নতুন কালচক্রের সূচনা হল আজ : প্রধানমন্ত্রী

প্রতীক্ষা শেষে রামমন্দিরে হল রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠা। নিষ্ঠাভরে গর্ভগৃহে বসে পুজো করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। প্রধান যজমান হিসেবে করলেন সংকল্পও। এই মন্দির প্রতিষ্ঠার আগে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের তীর্থক্ষেত্রে যেতে দেখা গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীকে। শুধু তাই নয়, অযোধ্য়ার এই মন্দির প্রতিষ্ঠার আগে কীভাবে তপস্যা করেছেন মোদি, সে কথা এদিন উল্লেখ করেন গোবিন্দ গিরি মহারাজ। রাম মন্দির ট্রাস্টের তরফে তিনি এদিন জানিয়েছেন, ২০ দিন আগেই সব নিয়মাবলী জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল প্রধানমন্ত্রীকে। রাম মন্দিরের জন্য মোদি কার্যত তপস্যা করেছেন বলে দাবি করেছেন গোবিন্দ গিরি মহারাজ। উল্লেখ্য, এদিন রামলালার প্রাণপ্রতিষ্ঠার পর নিজের ১১ দিনের উপবাস ভাঙেন প্রধানমন্ত্রী।

 দেশবাসী তথা অযোধ্যাবাসীদের জন্য বলতে উঠেই প্রথমে বলেন, অনেক কথা বলার আছে, কিন্তু কণ্ঠ অবরুদ্ধ। তিনি বলেন, ‘কয়েক শতাব্দী পর আমাদের প্রভু রাম ফিরে এলেন। আমার অনেক কিছু বলতে ইচ্ছে করছে। কিন্তু আবেগে কন্ঠ অবরুদ্ধ হয়ে যাচ্ছে। এটা পবিত্রতম সময়। প্রভু রাম আমাদের আশীর্বাদ করছেন। আজকের সূর্য এক অদ্ভুত আভা নিয়ে এসেছে। ২২ জানুয়ারি ২০২৪ কোনও তারিখ নয়, এটা নয়া কালচক্রের সূচনা। হাজার বছর পরও মানুষ এই দিনের কথা বলবে।’ বলেন, ‘এখন থেকে রাম আর তাঁবুতে নয়, এ বার মন্দিরে থাকবেন।’ দীর্ঘ কয়েক যুগ অপেক্ষার পর আজ রামমন্দির প্রতিষ্ঠা নিয়ে বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের ত্যাগ-তপস্যায় নিশ্চই কিছু খাদ ছিল। তাই আমরা এতদিন এই কাজ সম্পূর্ণ করতে পারিনি। আজ সেই খাদ পূর্ণ করতে পেরেছি আমরা। এই দেরির জন্য প্রভু রাম নিশ্চই আমাদের ক্ষমা করবেন। ভারতের সংবিধানে প্রভু রাম বিরাজমান। সেই সংবিধান প্রবর্তনের পরও, কয়েক দশক ধরে প্রভু রামের অস্তিত্ব নিয়ে আইনি লড়াই চলেছে। ভারতের বিচার ব্যবস্থা, আইনের লজ্জা রক্ষা করেছে। যখন প্রভু রাম সমুদ্রে সেতুবন্ধন করেছিলেন, সেই সময় কালচক্র বদলেছিল। আমি কাল সেখানে পুষ্পাঞ্জলি দিয়েছি। সেই সময় আমি উপলব্ধি করেছি, এবার আরও একবার কালচক্র বদলাবে। সুসময়ের দিকে এগিয়ে যাবে ভারত। জীবন প্রবাহের মতো নিরন্তর বয়ে চলে রামরস। রামকথা অসীম। কিন্তু, রামের শিক্ষা সব জায়গায় এক।’  তিনি আরও বলেন, ‘এটা শুধু আমাদের বিজয় নয়, বিনয়েরও সময়। আমাদের ভবিষ্যৎ, আমাদের অতীতের থেকে সুন্দর হতে চলেছে।’

কথা বলতে বলতে আবেগে একাত্ম হয়ে মোদি আরও বলেন, ‘এক সময় কিছু লোক বলত, রাম মন্দির তৈরি হলে দেশে আগুন লেগে যাবে। এরা ভারতের সামাজিক ভাবের পবিত্রতাকে জানত পারেননি। রামলালার এই মন্দির নির্মাণ, ভারতীয় সমাজের শান্তি, ধৈর্য, সদ্ভাবের প্রতীক। এই নির্মাণ কোনও আগুন নয়, আশার জন্ম দিচ্ছে। আমি আজ ওই লোকদের বলব, নিজেদের ভাবনা ফের বিবেচনা করে দেখুন। উপলব্ধি করুন, রাম বিবাদ নয়, রাম সমাধান। রাম আগুন নয়, রাম আশা। রাম শুধু বর্তমান নয়, রাম চিরন্তন। এটা রাম রূপে জাতীয় চেতনার মন্দির। রাম ভারতের বিশ্বাস, রাম ভারতের ভিত্তি। রাম ভারতের ধারণা, রাম ভারতের আইন। রাম ভারতের গৌরব, রাম নেতা এবং রাম নীতি। রাম চিরন্তন। রামকে যখন সম্মান দেওয়া হয়, তার প্রভাব বছরের পর বছর বা শতাব্দী ধরে থাকে না, বরং এর প্রভাব হাজার হাজার বছর ধরে থাকে। ‘

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

four × 2 =