ওড়িশার বালেশ্বরে গত শুক্রবার যে ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটেছে, তার তদন্তের কাজ শেষ হয়েছে বলেই জানালেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। পাশাপাশি এও জানান, এই দুর্ঘটনার মূল কারণও চিহ্নিত করা হয়েছে।। উদ্ধারকাজ এবং ওই রেললাইন দিয়ে ট্রেন চলাচল ফের চালু করার কাজের তদারকি করতে শনিবার থেকেই দুর্ঘটনাস্থলে আছেন রেলমন্ত্রী। এরপর রবিবার তিনি জানান, এই মর্মান্তিক ট্রেন দুর্ঘটনার তদন্ত সম্পূর্ণ হয়েছে এবং রেলওয়ে সুরক্ষা কমিশনার এই বিষয়ে শিগগিরই তাঁর রিপোর্ট জমা দেবেন। একই সঙ্গে দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে শনিবার বালেশ্বরের দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করার সময় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে কবচ সুরক্ষা ব্যবস্থা না থাকার অভিযোগ করেছিলেন, তাও খারিজ করে দেন রেলমন্ত্রী। এই প্রসঙ্গে রেলমন্ত্রী স্পষ্ট জানান, এই দুর্ঘটনার সঙ্গে কবচ সুরক্ষা ব্যবস্থা না থাকার কোনও সম্পর্ক নেই। এখানে বলে রাখা শ্রেয়, ইলেকট্রনিক ইন্টারলকিং রেলওয়ে সিগন্যালিং বা সঙ্কেত ব্যবস্থারই অন্যতম অংশ। কোনও নিয়ন্ত্রিত এলাকার মধ্য দিয়ে নিরাপদভাবে ট্রেন চলাচল নিশ্চিত করে এই মাইক্রোপ্রসেসর-ভিত্তিক ইন্টারলকিং ব্যবস্থা। একটা সময় রেলে আন-ইন্টারলকড সিগন্যালিং সিস্টেম ছিল। যা অতীতে বহু দুর্ঘটনার কারণ হয়েছে। বর্তমানে, রেল সুরক্ষা ব্যবস্থাকে আরও জোরদার করতে আধুনিক ইলেকট্রনিক সিগন্যালিং ব্যবস্থা ব্যবহার করা হয়। ভারতীয় রেলওয়ের রিসার্চ ডিজাইন অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ডস অর্গানাইজেশন বা আরডিএসও জানিয়েছে, ইলেকট্রনিক ইন্টারনকিং সিস্টেমে, সফ্টওয়্যার ভিত্তিক ইন্টারলকিং লজিক প্রয়োগ করা হয়েছে। এর ফলে কোনও ওয়্যারিং পরিবর্তন না করেই, সহজে এই ব্যবস্থায় যে কোনও পরিবর্তন করা যায়। রেল ইয়ার্ড থেকে এই ব্যবস্থায় নির্দেশ পাঠানো হয়। ফেইল-সেফ পদ্ধতিতে সেই নির্দেশ প্রক্রিয়া করে প্রয়োজনীয় আউটপুট তৈরি করে এই ব্যবস্থা।
এরই পাশাপাশি রেলমন্ত্রী এও আশ্বাস দেন, ‘রেলওয়ে সুরক্ষা কমিশনার বিষয়টির তদন্ত করেছেন এবং শিগগিরই তিনি তদন্ত রিপোর্ট জমা দেবেন। তবে, আমরা এই দুর্ঘটনার কারণ এবং এর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করেছি। ইলেকট্রনিক ইন্টারলকিং ব্যবস্থার পরিবর্তনের কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। এই মুহূর্তে রেল যোগাযোগ পুনরুদ্ধারের দিকেই আমাদের যাবতীয় মনোযোগ রয়েছে।’ একইসঙ্গে তাঁর সংযোজন, ইতিমধ্যেই হতাহতদের সকলকে ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। যে লাইনগুলিতে দুর্ঘটনা ঘটেছে, সেগুলি সারাইয়ের কাজ চলছে। বুধবার থেকেই ফের ওই লাইনে ট্রেন চলাচল চালু করা যাবে বলে আশাও প্রকাশ করেন রেলমন্ত্রী। এই প্রসঙ্গে রেলমন্ত্রী এও জানান, ‘বুধবার সকালের মধ্যে লাইন পুনরুদ্ধারের কাজ শেষ করার লক্ষ্য নিয়েছি আমরা, যাতে ওই দিন থেকেই ফের ট্রেন চলাচল চালু করা যায়।’