‘বিশিষ্ট স্বাধীনতা সংগ্রামী গোপাল কৃষ্ণ গোখলে একসময় বলেছিলেন, বাংলা আজকে যা ভাবে, ভারতবর্ষ তা আগামীকাল ভাববে। ১৯ শতকের গোড়ার দিকে এই বক্তব্য খুবই প্রাসঙ্গিক ছিল। কিন্তু আজকের বাংলার এই বক্তব্যের বিপরীতে অবস্থান করছে। উন্নয়ন এবং সুশাসনের পাশাপশি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশকে মান্যতা দেওয়ার ক্ষেত্রেও রাজ্য পিছিয়ে পড়ছে,’ এক অ্যাসিড আক্রান্ত নির্যাতিতাকে সাড়ে সাত লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিতে গিয়ে এমনই পর্যবেক্ষণ হাইকোর্টের বিচারপতি শেখর ববি সরাফের। সঙ্গে অসন্তোষ প্রকাশ করতে দেখা গেল বাংলার আইনশৃঙ্খলা নিয়েও।
প্রসঙ্গত অতীতে বিভিন্ন ইস্যুতে রাজ্যের বিরুদ্ধে উঠেছে আদালতের নির্দেশ অবমাননরা অভিযোগ। এর আগে মহার্ঘভাতা বা ডিএ নিয়ে রাজ্যের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা হয় হাইকোর্টে। মামলাকারী সমস্ত কর্মী সংগঠনগুলিকে একত্রে করে চলে শুনানি। আবার পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময়ও রাজ্য নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ তুলে প্রধান বিচারপতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেন কংগ্রেস নেতা আবু হাশেম খান চৌধুরীর আইনজীবী। এক্ষেত্রেও মামলা দায়ের করার অনুমতি দেয় প্রধান বিচারপতি ডিভিশন বেঞ্চ।
অন্যদিকে রাজ্যের উন্নয়ন ও সুশাসন নিয়েও এদিন কার্যত অসন্তোষ প্রকাশ করতে দেখা যায় আদালতকে। এক্ষেত্রে উল্লেখ্য রাজ্যর উন্নয়ন ও সুশাসন নিয়ে বারংবার রাজ্যকে নিশানা করতে দেখা গিয়েছে বিরোধীদেরও। কয়েক মাস আগে সমাপ্ত পঞ্চায়েত নির্বাচনে বারেবারেই অশান্ত হয়ে উঠেছে বাংলার বিভিন্ন জায়গা। মৃত্যু হয়েছে অনেকের। এমনকী নির্বাচন মিটে যাওয়ার পরেও অশান্তি জারি থেকেছে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায়।
আবার রাজ্যের সম্প্রতি বেআইনি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের মতো ঘটনাও ঘটেছে। এগরা, খাদিকুল বা উত্তর২৪ পরগনার দত্তপুকুরে বেআইনি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণে বেশকয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে। দত্তপুকুরের ঘটনায় তো আবার এলাকার বিধায়কের বিরুদ্ধেই অভিযোগ করেন স্থানীয়রা। তাঁদের অভিযোগ ছিল, এলাকার বিধায়ক এবং স্থানীয় থানার আইসি সবই জানতেন। এমনকীর তাঁদের পরোক্ষ মদতেই ওইসব বেআইনি বাজি কারখানাগুলি চলত। সেক্ষেত্রে একের পর এক এই ধরণের অভিযোগের মাঝেই হাইকোর্টের এহেন পর্যবেক্ষণ বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞমহল।