গোপাল দলপতির নামে নাকি ৬৫টি দলিল নথিভুক্ত রয়েছে, এমনটাই জানা যাচ্ছে ইডি-র তরফ থেকে। আর এই নথির খবর প্রকাশ্যে আসতেই নতুন করে শোরগোল শুরু হয়েছে নানা মহলে। প্রশ্ন ওঠে, কোথা থেকে এল গোপালের এই পাহাড়প্রমাণ সম্পত্তি তা নিয়েও।
পানের দোকান থেকে গৃহশিক্ষক। তারপর চিটফান্ড মামলায় গ্রেফতার। এবার নিয়োগ দুর্নীতিতেও উঠে এসেছে তাঁর নাম। সেই কারণ, গোপাল দলপতির নামে যে ৬৫টি দলিল নথিভুক্ত রয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে কোথাও ঠিকানা দেওয়া রয়েছে দমদম মন্দির রোড, কোথাও আবার সরকারি রেজিস্ট্রি দপ্তরের নথিতে তিনি পূর্ব মেদিনীপুরের বাসিন্দা। জমির কারবারে কখনও গোপাল দলপতি পরিচয়ে রেজিস্ট্রি করেছেন, কখনও আবার গোপাল আর দলপতির মাঝে চন্দ্র জুড়ে সরকারি নথিতে হয়ে উঠেছেন গোপাল চন্দ্র দলপতি। কোথাও আবার আরমান গঙ্গোপাধ্যায় নামে নথিভুক্ত। বাবার নামও রামকৃষ্ণ দলপতি থেকে করা হয়েছে রামপদ দলপতি। দশ বছরে পূর্ব মেদিনীপুর, হাওড়া, হুগলির নানা জায়গায় ৬৫টি জমি বিক্রির নথিতে গোপাল দলপতির নাম বিক্রেতা হিসাবে নথিভুক্ত হয়েছে। ইডি সূত্রে খবর, এই সব জমির মূল্য কোটি কোটি টাকা।
এই নথি থেকে ঘেঁটে যে তথ্য সামনে এসেছে তা হল, ২০১১ সালে কিসমত বাজকূল মৌজায় একটি জমি বিক্রি হয়। ডিড নম্বর ০৫৮২২। ২০১২ সালে মোট জমি বিক্রি ১৯টি। ২০১৩ সালে জনাই, দেউলবাড় মৌজায় বিক্রি হয় ১৫টি জমি। ২০১৪ সালে চামরাইল মৌজায় বিক্রি হয় ২টি জমি। ২০১৬ সালে দেবীপাড়া মৌজায় জমি বিক্রি হয় এমন-ই ৫টি জমি। ডিড নম্বর ০৩৬৬৩। ২০১৭ সালে দেবীপাড়া, জনাই মৌজায় মোট জমি বিক্রির সংখ্যা ১২টি। ১৮ সালে দেবী পাড়ায় মোট জমি বিক্রি ৯টি। ২০১৯ সালেই একই জায়গায় বিক্রি হয়েছে ৫টি জমি। ২০২০ সালে জগাছা মৌজায় ৮৭ লক্ষ টাকার জমি মাকে দান করেন তিনি। ডিড নম্বর ০২৬১০। এখন প্রশ্ন হল এই সকল জমির মালিকানা হিসাবে কীভাবে তাঁর নাম এল তা নিয়েই। প্রশ্ন উঠেছে, তিনি কী এ ক্ষেত্রেও মিডলম্যানের কাজ করেছেন নাকি তিনি-ই মালিক। এ প্রসঙ্গে গোপাল দলপতি অবশ্য জানান, ‘কারও সম্পত্তি থাকা কী অন্যায়? আমার ৬৫টির বেশি ডিড থাকতে পারে। ১ কোটি কেন ২৫ লক্ষ কোটি টাকা থাকতে পারে। কিন্তু, দেখতে হবে কোন পথে সেই টাকা এসেছে। আমার এই টাকা সৎ পথে এসেছে কিনা তদন্ত করলেই দেখা যাবে।’