প্রশাসনের নির্দেশ উপেক্ষা করে কার্যত মালদা শহরে বেশ কিছু নামজাদা বিরিয়ানির এবং রেস্তোরাঁ চলছিল রমরমিয়ে। পাশাপাশি আরো বেশ কিছু কয়েকটি মিষ্টির দোকানে চলছিল একই রকম কায়দায়। জেলা খাদ্য সুরক্ষা দপ্তর থেকেও পাঠানো হয়েছিল শোকজ নোটিস। কিন্তু কোনও কিছুরই সদুত্তর দেওয়ার প্রয়োজন বোধ করেনি নামজাদা বিরিয়ানি, মিষ্টি এবং রেস্তোরাঁর দোকানগুলি। অবশেষে ময়দানে নেমে বিভিন্ন সরকারি নিয়মভঙ্গ করার অভিযোগে মালদা শহরের গৌড়রোড এবং কেজে সান্যাল রোডের নামিদামি বিরিয়ানি রেস্তোরাঁ সহ কয়েকটি খাবার, মিষ্টি এবং হোটেল সিল করে দিল প্রশাসন। পুজোর মরশুমের মুখে শহরের নামজাদা এসব রেস্তোরাঁ, বিরিয়ানির দোকান বন্ধ হতেই ব্যাপক চর্চা শুরু হয়েছে। যদিও সাধারণ মানুষের বক্তব্য, জেলা খাদ্য সুরক্ষা দপ্তর ভালো উদ্যোগ নিয়েছে। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে যদি কোথাও খাবার তৈরি করা হয়, তাতে তো সাধারণ মানুষ অসুস্থ হবে। মূলত শিশুরাও এই ধরনের মুখরোচক খাবার খেয়ে থাকে। মালদার জেলাশাসক নীতিন সিংহানিয়া জানিয়েছেন, ক্রেতারা যাতে সঠিক মানের খাবার খেতে পারেন সেই দিকেই লক্ষ্য রেখে খাদ্য সুরক্ষা দপ্তরের একটি টিম পুজোর মরশুমের আগে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালাচ্ছে। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে যদি কোনও খাবার তৈরি হয় সেটা বেআইনি। সেই দিকে বিচার করে খাদ্য সুরক্ষা দপ্তরের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকটি দোকান সিল করে দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, মালদা শহরের ইংরেজবাজার থানার বিপরীতে একটি নামজাদা বিরিয়ানির দোকান রয়েছে। যেখানে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ক্রেতাদের কেনার ভিড় উপচে পরত। একইভাবে মালদা শহরের গৌড়রোড এলাকায় এরকমই দুটি হোটেল ও ফাস্টফুডের দোকান বেশ প্রচলিত ছিল। যেখানে ভাত ,ডাল, মাছ, মাংস, সবজি ও নানান ধরনের ফাস্টফুড খাবার তৈরি করা হতো। কিন্তু সেইসব খাবারের গুণগত মান কতটা সঠিক রয়েছে এবং কতটা স্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার তৈরি করা হচ্ছে। এই ব্যাপারে নোটিস দিয়ে জেলা খাদ্য সুরক্ষা দপ্তর জানতে চেয়েছিল। কিন্তু কে শোনে কার কথা? ওই সব দোকানিরা অবশ্য ভেবেছিলেন হয়তো এবারও কোনও নেতার হাত ধরে পার পেয়ে যাবেন। কিন্তু সেটা আর হল না। খাদ্য সুরক্ষা দপ্তরের নির্দেশ মতো শোকজের উত্তর না দেওয়াই অবশেষে অভিযান চালিয়ে সেই সব দোকান সিল করে দেওয়া হয়।
জেলা খাদ্য সুরক্ষা দপ্তরের এক কর্তা জানিয়েছেন, যে রকম অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার তৈরি হচ্ছে সেটা সম্পূর্ণ বেআইনি। সরকারি অনুযায়ী খাবারের দোকানে চালাতে গেলে কতগুলো নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে রেস্টুরেন্ট বা ফাস্টফুড চালানোর লাইসেন্স থাকতে হবে। ফাস্ট ফুডের ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। এছাড়াও আরো একাধিক নিয়ম রয়েছে। শুধু তাই নয়, ওইসব দোকানে অভিযান চালিয়ে পরিস্থিতি দেখে রীতিমতো হতবাক হয়ে গিয়েছেন তদন্তকারী অফিসারেরা। কয়েকটি দোকানে ফাস্টফুডের খাবারে রীতিমতো রং মেশানোর অভিযোগ উঠেছে। এইসব পরিস্থিতির দিক দিয়ে বিবেচনা করে আপাতত ওইসব খাবারের দোকান সিল করে দেওয়া হয়েছে।