দু’দিনের বৃষ্টিতে আমের ফলনে লাভের আশা দেখছে চাষি থেকে উদ্যানপালন দপ্তর

মালদা: মালদায় দু’দিনের হালকা স্বস্তির বৃষ্টিতে দুশ্চিন্তা দূর হয়েছে আম চাষিদের। এপ্রিল মাসের শুরু থেকে যেভাবে তীব্র দাবদহে পুড়ছিল মালদা, তাতে ব্যাপকভাবে আমগাছে রোগ পোকার আক্রমণ শুরু হয়েছিল। কিন্তু মে মাসের প্রথম সপ্তাহ পেরিয়েই আচমকায় বৃষ্টি এবং শীতল আবহাওয়ার জেরে কিছুটা হলেও রেহাই মিলেছে মালদার আম চাষিদের। যেভাবে বিভিন্ন ধরনের রোগ পোকার আক্রমণ নিয়ে চাষিরা দুশ্চিন্তায় ছিলেন, সেখান থেকেও স্বস্তি মিলেছে আম চাষিদের। যার ফলে এবারে জলদি জাতের আম যথা – আম্রপলি, গোপালভোগ, হিমসাগর, মিশ্রিকান্ত, জিলাপিগাড়া, লক্ষ্মণভোগ বিপুল পরিমাণে উৎপাদন হওয়ার আশা করছেন চাষিরা। মূলত এই জাতের আম মরশুমের প্রথমেই পরিপক্ক অবস্থায় গাছ থেকে পারা হয়। জুন মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকেই শুরু হয়ে যাবে গাছ থেকে আম পারার কাজ। তার আগে মালদায় দুই দিনের বৃষ্টিতেই আমের গোড়া শক্ত এবং রোগ পোকা দূর হবে বলেও মনে করছে উদ্যানপালন দপ্তর।

জেলা উদ্যানপালন দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বছর মালদায় প্রায় ৩৩ হাজার হেক্টর জমি জুড়ে আম চাষ হয়েছে। আমের মুকুল গাছে ধরার পর থেকেই ব্যাপক ভাবে আম উৎপাদনের আশঙ্কা করেছিল চাষি থেকে সংশ্লিষ্ট দপ্তর। কিন্তু এপ্রিল মাসের শুরু থেকে যেভাবে জেলা জুড়ে তাপ প্রবাহ চলছিল তাতে অনেকটাই সমস্যা পড়েছিলেন মালদা আম চাষিরা। ৪৩ থেকে ৪৪ ডিগ্রি তাপমাত্রা জেরে আমের গোড়া ফেটে যাচ্ছিল এবং রোগ পোকাও দেখা দিয়েছিল।

পুরাতন মালদা ব্লকের মঙ্গলবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের আম চাষি রহিম শেখ, বদরুদ্দীন শেখ বলেন, এপ্রিল মাসের গরমে আমের ফলনে অনেকটাই ক্ষতি করেছিল। তীব্র দাবদহের কারণে আম ফেটে যাচ্ছিল। ফলে জলদি জাতের আম উৎপাদন নিয়ে আমরা দুশ্চিন্তায় পড়েছিলাম। কিন্তু কয়েকদিনের শীতল আবহাওয়া এবং হালকা বৃষ্টির জেরে দুশ্চিন্তা অনেকটা কমিয়েছে। কারণ এই বৃষ্টির জল পেয়েই রোগ পোকা দূর হবে এবং আমের গোড়া শক্ত হবে। ফলে কালবৈশাখীর জেরেও আম ঝরে পড়া সম্ভব না অনেকটাই কম থাকবে। পাশাপাশি আম উৎপাদনের মাত্রাও অনেকটাই বাড়বে। মালদা ম্যাংগো মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি উজ্জ্বল সাহা বলেন, যে আমগুলো মরশুমের প্রথমে উৎপাদন হয় এবং গাছ থেকে পারা হয়, তার দাম বাজারে ভালো থাকে। ফলে চাষিরা এই আম পাইকারদের কাছে বিক্রি করে ভালো লাভ করতে পারেন। কিন্তু প্রথম থেকেই তাপপ্রবাহ নিয়েই আম চাষিরা দুশ্চিন্তায় ছিলেন। তবে এখন খানিকটা স্বস্তি এসেছে। দুইদিনের বৃষ্টিতে আমকে ক্ষতির মুখ থেকে অনেকটাই রক্ষা দিয়েছে। এবছর প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ মেট্রিক টনেরও বেশি আম উৎপাদনে সম্ভাবনা রয়েছে মালদায়। এতে করে চাষিরা অনেকটাই লাভ করতে পারবেন।

মালদা উদ্যানপালন দপ্তরের আধিকারিক সামন্ত লায়েক জানিয়েছেন, আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে কিছুটা সমস্যা হয়েছিল। তবে এবারে মালদায় আম উৎপাদন অনেকটাই বেশি হবে বলেও মনে করা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

1 × one =