শ্রীভূমির পুজোয় যান নিয়ন্ত্রণে বড় সিদ্ধান্ত পুলিশের

২০২১-এ বুর্জ খলিফা করে ‘লেজে গোবরে’ অবস্থা হয়ছিলেন শ্রীভূমি স্পোটিং ক্লাবের। ভিড়ের চাপে শেষ পর্যন্ত বন্ধ করে দিতে হয়েছিল মণ্ডপে দর্শনার্থীদের প্রবেশ। ব্যাহত হয়েছিল যানচলাচল। যানজটের জেরে অনেকে প্লেন, ট্রেন ধরতে পারেননি। ‘২২-এ যেন সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয় তা নিয়ে দমকলমন্ত্রী সুজিত বসুকে সতর্ক করে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গতবছর মহালয়ার আগে থেকেই কলকাতায় কিছু বড় পুজো শুরু হয়। শ্রীভূমির পুজোর উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। পুজো মণ্ডপের থিম ছিল ভ্যাটিকান সিটি। উদ্বোধন হলেও তখনই পুজো মণ্ডপে দর্শনার্থীদের প্রবেশের অনুমতি ছিল না। মণ্ডপ খুলে দেওয়া হয় তৃতীয়া থেকে। গত ২২ অগস্ট নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে বাংলার দুর্গাপুজোর কমিটিগুলোর সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘সবচেয়ে দুষ্টুমি করে সুজিত বোস। এমনভাবে আয়োজন করে এয়ারপোর্ট থেকে লোক আসতে পারে না। পুলিশকে বলব এয়ারপোর্ট যাতে ডিসটার্ব না হয়। তুমি একটু দেখে করবে। তুমি ফায়ার ব্রিগেড মিনিস্টার, তোমাকেও একটু মাথায় রাখতে হবে। এলাকা সাজিয়েছোও ভালো, কিন্তু দেখে নিতে হবে ট্রান্সপোর্ট সিস্টেম যাতে চলে।’ মজার ছলে তাঁর বক্তব্য রাখার পরে খানিক ধমকের সুরে মুখ্যমন্ত্রী জোড়েন, ‘ট্রান্সপোর্ট ব্লক হলে আমি তোমাকে ব্লক করব।’
শ্রীভূমির পুজোর দর্শকদের ভিড়ে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে ভিআইপি রোড। যার প্রভাব পড়ে উলটোডাঙা, চিংড়িঘাটা মোড় থেকে শুরু করে ইএম বাইপাসে। এই পুজোর কারণে যানজট সামলাতে নয়া সিদ্ধান্ত নিল কলকাতা পুলিশ।
শ্রীভূমির পুজো খাতায়কলমে বিধাননগর কমিশনারেটের আওতায়। তাই উত্তরের এই পুজোর কারণে যানজট সামলাতে ফি বছর চাপে পড়ে কলকাতা পুলিশও। এ বার যাতে তেমন পরিস্থিতি তৈরি না হয়, সেটা নিশ্চিত করতে চাইছে লালবাজার।
সূত্রের খবর, সে কারণে বিধাননগর পুলিশের সঙ্গে সম্প্রতি বৈঠক করেছেন কলকাতা পুলিশের কর্তারা। ঠিক হয়েছে, ভিআইপি রোডে দর্শকদের দাঁড়াতে দেওয়া হবে না। পথচারীদের রাস্তা পেরোতে হবে সাবওয়ে দিয়ে। প্যান্ডেলে দর্শকদের প্রবেশের জন্য প্রতি বছরই অনেকটা আগে থেকে ব্যবহার করা হয় সার্ভিস রোড। তারপরেও অনেক পথচারী বড় রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করেন। যার প্রভাব পড়ে গাড়ি চলাচলে।
এবার তাই মণ্ডপ যাওয়ার পথ টিনের ব্যারিকেডে ঘেরা হবে বলে ঠিক হয়েছে। পাশাপাশি থাকবেন পর্যাপ্ত পুলিশকর্মী। সার্ভিস রোডের বাইরে যাতে দর্শকরা যেতে না পারেন, তা নিশ্চিত করবেন এঁরা। উলটোডাঙা থেকে বিমানবন্দরগামী গাড়িগুলিকে চিংড়িঘাটা থেকে নিউ টাউন হয়ে ঘোরানো হবে বলেও ঠিক হয়েছে। আবার, এয়ারপোর্ট থেকে কলকাতামুখী গাড়িগুলিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হবে নিউটাউন হয়ে। ভিআইপি রোডের ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণে উপস্থিত থাকবেন দু’জন ডেপুটি কমিশনার, চার জন অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার-সহ পর্যাপ্ত পুলিশ কর্মী। বিধাননগর কমিশনারেটের সদর দপ্তরে বসে সিসিটিভিতে পরিস্থিতির উপর নজর রাখবেন শীর্ষকর্তারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five × two =