উপাচার্য নিয়োগকে কেন্দ্র করে যে ভাবে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে বিদ্ধ করা হচ্ছিল রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসকে তারই প্রেক্ষিতে তিনি জানিয়েছিলেন শনিবার মধ্যরাতে তিনি পদক্ষেপ নেবেন। কথার নড়চড় হয়নি। এরপরই দু-দুটি চিঠি রাজভবন থেকে পাঠানো হয়। একটির ঠিকানা নবান্ন এবং অপরটি দিল্লি। দিল্লিতে কার উদ্দেশ্যে এই চিঠি গেছে তা নিয়েও ছিল ধোঁয়াশা। তবে পরে জানা যায়, চিঠি পাঠানো হয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উদ্দেশ্যেই। চিঠিতে কী রয়েছে তা নিয়ে এখনও স্পষ্ট কিছুই ধারনা দেননি রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। এদিকে, খামবন্দি সেই চিঠিতে ঠিক কী পদক্ষেপ নেওয়ার কথা উল্লেখ করেছেন রাজ্যপাল তা নিয়ে বঙ্গ রাজনীতিতে শুরু হয় জল্পনা। কানাঘুষো জল্পনা চলতেই থাকে দিল্লিকেই বা কী জানালেন তিনি তা নিয়েও। সে বিষয়টিও স্পষ্ট করেননি। তবে সোমবার সাংবাদিকদের সামনে চিঠির বিষয়বস্তু আরও রহস্য বাড়ালেন রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান। ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করে বলেন, ‘গোপন কথা গোপনই থাকুক।’ একইসঙ্গে তাঁর সংযোজন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিদেশ সফরের আগে তাঁকে চিন্তার মধ্যে ফেলতে চান না। তাঁর ফেরার পর এই বিষয়ে আলোচনা করবেন। তবে মুখ্যমন্ত্রীকে ‘চিন্তার’ মধ্যে না ফেলতে চাইলেও তাঁকে খানিকটা খোঁচা মেরেই সাংবিধানিক প্রধান জানিয়েছেন, তিনি চিঠি পাঠিয়েছিলেন কারণ কয়েকটি বিষয় সম্পর্কে তাঁর কিছু জানার ছিল। সঙ্গে এও বলেন, এখন এই চিঠির বিষয়ে তিনি আলোচনা চান না। কারণ মুখ্যমন্ত্রী ব্যস্ত বিদেশ যাত্রার জন্য। তাই লাগেজের পাশাপাশি অতিরিক্ত আর কোনও বাড়তি বোঝা তিনি চাপিয়ে দিতে চান না। প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার ১২ সেপ্টেম্বর স্পেন সফরে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলায় বিনিয়োগ টানতেই সেখানে যাচ্ছেন তিনি। রাজ্যপালের কথা অনুযায়ী, বিদেশ সফরের আগে ‘রহস্যময়’ এই চিঠির প্রসঙ্গে আলোচনা হলে চিন্তায় পড়তে হতে পারে তাঁকে সেই কারণেই তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছেন। এদিকে উপাচার্য নিয়োগ ইস্যুতে বারবরই বাগযুদ্ধে জড়াতে দেখা গেছে রাজ্যপাল বোস এবং শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্যকে। গত ৮ সেপ্টেম্বর শুক্রবার সিভি আনন্দ বোসের কার্যকলাপ নিয়ে সমালোচনা করে তাঁকে মহম্মদ বিন তুঘলকের সঙ্গে তুলনা করেছিলেন। তাঁর পাল্টা উত্তর দেয় রাজভবন। টুইটে লেখা হয়, ‘কী হয় তা দেখার জন্য মধ্যরাত পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।’