একাধিক সম্পর্কে জড়িত থাকার সন্দেহে একাদশ শ্রেণির ছাত্রীকে খুন, জেরায় স্বীকার করল প্রেমিক

চারদিন নিখোঁজ থাকার পর পুরাতন মালদায় একাদশ শ্রেণির এক ছাত্রীর অর্ধনগ্ন, পচাগলা দেহ উদ্ধার হল পুকুর থেকে। এই ঘটনায় পুলিশি জেরার মুখে প্রেমিকাকে শ্বাসরোধ করে খুন করার কথা স্বীকার করেছে প্রাক্তন প্রেমিক। একাধিক প্রেমের সম্পর্কে থাকার কারণেই অভিযুক্ত প্রেমিক বদলা নিতেই ওই ছাত্রীকে খুন করে পুকুরে ডুবিয়ে দিয়েছিল। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে, পুরাতন মালদা থানার যাত্রাডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েতের হালনা মহম্মদপুর এলাকায়। এই ঘটনায় পুলিশ অভিযুক্ত সামিম আক্তারকে গ্রেপ্তার করেছে। পাশাপাশি ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করা হয়ে থাকতে পারে বলে অনুমান পুলিশের। কারণ, ঘটনাস্থল থেকে ওই ছাত্রীর একটি অন্তর্বাস উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার সকালে ওই গ্রামের একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে রক্তের দাগ দেখতে পান জনৈক কিছু মানুষ। কিন্তু ওই পরিত্যক্ত বাড়ি এবং বাড়িসংলগ্ন পুকুরে দিনভর অভিযান চালিয়ে অবশেষে নিখোঁজ ওই ছাত্রীর দেহ উদ্ধার করে। হালনা মহম্মদপুর গ্রামের বাসিন্দা আসরেফা খাতুন (১৬)। সেই স্থানীয় একটি স্কুলে একাদশ শ্রেণিতে পাঠরত ছিল। গত ১৮ জুন শনিবার রাত ন’টা নাগাদ ওই ছাত্রীকে মোবাইলে ফোন করে ডেকে নিয়ে যায় প্রতিবেশী সামিম আখতার এবং তার বাবা ইসলাম আলি বলে অভিযোগ। আর সেই রাত থেকেই নিখোঁজ ছিল ওই ছাত্রী । এই ঘটনার পরের দিন রবিবার পুরাতন মালদা থানায় ওই ছাত্রীর মা রোজিনা বিবি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন প্রতিবেশী বাবা ও ছেলের বিরুদ্ধে। পুলিশ জানিয়েছে, ছাত্রী নিখোঁজের ঘটনায় তদন্ত শুরু করার পাশাপাশি বুধবার সকালে খবর আসে যে, হালনা মহম্মদপুর গ্রামের একটি ভাঙাচোরা পরিত্যক্ত বাড়িতে কয়েক ফোটা রক্ত পড়ে রয়েছে। বাড়ি সংলগ্ন পুকুরে জাল ফেলে খোঁজ চালানো হয়। এরপরই ওই পুকুর থেকে মৃত ছাত্রীর দেহ উদ্ধার হয়। পাশাপাশি পরিত্যক্ত বাড়ি থেকে কয়েকটি প্রেমের নিবেদন করা চিঠি ও একটি মহিলাদের অন্তর্বাস উদ্ধার হয়।
মৃত ছাত্রীর মা রোজিনা বিবি জানিয়েছেন, প্রতিবেশী সামিম আক্তারদের সঙ্গে আমাদের ভালো সম্পর্ক ছিল। মেয়ে বলেছিল সামিম তাকে ফোন করে ডেকেছে। এরপর গত ১৮ জুন শনিবার রাত থেকেই নিখোঁজ হয়ে যায় মেয়ে। পরেরদিন আমরা সামিমের বিরুদ্ধে পুরাতন মালদা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করি। আমরা ভাবতেই পারছি না যে সামিম আমার মেয়েকে প্রতিশোধ নিতে এভাবে খুন করবে। অভিযুক্তের ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন মৃত ছাত্রীর পরিবার এবং গ্রামবাসীরা। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সামিম আক্তার এবং তার বাবা ইসলাম আলিকে আটক করা হয়েছিল। দীর্ঘক্ষণ জেরা করার পর ভেঙে পড়ে সামিম। এরপরই ওই ছাত্রীকে শ্বাসরোধ করে মাথা ভারী বস্তু দিয়ে আঘাত করে খুনের ঘটনার কথা স্বীকার করে সে। ওই ছাত্রীর সঙ্গে একাধিক যুবকের সঙ্গে সম্পর্ক থাকার কারণেই প্রতিশোধ নিতেই খুন করেছে অভিযুক্ত ওই যুবক বলে প্রাথমিক জেরায় জানিয়েছে। তবে ধর্ষণের ব্যাপারে পরিষ্কার করে কিছু জানায়নি। বুধবার ধৃতকে আদালতে পেশ করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

5 × one =