পদত্যাগ করলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন সুবিনয় চক্রবর্তী। ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে যে আভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল,সেই কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন অধ্যাপক সুবিনয় চক্রবর্তী। তাঁর নেতৃত্বেই চলছিল তদন্ত। এবার তিনিই ইস্তফা দেওয়ায় শুরু হয় জোর জল্পনা।
এদিকে পড়ুয়া মৃত্যুর ঘটনার পর তদন্তে নেমে সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ে আভ্যন্তরীণ কমিটি জানায় র্যাগিংয়ের জেরেই মৃত্যু হয়েছে প্রথম বর্ষের পড়ুয়ার। পুলিশের পাশাপাশি আভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটিও করছিল তদন্ত। সেই তদন্ত চলাকালীন ডিনের এই সিদ্ধান্তে বাড়ছে গুঞ্জন। কেন তিনি ইস্তফা দিলেন, এই প্রসঙ্গে কোনও বিশেষ কারণ জানাতে রাজি নন সুবিনয়বাবু। বরং তিনি জানান, এটি আভ্যন্তরীণ ব্যাপার। ব্যক্তিগত কিছু কারণে নিজের পদ থেকে পদত্যাগ করছেন দিচ্ছেন তিনি। প্রসঙ্গত, শনিবার রাত্রিবেলা বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য হিসাবে নিয়োগ হন গণিতের অধ্যাপক বুদ্ধদেব সাউ। তাঁর দায়িত্বভার হাতে নেওয়ার আগেই ডিনের এই পদত্যাগ নিঃসন্দেহে চাঞ্চল্যকর ইঙ্গিত-ই দেয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের এই টালমাটাল অবস্থায় যেখানে ডিনদের অনেক বেশি দায়িত্ব নিতে হতো সেই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে হঠাৎই তাঁর এই পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
উল্লেখ্য, পড়ুয়া মৃত্যুর তদন্তে নেমে প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পর তদন্ত কমিটি জানতে পারে, ইন্ট্রো দেওয়ার নামে ঘটনার দিন প্রথমে বিবস্ত্র করা হয় নাবালককে। তারপর ওই অবস্থাতেই তাকে হস্টেলের তিনতলার রেলিংয়ে হাঁটতে বাধ্য করেন সিনিয়ররা। আভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি জানতে পারে, হস্টেল থেকে পড়ে যাওয়ার পর রাত্রিবেলা গেট বন্ধ করে চলে জেনারেল বডি মিটিং। চারবার জিবি মিটিং হয়। পুলিশ যাতে হস্টেলে প্রবেশ করতে না পারে সেই কারণে বন্ধ করে দেওয়া হয় গেটও।
এদিকে গেট বন্ধ করার ঘটনায় ইতিমধ্যেই গ্রেফতার হয়েছেন যাদবপুরের প্রাক্তন পড়ুয়া জয়দীপ ঘোষ। এমনকী,আরও কয়েকজন অভিযুক্তকেও জিজ্ঞাসাবাদ করত কমিটি। সুবিনয়বাবু ইস্তফা দেওয়ায় এই তদন্তের মাঝ পথেই ভাটা পড়বে কি না তা নিয়েও শুরু হয়েছে জল্পনা। কারণ তদন্তের বহু রিপোর্ট-তথ্য রয়েছে ডিনের কাছে। নতুন উপাচার্যকে সেই সমস্ত বিষয় বুঝিয়ে দেওয়ার আগেই তাঁর পদত্যাগ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।