কলকাতা: ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের টাকা পাচ্ছে না রাজ্য। তার ওপর, ‘প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা’ প্রকল্পে বাংলার পারফরম্যান্স সবচেয়ে ভাল হওয়ার পরও নতুন করে কোনও বরাদ্দ হয়নি। ক্ষোভ জানিয়ে গত বুধবার প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তার ঠিক দু’দিন পর মমতা ব¨্যােপাধ্যায়ের কথা যেন না শোনা হয়, এমনটাই জানিয়ে নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি দিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা তথা বিজেপি বিধায়ক শুভে¨ু অধিকারী।
রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে নালিশ জানালেন তিনি। অনুরোধ করলেন, রাজ্য সরকার যাতে সবরকম স্বচ্ছতা বজায় রাখে ও যাবতীয় প্রটোকল মেনে চলে, তা নিশ্চিত করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর দফতরের আধিকারিকদের দেখতে বলা হোক। কী প্রসঙ্গে অভিযোগ? প্রধানমন্ত্রীকে পাঠানো চিঠিতে মূলত দু’টি ইস্যুকে তুলে ধরেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। প্রথমটি হল ১০০ দিনের কাজ। দ্বিতীয়টি প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা। উল্লেখ্য, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেছিলেন কেন্দ্রীয় সরকার ১০০ দিনের কাজ ও প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার টাকা দিচ্ছে না। সেই টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়, তার জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের দাবি করে চিঠি দিয়েছিলেন মমতা ব¨্যােপাধ্যায়। এবার সেই নিয়েই প্রধানমন্ত্রীকে পাঠানো তিন পাতার চিঠিতে অন্য চিত্র তুলে ধরেন শুভেন্দু অধিকারী। প্রধানমন্ত্রীকে পাঠানো চিঠিতে শুভেন্দু অধিকারী লিখেছেন, মুখ্যমন্ত্রী স্বীকার করেছেন প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার আওতায় ৩২ লাখ পাকা বাড়ি তৈরি হয়েছে। অথচ, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার আওতায় এত বিশাল অঙ্কের ফান্ড দেওয়ার পরেও কেন্দ্রীয় সরকারের জন্য একটিও প্রশংসাসূচক শধ ব্যয় করতে দেখা যায়নি। তার ওপর রাজ্য সরকার প্রকল্পের নাম বদলে বাংলা আবাস যোজনা করে দিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর মুখ দিয়ে প্রকল্পের প্রচার চালানো হচ্ছে। চিঠিতে শুভেন্দু নালিশ করেছেন, এই কাজ শুধু যে নীতি বিরুদ্ধ তাই নয়, যে কৃতিত্বের দাবিদার রাজ্য নয়, তার দাবি করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে শুভেন্দুর বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রী যে দাবি জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর কাছে, তা যেন না মানা হয়। সেই সঙ্গে বাংলা আবাস যোজনার নাম বদলে যাতে পুনরায় প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা করার ব্যবস্থা করা হয়।
পাশাপাশি ১০০ দিনের কাজ নিয়েও রাজ্য সরকারের ভূমিকা নিয়ে এক রাশ ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীকে পাঠানো চিঠিতে শুভেন্দু অভিযোগ করেছেন, ১০০ দিনের কাজ আসলে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের ছোট ও মাঝারি স্তরের নেতা-কর্মীদের অবৈধ আয়ের উৎস হয়ে গিয়েছে। ১০০ দিনের কাজের টাকা বেরিয়ে যায়, অথচ বাস্তবে কোনও কাজ হয় না। শ্রমিকদের পরিবর্তে যন্ত্র ব্যবহার করা হয়, যাতে কম সময়ে কম খরচে কাজ শেষ করা যয়া। যাঁদের জন্য এই প্রকল্প, যাঁরা প্রকৃত জব কার্ড হোল্ডার, তাঁদের কোনও সুবিধা হয় না বলে অভিযোগ শুভেন্দুর।