হাসপাতালে মারা গিয়েছে স্বামী, বেপাত্তা স্ত্রী ও আত্মীয়-পরিজন, দিশেহারা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ

অসুস্থ স্বামীকে হাসপাতালে ভর্তি করে বেপাত্তা স্ত্রী, হাসপাতালেই মারা গিয়েছে স্বামী, ছয় দিন ধরে হাসপাতাল মর্গে রয়েছে স্বামীর দেহ-কিন্তু খোঁজ নেই মৃতের স্ত্রী এবং আত্মীয় পরিজনের, কে বা কারা করবে মৃতদেহের সৎকার? কঠিন বিপাকে পড়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। একদমই অজ্ঞাত পরিচয় বলা যাবে না কারণ নাম পরিচয় দিয়েই হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছিলেন অসুস্থ স্বামীকে। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, চলতি মাসের ১৯ তারিখ দুপুরে উত্তর চব্বিশ পরগনার বিরা জয়পুলের বাসিন্দা অঞ্জু পাল স্ত্রীর পরিচয় দিয়ে ষাটোর্ধ্ব অসুস্থ স্বামী বাবু পাল নামে এক ব্যক্তিকে হাবড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। ওই দিন বিকেলেই তার স্বামী বাবু পাল হাবড়া হাসপাতালে মারা যান। কিন্ত ওই ব্যক্তির মৃত্যুর পরে তাঁর স্ত্রী বা কোনো আত্মীয় পরিজনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। মৃতের পরিবারের কোনো সন্ধান না মেলায় ছ’দিন ধরে মৃতদেহ রাখা রয়েছে হাবড়া হাসপাতাল মর্গে। হাবড়া হাসপাতালের সুপার বিবেকানন্দ বিশ্বাস আমাদের ক্যামেরার সামনে তিনি জানিয়েছেন, স্ত্রীর পরিচয় দিয়ে অঞ্জু দেবী তার স্বামী বাবু পালকে পায়ে পচন ধরা অবস্থায় হাবড়া হাসপাতাল নিয়ে এসেছিলেন। সঙ্গে সঙ্গে ভর্তিও করে নেওয়া হয়। ডকুমেন্টস না আনলে যে চিকিৎসা শুরু হবে না তাতো নয়, তাই নাম পরিচয় নিয়েই তড়িঘড়ি ভর্তি করানো হয়। এমনকী, ছিল না কোনো ফোন নম্বর। ইতিমধ্যেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিরা জয়পুল এলাকার পার্শ্ববর্তী হাবড়া থানা এবং দত্তপুকুর থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিকদের বিষয়টি জানিয়েছে, কিন্ত প্রশাসনের পক্ষ থেকে চেষ্টা করেও ওই এলাকায় ওই নাম পরিচয়ের কারো খোঁজ মেলেনি। এমনকী বিষয়টি জানানো হয়েছে মহাকুমা শাসককে। এছাড়াও জেলার বিভিন্ন স্বাস্থ্য বিভাগে বিষয়টি জানানো হয়েছে। যেহেতু নাম পরিচয় দিয়েই রোগীকে ভর্তি করা হয়েছিল সেহেতু মৃত ব্যক্তিকে অজ্ঞাত পরিচয়ের ব্যক্তিও বলা যাবে না এমনকী এই মুহূর্তে করা যাবেনা মৃতদেহের সৎকার। এই ঘটনায় যে চরম বিপাকে পড়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাবড়া হাসপাতাল সুপার বিবেকানন্দ বিশ্বাস মৃত ব্যক্তির চেহার বিবরণ দেওয়ার পাশাপশি তিনি বলেন, আমরা চাই পরিবারের লোকজন এসে মৃতদেহ নিয়ে যাক। এমনকী কে বা কারা বাবু পালকে হাসপাতালে নিয়ে এলেন সেটা জানতে হাসপাতালের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখা হবে বলে সুপার জানান। প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি এর পিছনে কোনও রহস্য আছে? প্রশ্ন উঠছে তাহলে কি বৃদ্ধকে হাসপাতালে ভর্তির সময় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ইচ্ছাকৃত ভুল ঠিকানা দেওয়া হয়েছে? উঠছে নানা প্রশ্ন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

seventeen − 14 =