নিজস্ব প্রতিবেদন, কাঁকসা: গত শনিবার নির্বাচনের দিন কাঁকসার বাবনাবেড়া গ্রামে দুষ্কৃতীরা বাইক নিয়ে ১৪৪ ও ১৪৫ নম্বর বুথ দখল করতে আসে বলে অভিযোগ ওঠে। এলাকার মানুষ দুষ্কৃতীদের তাড়া করতেই পালিয়ে যায় তারা। বেশ কয়েকটি বাইক ভাঙচুর করার পাশাপাশি দু’টি বাইকে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল গ্রামবাসীদের বিরুদ্ধে।
সেই দু’টি বুথে সোমবার কড়া নজরদারিতে শুরু হয় পুনরায় ভোটগ্রহণ। এদিন সকাল থেকেই সেই ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে মানুষ ভোট দিতে আসে। প্রতিটি বুথে মোতায়েন ছিলেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা। ভোটাররা দাবি করেন, কোনও রকম আতঙ্কের পরিবেশ নেই। একদম শান্তিপূর্ণ ভাবেই তাঁরা ভোট দিয়েছেন। যদিও এদিন সিপিএমের পক্ষ থেকে কোনও বুথেই পোলিং এজেন্টদের দেখা পাওয়া যায়নি।
কাঁকসা পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূলের প্রার্থী দেবদাস বক্সি জানিয়েছেন, গত শনিবার সিপিএম যে কাণ্ড ঘটিয়েছিল, সেজন্য ভয়ে তারা কেউ বুথে এজেন্ট বসায়নি। অপর দিকে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে তাঁর মায়ের ভোট দিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে কাঁকসার শোকনা গ্রামের ১৫১ নম্বর ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে। ঘটনাকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায়।
অভিযোগ ওঠে অশোকা বাউরি নামের এক বৃদ্ধার ভোট পরমেশ্বর বাউরি নামের ব্যাক্তি দিয়ে দেন। পরমেশ্বর বাউরি বিষয়টি স্বীকার করে জানান, তাঁর মা চোখে দেখতে পান না। সুগারের রোগী। সেই কারণে তিনি তাঁর মায়ের ও সঙ্গে নিজের ভোটটিও দিয়েছেন। এই বিষয়ে বুথ কেন্দ্রের ভিতর থাকা প্রিসাইডিং অফিসার কোনও আপত্তি করেননি বলেও দাবি করেছেন। তিনি প্রিসাইডিং অফিসারকে জানিয়েই ভোটটি দিয়েছেন বলে দাবি তাঁর। যদিও বুথে থাকা প্রিসাইডিং অফিসার বিষয়টি অস্বীকার করে জানান, এমন কোন ঘটনা ঘটেনি।
প্রসঙ্গত, গত শনিবার পঞ্চায়েত নির্বাচন চলাকালীন আমলাজোড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের শোকনা গ্রামের ১৫১ নম্বর বুথ দখল করে ব্যালট বক্স জলে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে সিপিএমের বিরুদ্ধে। তৃণমূল কর্মীরা আটকাতে গেলে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। পাশেই বাবনাবেড়া গ্রামে ১৪৪ ও ১৪৫ নম্বর বুথে বহিরাগতরা বুথ দখল করতে আসছে বলে খবর আসে এলাকায়।
সিপিএমের মদতে এলাকার বাসিন্দারা বহিরাগতদের তাড়া করতেই সকলে বাইক ফেলে পালিয়ে যায়। অভিযোগ, বেশ কিছু বাইকে ভাঙচুর চালানোর পর দু’টি বাইকে আগুন ধরিয়ে দেয় ক্ষিপ্ত জনতা। এলাকায় উত্তেজনার সৃষ্টি হলে ভোট না দিয়েই বাড়ি পালান ভোটাররা। অপর দিকে কাঁকসার বনকাটি অঞ্চলের বসুধায় ১৯ ও ২০ নম্বর বুথে তৃণমূল ও বিজেপির সংঘর্ষ বাধে। ভয়েই ভোট না দিয়ে পালিয়ে যান ভোটাররা। সোমবার নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে ওই পাঁচটি বুথে সশস্ত্র কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে শুরু হয় ভোট।