কলকাতা: কিশোরী হলেও, ছক ছিল নিখুঁত।
তাকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করেছে মা ও মায়ের প্রেমিক। জানাজানি হলেই হবে তদন্ত। মেয়ের দিকে সকলের ‘সিমপ্যাথি’ থাকবে। আর লক্ষ্যপূরণ হবে কিশোরীর। বিচ্ছেদ হবে মায়ের সঙ্গে মায়ের ‘প্রেমিক’-এর।
তবে নিখুঁত পদক্ষেপেও শেষরক্ষা হল না। পুলিশি তদন্তে ধরা পড়ল কিশোরী মেয়ের ঠান্ডা মাথার ‘ষড়যন্ত্র’। কয়েক ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদে বদলে গেল কাহিনি। হরিদেবপুরে অগ্নিকাণ্ডের তদন্তে নেমে চাঞ্চল্যকর তথ্য পেল পুলিশ। তদন্তে উঠে এসেছে, কিশোরী মায়ের মোবাইল ফোন ক্লোন করে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছিল পুলিশকে।
প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীদের একাংশ মনে করছেন, শৈশবের মানসিক টানাপড়েনের কারণেই এমনটা করেছে সে। পুলিশ জানিয়েছে, কিশোরীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সূত্রের খবর, তদন্তে উঠে এসেছে ওই কিশোরীর মা ও বাবার বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা চলছে। সেই সময় বারাসতের পুলিশ কর্মীর সঙ্গে মায়ের সম্পর্ক গড়ে ওঠে বলে সূত্রের খবর। কিন্তু সেই সম্পর্ক একেবারেই পছন্দ ছিল না কিশোরীর। তাই মা ও তাঁর প্রেমিকের সম্পর্ক ভাঙতে ষড়যন্ত্র শুরু করে সে। আর সেই কুকীর্তি করতে প্রযুক্তির সাহায্য নেয় সে। ইউটিউব দেখে ফোন ‘ক্লোন’ করা শিখেছিল ওই নাবালিকা। তার পর মায়ের ফোন ‘ক্লোন’ করে মায়ের ‘প্রেমিকের’ কথোপকথনের ভুয়ো ‘স্ক্রিনশট’ও তৈরি করে। তার পর সেগুলি ‘প্রমাণ’ হিসাবে পুলিশকে দেখায়। স্ক্রিনশটে মেয়েকে হত্যার ‘ষড়যন্ত্র’ -এর কথা ছিল। বস্তুত, সেগুলি দেখেই সোমবার বিকেল ৪টে নাগাদ ওই নাবালিকার মাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশের কাছে ১৬ বছরের মেয়েটি লিখিত অভিযোগ করেছিল, তাকে খুনের চেষ্টা করেন মা। মায়ের ‘পরকীয়া’ সম্পর্কে বাধা দেওয়ায় প্রেমিকের সঙ্গে পরামর্শ করে তাকে মারার চেষ্টা করে। আগুনে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করে। আগুন লাগার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিল দমকল। আগুন নেভায় তারা। পরে থানায় মায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে কিশোরী। মোবাইলে তারই তৈরি করে ভুয়ো কথোপকথন প্রমাণ হিসেবে তুলে ধরে।