সুজিত ভট্টাচার্য
সন্তানকে স্বীকৃতি দিতে অস্বীকার করেছে প্রেমিক। তাই, সমাজে নিজের ও পরিবারের সম্মান বাঁচাতে কিছু অর্থের বিনিময়ে নিজের সন্তানকে অন্যের কাছে বিক্রি করার চেষ্টার অভিযোগ উঠল এক মহিলার বিরুদ্ধে। শিশু কিনতে এসে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হল এক গৃহবধূ। ঘটনাটি ঘটেছে, কালনা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগে। জানা গিয়েছে, স্বামীর অত্যাচারে তিন সন্তানকে নিয়ে কয়েকবছর আগে উত্তরপ্রদেশ থেকে মগড়া হাটতলা-তে বাপের বাড়ি ফিরে আসে মৌমিতা। বাপের বাড়ি ফিরে আসার পর রাজু রায় নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে উঠে মৌমিতা পুজার। আর সেই সম্পর্কের জেরেই ফের সন্তানসম্ভবা হয়ে পড়েন মৌমিতা। প্রেমিক রাজু সন্তান নিতে অস্বীকার করে। পেটের সন্তানকে নষ্ট করে দেওয়ার কথা জানিয়েছিল রাজু মৌমিতাকে। কিন্তু তিন সন্তানের মা এই প্রস্তাবে রাজি হননি। সন্তানকে তিনি জন্ম দেবেন, প্রয়োজনে সন্তানকে অন্য কাউকে দিয়ে দেবেন তিনি। কিন্তু, নষ্ট করতে পারবেন না গর্ভে থাকা সন্তানকে, তা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন প্রেমিক রাজু-কে। আর তাই নিজের নাম গোপন করে অন্য মহিলার নামে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে যান প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে। কয়েকঘণ্টার মধ্যেই জন্মও দেন এক পুত্র সন্তানের। কিন্তু বিপত্তি বাঁধে এরপরই। সদ্যোজাতকে মায়ের কাছে দেওয়ার আগেই মায়ের নাম ঠিকানায় গন্ডগোল থাকায় সমস্ত ঘটনা সামনে চলে আসে। দেখা যায়, প্রসবের জন্য যিনি ভর্তি হয়েছেন, তার নামের সঙ্গে হাসপাতালের খাতায় যার নাম রয়েছে তা মিলছে না। এরপরই সিস্টার, নার্সরা মৌমিতা পুজার-কে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই বেরিয়ে আসে আসল সত্য। মৌমিতা অবশ্য স্বীকার করেছেন, তার তিনটি সন্তান থাকার কারণেই আর সন্তান নিতে চাননি। তাই নষ্ট না করে সুমিতা যাদব নামের নিঃসন্তান মহিলাকে সন্তান দিয়ে দেওয়ার কথা ভেবেছিলেন। পড়ে যাতে খাতায় কলমে সমস্যা না হয়, সেই জন্য সুমিতা যাদবের নামেই তিনি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ মৌমিতা পুজারকে আটক করে ঘটনার তদন্ত শুরু করে। হাসপাতালের সহকারি সুপার গৌতম বিশ্বাস বলেন, ‘এক প্রসূতির সন্তান জন্ম হওয়ার পরে দেখা গিয়েছে ওই প্রসূতি অন্যের নামে ভর্তি রয়েছে। এবিষয়ে পুলিশকে জানানো হয়। পুলিশ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে’।