নিজস্ব প্রতিবেদন, কলকাতা: একেই বলে ‘কাঁটায়-কাঁটায় টক্কর’। শনিবার একদিকে যখন অধিকারী গড়ে তথা শান্তিকুঞ্জের অদূরে সুর চড়াবেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ঠিক সেই দিনই এই অভিষেকের লোকসভা কেন্দ্র ডায়মন্ড হারবারে বিজেপির সভায় থাকবেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। শুক্রবারই এই সভা সংক্রান্ত মামলায় অনুমতি দেয় আদালত। এদিন আদালত জানায়, ডায়মন্ডহারবারের লাইট হাউস মাঠে সভা করতে পারবেন শুভেন্দু। সুতরাং শনিবার দুই শিবিরের সেনাপতির সভা ঘিরে যে বঙ্গ রাজনীতি বেশ উত্তপ্ত হয়ে উঠতে চলেছে এটাই স্বাভাবিক। প্রসঙ্গত, এর আগে এই সভার অনুমতি মিলছিল না প্রশাসনের তরফ থেকে। এরপরই আদালতের দ্বারস্থ হয় বিজেপি।
প্রসঙ্গত, ৩ ডিসেম্বর বিজেপির মথুরাপুর সংগঠনিক জেলার উদ্যোগে আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনকে সামনে রেখে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর জনসভা করার কর্মসূচি নেওয়া হয়। তবে সভাস্থল নিয়ে তৈরি হয় অনিশ্চয়তা। বিজেপির মথুরাপুর সংগঠনিক জেলার সভাপতি প্রদ্যোৎ বৈদ্য জানিয়েছিলেন, কুলপির দেরিয়ার মাঠে শুভেন্দু অধিকারীর জনসভার জন্য সমস্ত প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল। বৃহস্পতিবার মঞ্চ বাঁধার কাজও শুরু হয়। কিন্তু কুলপি থানার পুলিশ প্রশাসন আদালতে ওই এলাকায় প্রশাসনিক অসুবিধার কথা জানিয়ে এই জনসভা নিয়ে আপত্তি জানায়। বিজেপিও সেখানেই সভা করার অনড় মনোভাব নিয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়। বৃহস্পতিবার রাতে অবশ্য বৈঠক করে কেল্লার মাঠে অথবা লাইট হাউসের মাঠে ওই জনসভার আয়োজন করা যেতে পারে বলে মত প্রকাশ করে দল। এরপরই শুক্রবার হাই কোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাসে মামলাটির শুনানি হয়। বিচারপতি মান্থা জানান, ডায়মন্ড হারবারের লাইট হাউস মাঠে শুভেন্দু অধিকারীর সভায় কোনও বাধা নেই। তবে বেশ কয়েকটি শর্তের কথা এদিন জানান তিনি। তার মধ্যে অন্যতম শর্তটি হল, শব্দবিধি মেনে সভা করার। অর্থাৎ শব্দদূষণ যাতে না হয়, সেদিকে কড়া নজর রাখবে পুলিশ। পাশাপাশি এও নির্দেশ, এই সভার জন্য যেন এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি না হয়, তাও দেখতে হবে, জেলা পুলিশকে।
আদালতের এই রায় জানার পরই সভা নিয়ে কাটে জটিলতা। এরপরই পুরোদমে প্রস্তুতি নিতে কোমর বেঁধে নামেন বিজেপির কর্মীরা। সূত্রে খবর, ডায়মন্ড হারবারের ওই মাঠ পরিষ্কার করার কাজও শুরু করেন তাঁরা। সঙ্গে লাগানো হতে থাকে ফ্ল্যাগ-ফেস্টুন। আদালতের রায়ের পর স্থানীয় বিজেপি কর্মীরা জানান, ‘গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য এই সভা করা হচ্ছে। সভা।’ সরকার পক্ষ পরিকল্পনা করে সেই সভা পণ্ড করার চেষ্টা করেছিল বলেই ধারনা তাঁদের।