অজিদের সব বিভাগেই কার্যত ধুয়ে দিয়ে জিতল প্রোটিয়ারা

এক-দুই নয়, পাঁচ বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া। সেই দল লখনউয়ে কার্যত প্রোটিয়াদের কাছে আত্মসমর্পন করল। আইপিএলের পর লখনউয়ের পিচ পুরো বদলে ফেলা হয়েছিল। এই পিচ তাই দুই দলের কাছেই অজানা ছিল। আর লখনউয়ের পিচের মতোই এই অস্ট্রেলিয়াকে অচেনা দেখাল। জোড়া ম্যাচ হেরে অজিরা বেশ চাপে। অন্যদিকে আন্ডারডগ দক্ষিণ আফ্রিকা জোড়া ম্যাচ জিতে নিজেদের দাপট বজায় রাখল। পরপর দুই ম্যাচে সেঞ্চুরি কুইন্টন ডি’ককের। এর আগের ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকার তিন ব্যাটার শতরান করেছিলেন। আজ ডি’কক করলেন। একদিকে টানা সেঞ্চুরি ডি’ককের। অন্যদিকে জোড়া হার অস্ট্রেলিয়ার। এই দুই টিম বিশ্বমঞ্চে যখনই মুখোমুখি হয়, রোমাঞ্চকর ম্যাচ দেখা যায়। এই ম্যাচে অজিদের সব বিভাগেই কার্যত ধুয়ে দিল প্রোটিয়ারা। টস জিতে প্রথমে প্রোটিয়াদের ব্যাট করতে পাঠিয়েছিলেন অজি অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। ভারতের বিরুদ্ধে এর আগের ম্যাচে প্রথমে ব্যাটিং করেছিল অস্ট্রেলিয়া। তাতে হেরেছিলেন কামিন্সরা। এ বার দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে রান তাড়া করার সিদ্ধান্ত নিয়েও ব্যর্থ হল অস্ট্রেলিয়া। শুরুতে ব্যাটিং করে শতরান করেন দক্ষিণ আফ্রিকার উইকেট কিপার ব্যাটার কুইন্টন ডি’কক। অর্ধশতরান মিডল অর্ডারের তারকা এইডেন মার্কব়্যামের। ক্যাপ্টেন তেম্বা বাভুমার ব্যাটে আসে ৩৫ রান। সব মিলিয়ে প্রথমে ব্যাটিং করে ৭ উইকেট হারিয়ে ৩১১ রান তোলে প্রোটিয়ারা। প্যাট কামিন্স-জশ হ্যাজলউডদের কার্যত পিটিয়ে শেষ করেন ডি’কক-মার্কব়্যামরা। লখনউয়ে এই ম্যাচে আরও সকলে অবাক হল অজিদের ফিল্ডিং দেখে। জাম্পা-অ্যাবটদের ফিল্ডিং দেখে মাথায় হাত দেওয়ার জোগাড় হয়েছে অস্ট্রেলিয়ার সমর্থকদের। এক-দুই বার নয় মোট ছ’বার প্রোটিয়াদের ক্যাচ মিস করেছেন অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটাররা। তার মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক তেম্বা বাভুমারই তিন বার ক্যাচ মিস করেন অজি ক্রিকেটাররা। শুরুটা হয়েছিল ১০তম ওভারে। দক্ষিণ আফ্রিকার ক্যাপ্টেন বাভুমা সেই সময় ছিলেন ১৬ রানে। তাঁর ক্যাচ ফস্কান অ্যাডাম জাম্পা। এরপর ১৩তম ওভারে ফের বাভুমার ক্যাচ মিস করে অজিরা। এ বার ক্যাচ হাতছাড়া করেন জশ ইংলিশ। ১৬তম ওভারে ফের বাভুমার ক্যাচ মিস করে অজিরা। ৩০তম ওভারে এইডেন মার্কব়্যামের ক্যাচ মিস করেন কামিন্স। দু’হাত দিয়ে সেই ক্যাচ ধরার চেষ্টা করেন কামিন্স। কিন্তু সফল হননি। মার্কব়্যাম তখন ছিলেন ১ রানে। তিনি শেষ অবধি করেন ৫৬ রান। ৪৯তম ওভারে তো জোড়া ক্যাচ হাতছাড়া করেন স্টার্ক-স্টইনিসরা। এতগুলো ক্যাচ মিস না করলে হয়তো ওয়ার্নার-স্মিথদের সামনে ৩১২ রানের টার্গেট থাকত না। বড় রান তাড়া করতে নেমে মার্নাস লাবুশেন ছাড়া টপ অর্ডারের কেউ লড়াই করতে পারেননি। মিচেল মার্শ (৭), ডেভিড ওয়ার্নার (১৩), স্টিভ স্মিথ (১৯) কারও ব্যাট চলেনি। সপ্তম উইকেটে মিচেল স্টার্ক ও মার্নাস লাবুশেন জুটি দলকে খানিকটা এগিয়ে নিয়ে যান। দলের চাপের পরিস্থিতিতে ৪৬ করেন মার্নাস লাবুশেন। শেষ বেলায় ক্যাপ্টেন কামিন্স কিছুটা দলকে টানার চেষ্টা করেন। তবে ২২ করে ফিরে যান। কাগিসো রাবাডা নেন ৩টি উইকেট। ২টি করে উইকেট গিয়েছে মার্কো জ্যানসেন, কেশব মহারাজ ও তাবরাইজ শামসির ঝুলিতে। ১টি উইকেট পেয়েছেন লুনগি এনগিডিও। রাবাডা-কেশবদের দাপটে ৪০.৫ ওভারে ১৭৭ রানে অলআউট হয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। ১৩৪ রানের বিরাট ব্যবধানে জিতল প্রোটিয়ারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five + eighteen =