তৃণমূল কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করলেন প্রধান শিক্ষিকা

বুবুন মুখোপাধ্যায়

দুয়ারে সরকার শিবির চলাকালীন আসানসোল (Asansol) শহরের জিটি রোডের মূর্গাশোল আর্যকন্যা উচ্চ বিদ্যালয়ে, দলবল নিয়ে চড়াও হয়ে ছাত্র ভর্তির জন্য চাপ ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল। আসানসোল পুরনিগমের ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের সদ্য নির্বাচিত হওয়া তৃণমূল কংগ্রেসের কাউন্সিলর রণবীর সিং বারারা ওরফে জিতুর বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় ব্যাপক শোরগোল পড়ে শিক্ষা মহলে। ওই গার্লস স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা ঊর্মিলা ঠাকুর গোটা ঘটনার কথা জানিয়ে আসানসোল দক্ষিণ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। সেই অভিযোগ জেনারেল ডায়েরি হিসেবে ধরে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। সদ্য নির্বাচিত দলের এক কাউন্সিলরের এহেন আচরণে চরম অস্বস্তিতে পড়েছে পশ্চিম বর্ধমান জেলা তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব। গোটা ঘটনার কথা ঠিক কি হয়েছে, তা জানতে ওই কাউন্সিলরকে রাতেই জেলা কার্যালয়ে তলব করা হয়েছে বলে জানান দলের রাজ্য সম্পাদক তথা আসানসোল পুরনিগমের দলের আহ্বায়ক ভি শিবদাসন দাসু। একইভাবে তৃণমূল কংগ্রেসের উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষক সংগঠনের জেলা কমিটি, কাউন্সিলরের এমন আচরণে যথেষ্টই ক্ষুব্ধ। সংগঠনের জেলা সভাপতি রাজীব মুখোপাধ্যায় বলেন, কাউন্সিলর স্কুলে গিয়ে ভর্তির জন্য চাপ দিয়ে ঠিক কাজ করেননি। কাউন্সিলর অন্যভাবে তার কথা বলতে পারতেন। আমরা চাই, সবকিছু দেখে দলের পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। এমন ঘটনায় রীতিমতো আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা থেকে অন্য শিক্ষিকা সহ কর্মীরা। তবে, তার বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন শাসকদলের ওই কাউন্সিলর। তিনি বলেন, আমার ওয়ার্ডে দুটি স্কুল রয়েছে। তার মধ্যে একটিতে আমার অনুরোধ মতো পড়ুয়াদের ভর্তি করা হয়েছে। তাদের ফিও কমানো হয়েছে। কিন্তু আর্যকন্যা স্কুলে তা করা হয়নি। আমি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হিসেবে মেয়েদেরকে ভর্তি করানোর অনুরোধ করেছিলাম। প্রথমবার, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি স্কুলে গিয়ে প্রধান শিক্ষিকাকে সেই অনুরোধ করেছিলাম। তিনি বলেছিলেন ১ মার্চ বলবেন। তারমধ্যে আমি লিখিতভাবে আবেদন করি। তাতে কিছু করা হয়নি। তাই আমি এদিন কয়েকজন মেয়ে ও তাদের অভিভাবকদের নিয়ে দুয়ারে সরকারের শিবির চলাকালীন যাই। প্রধান শিক্ষিকার সঙ্গে দেখা করে বলি। তার দাবি, আমি থাকাকালীন প্রধান শিক্ষিকা অফিসে সবাইকে ডেকে নেন। পরে আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশও আসে। আমি তখন চলে আসি। আমি কোনও চাপ ও হুমকি দিইনি। সবকিছু স্কুলের সিসি ক্যামেরায় রয়েছে। থানায় অভিযোগ দায়ের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পুলিশ তদন্ত করে দেখুক। এই প্রসঙ্গে প্রধান শিক্ষিকা বলেন, গোটা ঘটনার কথা জানিয়ে আমি আসানসোল দক্ষিণ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি। তাতে আমি সব বলেছি। জেলার নামকরা স্কুল এটি। আমরা দুয়ারে সরকারের শিবির করছি। ওই কাউন্সিলর এসে ভর্তি করানোর জন্য চাপ দিচ্ছেন। হুমকি দিয়েছেন। আমরা চাই পুলিশ তদন্ত করে পদক্ষেপ নিক। কারণ, এই ঘটনায় আমরা সবাই ভীত ও আতঙ্কিত। আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ জানায়, অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five × four =