থাকব না কো বদ্ধ ঘরে, দেখব এবার জগৎটাকে,
কেমন করে ঘুরছে মানুষ যুগান্তরের ঘূর্ণিপাকে। — কাজি নজরুল ইসলাম।
সত্যিই তো চার দেওয়ালের বদ্ধ জীবন কি ভালো লাগে? হোক না সে ‘না মানুষ’। তাই সুযোগ বুঝেই খাঁচা থেকে বেরিয়ে পড়ল আলিপুর চিড়িয়াখানার শিম্পাঞ্জি ‘বুড়ি’। নাম তার বুড়ি হলেও, মোটেই তার মন তেমন নয়। বরং দুষ্টুমি করতে ওস্তাদ সে।
এদিকে সোমবার সকালে খাঁচা ছেড়ে শিম্পাঞ্জিকে বের হতে দেখে চিড়িয়াখানায় দর্শকমহলে তখন হুলস্থূল কাণ্ড। তবে শিম্পাঞ্জিকে দ্রুততার সঙ্গে খাঁচায় ফেরত পঠানো হয়। আলিপুর চিড়িয়াখানায় (Alipore Zoological Garden) বেশ কিছুদিন হয়ে গেল বুড়ির। ছোট্ট খাঁচাটিই তাঁর আস্তানা। সেখানে আবার ‘ছোটু’ ও ‘মস্তান’ নামে আরও দুই শিপাঞ্জির বাস। তাদের সঙ্গে নিত্যদিন চলে বুড়ির খুনসুটি। প্রথমে শোনা গিয়েছিল, খাঁচা টপকে পালিয়েছে বুড়ি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হঠাৎ একটি শিম্পাঞ্জি খাঁচার বেড়া টপকে বাইরে বেরিয়ে পড়ে। শিম্পাঞ্জিকে খাঁচার বাইরে দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন দর্শকরা। শিম্পাঞ্জিরা মাঝে মাঝেই পাঁচিল টপকে বেরিয়ে পরে। তাই তাদের খাঁচার সামনে সৌর বিদ্যুতের বেড়া দেওয়া হয়েছে। সৌর বিদ্যুতের বেড়া টপকে কীভাবে এদিন বুড়ি বেরিয়ে পড়ল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। চিড়িয়াখানা সূত্রে খবর, বুড়ি মাঝে মাঝেই বেরিয়ে পড়ে। এদিন পাঁচিল টপকানোর সময় প্রথমে সৌর বিদ্যুতের বেড়ায় গিয়ে পড়ে। বেড়ায় খুব হালকা বিদ্যুৎ থাকে। তাই শক লাগলেও ক্ষতি হয়নি। বিদ্যুতের বেড়ায় লেগে ছিটকে পাঁচিল টপকে চলে আসে বুড়ি।
সকালে কী ঘটেছিল? আলিপুর চিড়িয়াখানার ডিরেক্টর আশিস সামন্ত জানান, ছোট থেকেই কিপারদের হাত ধরেই মাঝেমধ্যে খাঁচার বাইরে ঘুরতে বের হয় বুড়ি। এদিন সকাল ১০টা-সাড়ে দশটা নাগাদ কিপার শিম্পাঞ্জিদের খাঁচায় ঢোকেন। কিপার খাঁচা থেকে বেরনোর সময়ে বুড়িও তার সঙ্গে বেরিয়ে পড়ে। সেই সময়ে দর্শক ছিল বলে আতঙ্ক ছড়ায়। তবে সঙ্গে সঙ্গে তাকে খাঁচায় ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। মিনিট পাঁচেকের মধ্যেই পরিস্থিতি সামাল দেন চিড়িয়াখানার কর্মীরা। তবে ঘটনার জেরে প্রায় এক ঘন্টা চিড়িয়াখানার প্রবেশপথ, টিকিট কাউন্টার বন্ধ করে দেওয়া
জানা গিয়েছে, বুড়ির এবং অন্যান্য শিপাঞ্জিদের খাঁচার চারপাশে সৌরবিদ্যুৎ চালিত তার দেওয়া আছে। আবার কাচের আবরণও দেওয়া আছে। এসব দেখেশুনে তারের বিদ্যুতের পরিমাণ একটু বাড়ানোর ভাবনাচিন্তা চলছে বলে সূত্রের খবর। তবে, অনেকেই বলছেন, হোক সে শিম্পাঞ্জি। বন্দি জীবন কারই বা ভালো লাগে?