সন্দেশখালির পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্যের পুলিশ ও প্রশাসন নির্বাচন কমিশনের কড়া প্রশ্নের মুখে পুড়েছে। লোকসভা ভোটের আগে প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমারের নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চ কলকাতায় এসেছে। সোমবার সকাল থেকে ওই বেঞ্চ সব জেলার পুলিশ সুপার, জেলা শাসক এবং কমিশনারেটগুলির কমিশনারদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন।
সূত্রের খবর, বৈঠকের দ্বিতীয়ার্ধ্বে সন্দেশখালির পরিস্থিতি জানতে চান মুখ্য নির্বাচন কমিশনার। কেন এই পরিস্থিতি হল তা নিয়ে বসিরহাট পুলিশ জেলার সুপার মেহেদি হাসানকে প্রশ্ন করেন। পুলিশ সুপার বলেন, তিনি ওই জেলায় নতুন দায়িত্বে এসেছেন। এখন সন্দেশখালির পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে আগে কী হয়েছে তার পুরোটা তাঁর পক্ষে বলা সম্ভব নয়। জানা গিয়েছে, এর পর অন্য প্রসঙ্গে চলে যান কমিশনের কর্তারা। কিন্তু হঠাৎ মুখ্য নির্বাচন কমিশনার বলেন, বসিরহাট পুলিশ জেলার দায়িত্বে যিনি ছিলেন, সেই পুলিশ সুপার কি এই বৈঠকে রয়েছেন? রাজীব কুমার এই প্রশ্ন করার কিছুক্ষণ পর উঠে দাঁড়ান পুলিশ কর্তা জবি টমাস। তিনি বলেন, আমি বসিরহাটের দায়িত্বে ছিলাম।
এতেই রেগে যান মুখ্য নির্বাচন কমিশনার। তিনি বলেন, আপনি তাহলে এতক্ষণ চুপ করে বসেছিলেন কেন? আপনার তো নিজে থেকেই বলা উচিত ছিল? কমিশনারের কর্তারা তাঁকে প্রশ্ন করেন, শেখ শাহজাহানের ব্যাপারে যা যা জানেন বলুন। জবাবে জবি টমাস জানান, শাহজাহান শাসক দলের নেতা ছিলেন। কিন্তু শাহজাহানের বিরুদ্ধে ভূরি ভূরি অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও কেন তাকে গ্রেপ্তার করা হয়নি, সেই প্রশ্ন তোলে কমিশন। সেই সঙ্গে সব পুলিশ কর্তা ও জেলা শাসকদের উদ্দেশে জানিয়ে দেয়, জেলায় জেলায় সন্দেশখালির শেখ শাহজাহানের মতো কেউ থাকলে, অর্থাৎ কারও বিরুদ্ধে খুন, শ্লীলতাহানি, জমি দখল ইত্যাদি গুরুতর অপরাধের অভিযোগ বা মামলা থাকলে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করতে হবে। এদিনের বৈঠকে গোড়া থেকে কমিশনের কর্তারা বলেন, এমন নয় তাঁরা কিছু জানেন না। রাজ্যের কোথায় কী পরিস্থিতি তা নিয়ে বিশদে খোঁজ খবর নিয়ে তবেই এসেছেন তাঁরা। তাই কোথাও কোনও সমস্যা থাকলে যেন কেউ গোপন না করেন। কিন্তু দেখা যায়, বৈঠকে দফায় দফায় পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তাদের কমিশনের কাছে তথ্য চেপে যাওয়ার অভিযোগে ধমক খেতে হয়।