কলকাতা: বেসরকারি বাস-মিনিবাসের ভাড়া বাড়ানোর বিষয়টি বিবেচনা করতে রাজ্যের পরিবহণ সচিবকে নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। ৬ সপ্তাহের মধ্যে এ নিয়ে বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে বুধবার নির্দেশ দিয়েছে ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় ও বিচারপতি শুভেন্দু সামন্তর ডিভিশন বেঞ্চ।
মোটর ভেহিকেলস আইনের ৬৭ ধারা অনুযায়ী আর্থিক দিক থেকে প্রতিযোগিতামূলক ভাবে বাস ও মিনিবাস পথে চলায় ভাড়ার বিষয়টি বিবেচনা করতে হবে। ফলে ২০১৮ সালের পরে সরকারি ভাবে রাজ্যে বেসরকারি বাস ও মিনিবাসের ভাড়া বাড়তে চলেছে বলেই মনে করছে বাস মালিকদের সংগঠনগুলি।
দীর্ঘ দিন ধরে রাজ্যে সরকারি ভাবে বাসের ভাড়া বাড়েনি। যদিও করোনা এবং লকডাউনের পর থকে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বেসরকারি বাস-মিনিবাস মালিকদের একটা অংশ নিজেদের মতো করে ভাড়া বাড়িয়ে দিয়েছেন। যা নিয়ে নিত্যই বাসের কন্ডাক্টরদের সঙ্গে যাত্রীদের গোলমালও বাধছে। আবার পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির মধ্যেও সরকারি ভাবে ভাড়া না-বাড়ায় অনেক বাস মালিক বাস-মিনিবাস বসিয়ে দিতেও বাধ্য হয়েছেন। ফলে রাস্তায় বাসের সংখ্যা কমেছে, ভোগান্তি বেড়েছে যাত্রীদের। এই টানাপড়েনের মধ্যেই আসানসোল মিনিবাস সংগঠন ও অল বেঙ্গল বাস সমন্বয় কমিটি ভাড়া বাড়ানোর দাবিতে হাইকোর্টে মামলা করে। কিন্তু রাজ্য সরকার দাবি করে, ভাড়া বাড়ানোর বিষয়টি একেবারেই সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত। আদালত নাক গলাতে পারে না। বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের এজলাসে এই যুক্তি মান্যতা পায়। সংগঠনগুলি ডিভিশন বেঞ্চে ওই রায় চ্যালেঞ্জ করে।
বিচারপতি মুখোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে এ দিন মামলাকারীদের আইনজীবী মুকুল লাহিড়ী নথি দিয়ে দেখান, ২০১৮ সালে শেষ বার সরকার ভাড়া বাড়িয়েছিল। তখন ডিজেলের দাম যা ছিল, তার থেকে গত চার বছরে দাম বেড়েছে অনেক বার। অন্যান্য জিনিসপত্রের দামও বেড়েছে। অথচ বাস-মিনিবাসের ভাড়া বাড়েনি। এ দিনও রাজ্যের আইনজীবী দাবি করেন, ভাড়া বাড়ানোর বিষয়টি রাজ্যের বিচার্য। কিন্তু আদালত জানিয়ে দেয়, যেহেতু চার বছর আগে শেষ ভাড়া বেড়েছিল এবং এই সময়ের মধ্যে জ্বালানির দাম বেড়েছে অনেকটাই, তাই রাজ্যকে বিষয়টি বিবেচনা করতে হবে।