নীরজের গ্রামে চলছে জ্যাভলিনের জয়োৎসব

নীরজ চোপড়ার বর্শায় সোনা বিঁধলেই উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠে দেশবাসী। সোনার ছেলের জয়ের বিশেষ উদযাপন চলে তাঁর গ্রাম পানিপথে। বিশ্ব মিটে সোনা জিতে ইতিহাস গড়ার পরও নীরজের গ্রাম মেতে উঠেছে উৎসবে। টোকিও অলিম্পিকে নীরজ সোনা জেতার পর থেকে পানিপথের অলিতে গলিতে জ্যাভলিন নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছিল। আজ তা ডাল-পালা মেলেছে। পানিপথের কাছে খান্দ্রা গ্রামে এক সময় অনুশীলন করতেন নীরজ চোপড়া। বর্তমানে সেখানে একাধিক বাচ্চা জ্যাভলিন থ্রো-য়ের অনুশীলন করে। আরও ভালো করে বললে, পানিপথের প্রতিটা বাচ্চা এখন নীরজ চোপড়াকে দেখে জ্যাভলিনের প্রতি ঝুঁকছে। সেখানে বাচ্চাদের জ্যাভলিন ট্রেনিং দেন হরিন্দর কুমার নামের এক প্রাক্তন ডেক্যাথলেট। তিনি নীরজের সঙ্গে এক সময় অনুশীলনও করতেন। সম্প্রতি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি পানিপথের বাচ্চাদের জ্যাভলিনে ঝোঁকার কথা নিয়ে জানিয়েছেন। আর নেপথ্যে যে রয়েছেন নীরজ চোপড়া, তা ফলাও করে জানিয়েছেন। ২০১২-২০১৫ সালে পঞ্চকুলাতে নীরজের সঙ্গে অনুশীলন করতেন প্রাক্তন ডেক্যাথলেট হরিন্দর কুমার। তিনি পরবর্তীতে ২০১৯-২০২০ সালের মধ্যে সংস্কৃতি পাবলিক স্কুলে বাচ্চাদের জন্য স্কুলের পর ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ডের কোচিং দেওয়া শুরু করেছিলেন। শুরুর দিকে তিনি হাতে গোনা কয়েকজনকে ট্রেনিং দিতেন। বর্তমানে সেখানে প্রায় ৪৫ জনের কাছাকাছি বাচ্চা অনুশীলন করে। নীরজের জন্য হরিয়ানার তরুণ ক্রীড়াবিদদের মধ্যে ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ডের জনপ্রিয়তা বেড়েছে। জ্যাভলিনের জনপ্রিয়তা বেড়েছে। কয়েক বছর আগে নীরজ পানিপথের খান্দ্রাতে ট্র্যাক অ্যান্ড অনুশীলন করা বাচ্চাদের সাহায্য করার কথা জানান। হরিন্দর কুমার জানান, নীরজ প্রায়শই বিদেশ থেকে ফিরলে বিভিন্ন যন্ত্রপাতি নিয়ে আসেন। বাচ্চাদের জন্য জ্যাভলিনও আনেন। তবে হরিন্দরের কথায় আর্থিক সহায়তার থেকে সেখানে অনুশীলন করা বাচ্চাদের বেশি প্রেরণা দেন নীরজ নিজে। হরিন্দর বলেন, ‘নীরজ যখনই গ্রামে আসে ও খান্দ্রাতে আসে। এখান কার বাচ্চাদের সঙ্গে অনুশীলনও করে। তারপর বাচ্চাদের সঙ্গে কথা বলে, পরামর্শও দেয়। নীরজের মতো তারকার সঙ্গে বাচ্চাদের এই কথোপকথন তাদের জন্য বাড়তি পাওনা।’ হরিন্দর জানান, ২০২১ সালের পর থেকে খান্দ্রাতে থাকা পরিবারে বাচ্চাদের জ্যাভলিনের প্রতি আগ্রহ বেড়েছে। শুধু তাই নয়, অলিম্পিকে নীরজের সোনা জয় সেখানকার বাচ্চাদের মা-বাবার মনোভাবও বদলেছে। তাঁরাও ছেলে-মেয়েদের জ্যাভলিনের প্রতি উৎসাহিত করছেন। তবে শুধু পানিপথেই নয়, দেশজুড়ে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে জ্যাভলিনকে নিয়ে আগ্রহ বাড়ছে। মাত্র ২৫ বছর বয়সে নীরজ যে সাফল্য পেয়েছেন, তাতে তিনি বিশ্বজুড়ে বন্দিত হচ্ছেন। সময় যত এগোবে নীরজের পদকের ভাণ্ডার উপচে পড়বে। আর তাঁর গ্রাম থেকেও হয়তো উঠে আসবে ভবিষ্যতের নীরজ চোপড়া!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five + 13 =