রাজ্য পুলিশ এখনও ঢাল-তলোয়ারহীন নিধিরাম সর্দার এটাই প্রমাণিত কালিয়াগঞ্জ আর মালদার ঘটনায়

সম্প্রতি পরপর দুটি ঘটনা ঘটে গেছে পশ্চিমবঙ্গে। আর এই দুটি ঘটনায় সামনে এসেছে রাজ্য পুলিশের দুই রকম মুখ। যার মধ্যে কালিয়াগঞ্জের ঘটনায় মুখ পুড়েছে রাজ্য পুলিশের। জনতার রোষ সামলাতে না পেরে পুলিশ কর্মীদের বেধড়ক মার খাওযা থেকে তাঁদের প্রাণরক্ষার ভয়ে লুকিয়ে পড়ার মতো ঘটনাও সামনে এসেছে এই কালিয়াগঞ্জের ঘটনায়। আর তার ঠিক উল্টো আর এখটা ছবি ধরা পড়েছে মালদায়।যেখানে হঠাৎ-ই এক ব্যক্তি অপহরণ করার চেষ্টা করেন একটি স্তুলের ছাত্রছাত্রীদের। আর এই অপহরণকারীদের হাত থেকে রক্ষা করেন এক ডিএসপি। এমনকী খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও দেখা গেছে মালদার ঘটনায় পুলিশের প্রশংসা করতে আবার পাশাপাশি কালিয়াগঞ্জের ঘটনায় নিজের ক্ষোভ উগরেও দিতে দেখা যআয় মমতাকে।
ফলে স্বাভাবিক ভাবেই একন সংবাদ শিরোনামে একদিকে যেমন কালিয়াগঞ্জ, ঠিক তেমনই অন্যদিকে মালদা।এই প্রসঙ্গে রাজ্য পুলিশের এক কর্তার মত, ‘পণবন্দির মতো পরিস্থিতি সামলাতে কলকাতা পুলিশে কমান্ডো সহ স্পেশাল ফোর্স রয়েছে। যদিও তা জঙ্গি হামলার মতো ঘটনার ক্ষেত্রে মোতায়েন করা হতে পারে। বুধবার মালদার মতো ঘটনা কলকাতা পুলিশই সামলাতে যথেষ্ট পারদর্শী।’ তবে এটাও জানাতে তিনি ভোলেনি যে, জেলার ক্ষেত্রে যদিও এরকম আলাদা কোনও ফোর্স নেই। তবে যেটা রয়েছে তা হল হিংসা-হানাহানি বা উন্মত্ত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে রয়েছে হেভি রেডিও ফ্লাইং স্কোয়াড বা এইচআরএফএস। এখানে থাকা পুলিশ কর্মীরা অত্যাধুনিক নানা ট্রেনিংপ্রাপ্ত। পাশাপাশি জেলার পুলিশ কর্তাদের গাড়িতেও কিন্তু যে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সবরকম ব্যবস্থা থাকে। এই নানা অস্ত্রের মধ্যে রাখা হয় একাধিক ‘নন লিথাল ওয়েপেন’। অর্থাৎ এগুলির ব্যবহার করলে কোনও ভাবেই প্রাণ যাওয়ার সম্ভাবনা নেই বিক্ষোভকারীদের। এরমধ্যে পড়ে, রাবার বুলেট, স্টান্ট গ্র্যানেড, প্লাস্টিক প্যালেট, দু ধরনের টিয়ার সেল, চিলি পাউডার গান, ডাই মার্কার গ্রেনেড থাকে। পাশাপাশি রাজ্য পুলিশের তরফ থেকে এও জানানো হয় যে, রাবার বুলেট প্রাণঘাতী না হলেও যথেষ্ট কার্যকরী, স্টান্ট গ্র্যানেডও জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে যথেষ্ট কার্যকরী। কারও কারও গাড়িতে ডাই মার্কার গ্র্যানেড থাকে, যা ফেটে রঙ ছড়িয়ে পড়ে। সেই রঙ টানা কয়েক সপ্তাহ থেকে যায়। ফলে অভিযুক্তদের পরে সহজে চিহ্নিত করা যায়। এছাড়াও অধিকাংশ পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের গাড়িতে বুলেট প্রুফ জ্যাকেটও থাকে। অর্থাৎ, এর থেকে স্পষ্ট যে শুধু একজন ডিএসপি, এসডিপিও বা অ্যাডিশানাল এসপির গাড়িতে যা থাকে তাতে ১০০ জন মারমুখী জনতাকে ঠেকানো সম্ভব।
তবে যাঁরা পুলিশ আধিকারিক বা তাঁর সঙ্গে থাকা নিরাপত্তারক্ষীদের কাছে থাকে লিথাল ওয়েপন অর্থাৎ নানা আগ্নেয়াস্ত্র। যার মধ্য়ে সবথেকে বেশি চল শর্ট গানের। আর জঙ্গলমহল এলাকার ক্ষেত্রে শর্ট গান দিয়ে প্রতিপক্ষের সঙ্গে এঁটে উঠতে পারা সম্ভব নয় দেখেই পুলিশের নিরাপত্তারক্ষীদের কাছে থাকে এসএলআর বা স্বয়ংক্রিয় রাইফেলও থাকে।
তবে পরিস্থিতির উপর সবকিছু নির্ভর করে। ১০০ জন মারমুখী জনতাকে ঠেকানো যেমন সম্ভব কিন্তু সেখানে যদি তুমুল অশান্তি হয়, তারা যদি আগুন-পাথর নিয়ে হামলা চালায়, দু থেকে তিনজন গাড়িতে থাকা সব নিয়েও কী ভাবে আর কতক্ষণ তা সামাল দেবে তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়। সেক্ষেত্রে পুলিশের সবথেকে বড় অস্ত্র হল ঠান্ডা মাথায় পরিস্থিতি সামাল দেওয়া।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

one + 19 =