নিজস্ব প্রতিবেদন, কাঁকসা: সামনেই রথযাত্রা৷ কিন্তু রথযাত্রার মেলায় বিক্রি হওয়া মাটির পুতুলের বাজার খারাপ৷ আর এতেই মন ভারাক্রান্ত মৃৎশিল্পীদের৷ কারণ যুগ বদলেছে৷ আর প্রযুক্তির যুগের সঙ্গে বর্তমানে তাল মেলাতে অক্ষম মাটির পুতুল৷ ফলে বর্তমান প্রজন্মের কাছে মাটির পুতুলের চাহিদা কমায় এই শিল্পের করুণ দশা৷ দীর্ঘ প্রায় ৮০ বছরেরও বেশি সময় ধরে কাঁকসার রথতলায় রথযাত্রা উপলক্ষে বসে মেলা। মঙ্গলবার রথের মেলায় ভিড় জমাবেন এলাকার বহু মানুষ।
সোমবার সকাল থেকেই শুরু হয়েছে রথ পরিষ্কার ও সাজানোর কাজ। অপর দিকে, মেলায় ইতিমধ্যে বেশ কিছু দোকানপাঠ বসতেও শুরু করেছে। রথের মেলা উপলক্ষে প্রতি বছর বিকিকিনি ভালো হলেও, বাজার মন্দা মাটির পুতুলের। আট থেকে আশি, সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করত এই মাটির পুতুল৷ বড় থেকে ছোট, এমনকি শিশুরা মাটির পুতুল কিনতে ভিড় করতেন বিভিন্ন দোকানে। সময় বদলেছে, মোবাইলের যুগে এখন ছোট থেকে বড় সবার খেলার সরঞ্জাম বলতে একটাই উপকরণ, মোবাইল। বর্তমান যুগে মাটির পুতুলের জায়গায় প্লাস্টিকের খেলনা বেশি পছন্দ করছে শিশুরা। ফলে আগের তুলনায় চাহিদা অনেকটাই কমেছে গত কয়েক বছর ধরে।
মৃৎশিল্পী সুশান্ত সূত্রধর জানান, একটা সময় ছিল কাঁকসার রথতলার মেলার মুখ্য আকর্ষণ ছিল মাটির পুতুল। স্থানীয় মৃৎশিল্পীরা ছাড়াও বহু ব্যবসায়ী মাটির তৈরি পুতুল নিয়ে পসরা সাজিয়ে বসতেন।
মৃৎশিল্পী অরিন্দম দাস জানান, মাটির পুতুল তৈরি করে তেমন লাভ হয় না। শুধু শিল্পটাকে ধরে রাখতে ও মেলার অতিহ্যকে ধরে রাখতে প্রতি বছরের মতো এবছরও মাটির পুতুল তৈরি করেছেন তাঁরা৷ আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে মাটির পুতুল বিক্রি করে তাঁরা এবছর লাভের মুখ দেখতে পারবেন বলেই আশা তাঁদের। বংশ পরম্পরায় তৈরি হয়ে আসা মাটির পুতুল এখনও তাঁরা তৈরি করে চলেছেন শিল্পটাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্যই। তবে আর কতদিন এভাবে প্রাচীন এই শিল্প বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব হবে, সেটাই দেখার৷