বন্ধ হয়ে গেল আর জি কর হাসপাতালে দেশের প্রথম সরকারি পয়জন ইনফর্মেশন সেন্টার। ২০২২ সালে দেশের সেরা পয়জন ইনফর্মেশন সেন্টারের সম্মানও পায় কেন্দ্রটি। তথ্য যা বলছে তাতে বিশ্বে এরকম ৩২৮টি পয়জন ইনফর্মেশন সেন্টার রয়েছে। সবগুলিই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুমোদিত। এর মধ্যে ভারতে আছে ন’টি। এই ৯ টি পয়জন ইনফর্মেশন সেন্টারের মধ্যে আরজিকর ছিল একটি। যার পরিষেবা শুরু হয় ২০১৮ সালে। সরকারি ভাবে দেশের প্রথম কোনও সরকারি হাসপাতালে শুরু হয় এই পরিষেবা। এবার তা বন্ধ হয়ে যাওয়া ঘিরে উঠছে প্রশ্ন। কারণ, আর জি করে এই পরিষেবা চালুর পর রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যোগাযোগ করতেন সাধারণ মানুষ। এদিকে ভারতে অন্য যে পয়জন ইনফর্মেশন সেন্টার রয়েছে সেগুলি হল সিএমসি ভেলোর, অমৃতা ইনস্টিটিউট, কস্তুরবা, জেএসএস, এইমস, মণিপাল, জিজি হাসপাতাল এবং আমেদাবাদের একটি কেন্দ্র। এরই সঙ্গে বন্ধ হয়ে গেল বিষ সংক্রান্ত কোনও তথ্য জানার টোল ফ্রি ফোন পরিষেবাও।
আর জি করের এই পয়জন ইনফর্মেশন সেন্টার সম্পর্কে জানা যাচ্ছে, ২০১৮ সাল থেকে শুরু হওয়ার পর আর জি করের কেন্দ্রটি এখনও পর্যন্ত ১০ হাজারের বেশি মানুষ এখানকার টোল ফ্রি নম্বরে ফোন করে সাপের কামড়-সহ নানা ধরনের বিষের বিষয়ে জানতে চেয়েছেন। সূত্রের খবর, কিছুদিন আগে এই সেন্টারের প্রতিষ্ঠাতা, ইনচার্জ তথা ফরেনসিক ও স্টেট মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডাঃ সোমনাথ দাসকে বদলি করা হয় বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে। তারপর থেকেই আর বিকল্প কোনও ব্যবস্থা করতে পারেনি আর জি কর। তারই জেরে বন্ধ হয়ে গেল এই সেন্টার।
এই ঘটনায় স্বাভাবিক ভাবেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। কারণ, উত্তর বা দক্ষিণ ২৪- পরগনায় সাপে কাটা রোগীর সংখ্যা কম নয়। এদিকে সামনে আসছে গ্রীষ্ম এবং বর্ষা। যেখানে সাপের উপদ্রব বাড়বেই। এই প্রসঙ্গে আর জি কর হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান ডাঃ শান্তনু সেন জানান, ‘বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত আমরা। দ্রুত চালু করতে স্বাস্থ্য ভবনকে অনুরোধ করেছি।’ মূলত, উপসর্গ শুনে বিভিন্ন ধরনের সাপ, তার বিষের প্রকৃতি ও চিকিৎসা সম্পর্কে অবহিত করানো, ফার্মাসিউটিক্যাল পয়জনিং বা ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার চটজলদি চিকিৎসা, বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক খেয়ে ফেললে সঙ্গে সঙ্গে কী করা উচিত, বোলতা, মৌমাছি-সহ বিভিন্ন ধরনের পতঙ্গের কামড়ে কী করণীয়, বিষাক্ত মাকড়শা ও অন্যান্য কীটের কামড়ে কী করবেন, কী করবেন না, এরকম নানা তথ্য টোল ফ্রি নম্বরে ফোন করে জেনে নিতে পারতেন মানুষ। কোভিড পর্বে অনেকে ভুল করে স্যানিটাইজার খেয়ে ফেলেছিলেন। সেই সংক্রান্ত তথ্য জানতে পারতেন সাধারণ মানুষ। শহরের পাশাপাশি বিভিন্ন জেলা এমনকি গ্রাম থেকেও ফোন আসত মানুষের।’ এখন হঠাৎই এই পরিষেবা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় উঠছে প্রশ্ন। এবার সময়ই বলবে কবে ফের শুরু হতে পারে এই পরিষেবা। নাকি বন্ধ করা হল চিরকালের জন্য।