একশো দিনের কাজের টাকা কেন আটকে রাখা হয়েছে, কেন্দ্রের কাছে জানতে চাইল আদালত

পশ্চিমবঙ্গে একশো দিনের কাজের টাকা কেন আটকে রাখা হয়েছে, সেই বিষয়ে কেন্দ্রের জবাব চেয়ে পাঠাল হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম ও বিচারপতি হিরন্ময় ভট্টাচার্যর ডিভিশন বেঞ্চ।
একশো দিনের কাজের টাকা আটকে রাখা নিয়ে রাজ্য সরকার বার বার সরব হয়েছে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে। এদিকে একশো দিনের কাজের টাকা আটকে রাখার ইস্যুতে ইতিমধ্যে কলকাতা হাইকোর্টে মামলাও হয়েছে। প্রকল্পের টাকা কেন বন্ধ করা হল সেই ইস্যুতে হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা করেছিল খেত মজদুর কমিটি। দাবি ছিল, অবিলম্বে যাতে প্রকল্পের টাকা চালু করা হয়। এই মামলাতেই হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম ও বিচারপতি হিরন্ময় ভট্টাচার্যর ডিভিশন বেঞ্চ এবার কেন্দ্রের থেকে রিপোর্ট তলব করেন।

উল্লেখ্য, একশো দিনের কাজের প্রকল্পে কেন্দ্রের থেকে প্রায় ২ হাজার ৭০০ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে রাজ্যের। ‘মনরেগা’ প্রকল্পের বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে রাজ্যে বেশ কিছু বেনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ভুয়ো অ্যাকাউন্ট খুলে, ভুয়ো নাম ব্যবহার করে একশো দিনের কাজের টাকা তোলার যে অভিযোগ উঠে এসেছে, সেই অভিযোগগুলি যথাযথভাবে তদন্ত করে দেখার জন্য কেন্দ্র ও রাজ্যকে নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। কেন্দ্রের উদ্দেশে হাইকোর্টের মন্তব্য, ‘রাজ্যের অ্যাকশন টেকেন রিপোর্ট কেন্দ্র হয় গ্রহণ করুক, নয়তো বাতিল করুক। কিন্তু কিছু একটা তো করতে হবে।’ হাইকোর্টের নির্দেশ, আগামী ১০ দিনের মধ্যে কেন্দ্রকে ওই রিপোর্ট জমা দিতে হবে। জুলাই মাসে এই সংক্রান্ত মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে।

আদালত সূত্রে খবর, মঙ্গলবার রাজ্যের তরফে আদালতে সওয়াল করেন আইনজীবী সম্রাট সেন। আদালতে রাজ্যের তরফে আইনজীবী সম্রাট সেন জানান, ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে কেন্দ্র একশো দিনের কাজের প্রকল্পের টাকা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। তারপর থেকে রাজ্যের তরফে ৪-৫টি অ্যাকশন টেকেন রিপোর্টও পাঠানো হয়েছে কেন্দ্রের কাছে। রাজ্যের বক্তব্য, কেন্দ্রকে একাধিকবার অনুরোধ করা হয়েছে, যাতে লাখ লাখ সাধারণ মানুষকে ভোগান্তির শিকার না হতে হয়। কিন্তু এত কিছুর পরেও কোনও ফল হয়নি বলেই আদালতে জানান আইনজীবী সম্রাট সেন।
অন্যদিকে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে অ্যাডিশনাল সলিসিটর জেনারেল বিল্বদল ভট্টাচার্য এদিন আদালতে জানান, একশো দিনের কাজের টাকা ‘লুঠ’ করার একাধিক অভিযোগ রয়েছে কেন্দ্রের কাছে। ভুয়ো ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বানিয়ে, ভুয়ো জব কার্ড বানিয়ে, মিথ্যা টেন্ডার দেখিয়ে ‘মনরেগা’ প্রকল্পের টাকা লুঠ করা হয়েছে বলে অভিযোগ জানান অ্যাডিশনাল সলিসিটর জেনারেল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five × 4 =