চিপকের রং বেগুনি, বোলারদের দাপটে তৃতীয় আইপিএল কেকেআরের

চিপকে বেগুনি ঝড়। ধোনির শহর শ্রেয়সের দখলে। ফিরল ১২ বছর আগের স্মৃতি। দশ বছর পর আইপিএল চ্যাম্পিয়ন কলকাতা নাইট রাইডার্স। গৌতম গম্ভীর ফিরতেই ফিরল ট্রফি। আইপিএলে জয়ের হ্যাটট্রিক নাইটদের। ২০১২, ২০১৪ সালের পর ২০২৪। দশ বছরের দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান। শাহরুখ খানের একটি চালেই বাজিমাত। গম্ভীরের ‘ঘর ওয়াপসি’তেই ‘ট্রফি ওয়াপসি।’ ২০১২ সালে তাঁর হাত ধরেই প্রথম ট্রফি এসেছিল কেকেআরের। এবার ভূমিকা বদলালেও দলের ভাগ্য ফেরালেন নাইটদের মেন্টর। গম্ভীরের আইপিএলের হ্যাটট্রিক। সুনীল নারিনেরও। সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে জয়েরও হ্যাটট্রিক। চলতি আইপিএলে পরপর তিনবার‌ জয় নাইটদের। পুরোপুরি একপেশে ম্যাচ। গোটা ম্যাচেই আধিপত্য নাইটদের। ফাইনালের মতো ফাইনাল না। তাতে কী! প্রতিটা মুহূর্ত তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করলেন শাহরুখ খান। সঙ্গে ছিলেন গৌরি, সুহানা, আরিয়ান এবং আব্রাম। এদিন চিপকের গ্যালারি ছিল তারকায় ঠাসা। সপরিবারে ছিলেন জুহি চাওলা। শাহরুখ কন্যার দুই বন্ধু অনন্যা পাণ্ডে, শানায়া কাপুর হাজির। ছিলেন রাজকুমার রাও, জানভী কাপুরও।‌ বলিউডের কিংয়ের আমন্ত্রণে গ্যালারি ভরিয়েছিল তারকারা। তাঁদের সামনে দাপুটে জয় কেকেআরের।

পুরো ২০ ওভার ব্যাট করতে পারেনি হায়দরাবাদ। ১৮.৩ ওভারে ১১৩ রানে অলআউট সানরাইজার্স। আইপিএলের ফাইনালের ইতিহাসে সর্বনিম্ন রান। রান পাননি বিধ্বংসী জুটি ট্রাভিস হেড (০) এবং অভিষেক শর্মা (২)। আইপিএলের সেরা বল করেন মিচেল স্টার্ক। হায়দরাবাদের আরেক ব্যাটিং স্তম্ভ হেনরিচ ক্লাসেনও রান পায়নি (১৬)। সর্বোচ্চ রান প্যাট কামিন্সের। ২৪ রান করেন হায়দরাবাদের নেতা। গোটা ব্যাটিং ফ্লপ। অথচ এই একই দল এবারের আইপিএলে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়েছে। রবিবাসরীয় সন্ধেয় কেকেআরের বোলারদের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি হায়দরাবাদের ব্যাটাররা‌। পুরোপুরি আত্মসমর্পণ। তিন উইকেট নেন আন্দ্রে রাসেল। জোড়া উইকেট মিচেল স্টার্ক, হরষিত রানার। কেকেআরের প্রত্যেক বোলারই উইকেট পায়। রান তাড়া করতে নেমে মাত্র ১০.৩ ওভারে ৮ উইকেটে জয়সূচক রানে পৌঁছে যায় নাইটরা। আইপিএলের ফাইনালের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় জয়। এই সাফল্য টিমগেমের। হায়দরাবাদ গোটা ইনিংসে মাত্র ৩টি ছয়, ৮টি চার মারে। পাওয়ার প্লেতেই সেই সংখ্যা ছাপিয়ে যায় নাইটরা। কে বলবে একই পিচে কিছুক্ষণ আগেই নাকানিচোবানি খায় সানরাইজার্স!

রান তাড়া করতে নেমে শুরুতেই ফেরেন সুনীল নারিন (৬)। দলকে জেতানোর দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন রহমতুল্লাহ গুরবাজ এবং ভেঙ্কটেশ আইয়ার। ৩২ বলে ৩৯ রান করে আউট হন আফগান ক্রিকেটার। ২৪ বলে অর্ধশতরান তুলে নেন ভেঙ্কটেশ আইয়ার। বিধ্বংসী ইনিংসে ছিল ৩টি ছয়, ৪টি চার। জয়সূচক রান আসে বাঁ হাতির ব্যাটেই। ৫২ রানে অপরাজিত থাকেন ভেঙ্কটেশ। অন্য প্রান্তে অপরাজিত শ্রেয়স (৬)। খেলা শেষ হতেই চিপকে আবেগের লাভাস্রোত। ছুটে মাঠে ঢুকে পরে কেকেআরের বাকি সদস্যরা। গ্যালারিতে উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন শাহরুখ খান এবং তাঁর পরিবার। কেকেআরকে অভিনন্দন জানান রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

5 − one =