কে প্রকৃত শিবসেনা, তা বাছাইয়ের দায়িত্ব যাতে নির্বাচন কমিশনের হাতে না যায়, সে জন্য সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছিল মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরের গোষ্ঠী। কিন্তু মঙ্গলবার বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ সেই আবেদন খারিজ করে দিল।
সুপ্রিম কোর্ট মঙ্গলবার প্রকৃত শিবসেনা বাছার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের অনুমতি দিয়েছে কমিশনকে। একনাথ শিন্ডের বিদ্রোহের জেরে মুখ্যমন্ত্রিত্ব হারানোর তিন মাস পরে শীর্ষ আদালতের এই সিদ্ধান্তে শিবসেনার প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত বালাসাহেব ঠাকরের ছেলে এ বার দলের নিয়ন্ত্রণও হারাতে পারেন বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করছে।
গত জুন মাসে একনাথ শিন্ডের (Eknath Shinde) নেতৃত্বে শিবসেনা বিধায়কদের বেশিরভাগটাই উদ্ধবের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। পরে বিজেপির সমর্থনে মহারাষ্ট্রে সরকার গড়ে শিবসেনার সেই বিদ্রোহী শিবির। মুখ্যমন্ত্রী হন একনাথ শিন্ডে। দলের বিদ্রোহ সামলাতে না পেরে উদ্ধব ঠাকরে শিন্ডে শিবিরের বিধায়কদের বিধায়ক পদ খারিজের মামলা করেন। পালটা শিন্ডে শিবির দাবি করে, তারাই আসল শিবসেনা। কারণ সিংহভাগ বিধায়কের সমর্থন রয়েছে তাদের পক্ষেই।
শিন্ডে এবং উদ্ধব (Uddhav Thackeray) দুই শিবিরই দাবি করছে, তারাই আসল শিবসেনা। নিয়ম অনুযায়ী, নির্বাচন কমিশন ঠিক করবে, আসল শিবসেনা কারা। বা কোন শিবির শিবসেনার তির ধনুক প্রতীক পাবে। কিন্তু উদ্ধব শিবির সুপ্রিম কোর্টে এরই মধ্যে আবেদন জানায়, যাতে শিন্ডেদের বিধায়ক পদ খারিজ না হওয়া পর্যন্ত ‘আসল শিব সেনা’ নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত না নেয় নির্বাচন কমিশন। কিন্তু শীর্ষ আদালত সেই আরজি খারিজ করে দিল। এবার নিজেদের নিয়ম অনুযায়ী শিব সেনার মালিকানা ঠিক করবে কমিশন।
উদ্ধব শিবিরের আইনজীবী কপিল সিবল মঙ্গলবার আদালতে আবেদন জানান, দলবিরোধী কাজে অভিযুক্ত শিন্ডে-সহ বিদ্রোহী বিধায়কদের পদ খারিজের মামলার শুনানি শেষ না হওয়া পর্যন্ত যেন কমিশনকে শিবসেনার ‘মালিকানা’ নিয়ে আবেদনের শুনানির অনুমতি না দেওয়া হয়। তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন যদি আগেই শিন্ডে গোষ্ঠীকে ‘প্রকৃত শিবসেনার’ মর্যাদা দিয়ে দেয়, তবে বিধায়ক পদ খারিজের দাবির মামলা গুরুত্ব হারাবে।’ কিন্তু সেই যুক্তি, পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ খারিজ করে দেয়।