেঙ্গল। স্কোরলাইনে পিছিয়ে থাকায় সবই বৃথা। অবশেষে ৬৪ মিনিটে পেনাল্টি থেকে সমতা ফেরানোর সুযোগ পায় ইস্টবেঙ্গল। সাউল ক্রেসপোকে একেবারেই আত্মবিশ্বাসী দেখায়নি। খুবই দুর্বল স্পট কিক। জামশেদপুর গোলরক্ষক অ্যালবিনো গোমেজ সহজেই তা বাঁচিয়ে দেন। এমন দুর্বল কিক দেখে সতীর্থ হিজাজি মাহেরও রাগ চেপে রাখতে পারলেন না। সজোরে ঘুসি ডাগআউটের ছাওনিতে। এক মিনিটের ব্যবধানেই ক্লেটন সিলভার অনবদ্য শট। কিন্তু ওই যে দুর্ভাগ্য! পোস্টে লাগে সেই শট।

হতাশার এখানেই শেষ নয়। ৭১ মিনিটে বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে আত্মঘাতী গোল চুননুঙ্গার। কিছুক্ষণের ব্যবধানে অনবদ্য একটি সেন্টারে হেক্টর ইউস্তে দুর্দান্ত হেড করেছিলেন। সেটিও ক্রসবারে লাগে। সময় নষ্টের খেলায় মেতেছিল জামশেদপুর। ২-০ এগিয়ে থাকায় এই পন্থাই নেয় খালিদ জামিলের টিম। ৮৮ মিনিটে বক্সের বাইরে ফ্রি-কিক পায় ইস্টবেঙ্গল। ক্লেটন সিলভার ফ্রি-কিক ক্রসবারের উপর দিয়ে।

ইনজুরি টাইম দেওয়া হয় ৬ মিনিট। তাতেও কোনও লাভ হয়নি। শেষ কামড় দেওয়ার চেষ্টারও শক্তি নেই। ততক্ষণে কাঁধ ঝুঁকে গিয়েছে ইস্টবেঙ্গল শিবিরের। শুরু থেকে শেষ, দুর্ভাগ্য তাড়া করল ইস্টবেঙ্গলকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fifteen − 3 =