ভারতীয় ক্রিকেট দলে বড়সড় পরিবর্তন ঘটল দ্বিতীয় টেস্ট শুরুর আগেই। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে গুয়াহাটিতে শুরু হতে চলা ম্যাচের মাত্র এক দিন আগে অধিনায়ক শুভমন গিলকে দল থেকে ছেড়ে দেওয়া হল। ঘাড়ের চোট পুরোপুরি সারেনি বলেই এমন কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন গৌতম গম্ভীর-সহ ভারতীয় দলের থিঙ্ক ট্যাঙ্ক।
যদিও গিলকে প্রথমে দলে রেখেই গুয়াহাটিতে আনা হয়েছিল এবং বিসিসিআই শুভমনকে নিয়ে ধোঁয়াশাও তৈরি করেছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া ছাড়া অন্য কোনও পথ খোলা ছিল না। শুভমন গিল ইডেনে দ্বিতীয় দিনের খেলার শেষে শারীরিক অস্বস্তি অনুভব করেছিলেন। এরপর তাঁকে কলকাতার হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং পরের দিনই ছাড়া পেলেও চোট পুরোপুরি সারেনি। দল যখন কলকাতা থেকে গুয়াহাটি রওনা হয়, শুভমনও দলের সঙ্গে যাত্রা করেন। কিন্তু সেই যাত্রা শুধু আনুষ্ঠানিক দায়িত্ব পালন করা ছাড়া কিছুই ছিল না। গুয়াহাটিতে পৌঁছেও তিনি একদিনও অনুশীলন করতে পারেননি।
এমনকি দলের সঙ্গে অনুশীলন মাঠে যাওয়া তো দূরের কথা, হোটেল থেকে বিমানবন্দরের বাসেও ওঠেননি তিনি। আলাদা গাড়িতে দলের ফিজিয়োর সঙ্গে বিমানবন্দরে পৌঁছতে দেখা যায় তাঁকে। তখনই পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল তাঁর আঘাতের পরিস্থিতি আশানুরূপ নয়।দলের মেডিক্যাল স্টাফেরা একাধিকবার শুভমনের অবস্থা মূল্যায়ন করেন এবং কোনও ঝুঁকি নিতে নারাজ হন। সেই কারণেই তাঁকে দল থেকে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। জানিয়েছে এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম। শুভমন এখন সরাসরি মুম্বইয়ে উড়ে যাচ্ছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার জন্য।
সম্ভবত সার্জন দিনশ পারদিওয়ালার তত্ত্বাবধানে তাঁর চিকিৎসা করা হবে। এরপর তাঁকে বেঙ্গালুরুর বিসিসিআই সেন্টার অফ এক্সেলেন্সে পাঠানো হবে আরও রিহ্যাব ও রিকভারি প্রোগ্রামের জন্য। শুভমনের অনুপস্থিতিতে গুয়াহাটি টেস্টে ভারতীয় দলের নেতৃত্ব দেবেন ঋষভ পন্থ। ব্যাটিং অর্ডারেও পরিবর্তন হতে চলেছে। শুভমনের পরিবর্তে প্রথম একাদশে জায়গা পাওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে তরুণ প্রতিভা সাই সুদর্শনের। এই পরিকল্পনা যে অনেক আগেই করা হয়েছিল, তার ইঙ্গিত মিলেছে কলকাতার অনুশীলনেও। গত মঙ্গলবারই গৌতম গম্ভীর সুদর্শনকে দীর্ঘক্ষণ ব্যাটিং করান ও বিশেষ নজরে রাখেন।
সব মিলিয়ে, দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে সিরিজের গুরুত্বপূর্ণ দ্বিতীয় টেস্টের আগে শুভমনের ছিটকে যাওয়া ভারতীয় দলের জন্য বড় ধাক্কা। তবে অধিনায়কের সুস্থতা এবং ভবিষ্যতে দীর্ঘমেয়াদি খেলার কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত। এখন দেখার বিষয়, গিলের অনুপস্থিতিতে দলের উপর বাড়তি দায়িত্ব কিভাবে সামলান পন্থ-সুদর্শনরা।

