অপহরণের প্রায় ১০ দিন পর গলাকাটা অবস্থায় তৃণমূল কর্মীর দেহ উদ্ধার ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ালো হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকায়। বুধবার সকালে ওই তৃণমূল কর্মীর গলা কাটা দেহ উদ্ধার হয় হরিশ্চন্দ্রপুর থানার কাতলামারী এলাকার একটি জলাশয় থেকে। যদিও এই ঘটনা তদন্তে নেমে পুলিশ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার বাড়ি থেকে ৫০০ মিটার দূরে মাখনার জলাশয় থেকে তার গলাকাটা দেহ উদ্ধার হয়। এলাকা দখলকে ঘিরে কাতলামারি এলাকায় বাসির ও উনসাহ হকের গোষ্ঠীর বিবাদ দীর্ঘদিনের।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃত তৃণমূল কর্মীর নাম আব্দুল বারিক (৫০)। সে উনসাহ হকের ভাইপো। তাকে বাসির ও তার দলবল অপহরণ করেছিল বলে অভিযোগ ওঠে গত ১০দিন আগে। এদিন বাসিরের ছেলে সাদ্দামকে নিয়ে তল্লাশি চালায় পুলিশ। সাদ্দামই জলাশয়ে বারিকের দেহ খুন করে ফেলে দেওয়া হয়েছিল বলে দেখিয়ে দেয়। বারিকের গলা কাটা ছিল। তার পেটে ধারালো অস্ত্রের আঘাত ছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে। তবে দেহ মিললেও মাথার হদিশ এখনও মেলেনি বলে পুলিশ জানিয়েছে। এদিকে ওই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত বাসিরকেও পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। নেপালে পালানোর সময় নেপাল সীমান্ত থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে এদিন সকালেই হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় নিয়ে আসা হয়।
উল্লেখ্য, কাতলামারির বাসির ও উনসাহ হকের গোষ্ঠীর বিবাদ বেশ পুরনো। এলাকা দখলকে ঘিরে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে একাধিকবার সংঘর্ষ ও গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। গত ১৪ মে শনিবার রাতে বাসির দলবল নিয়ে উনসাহ হকের ভাইপো আব্দুর বারিকের বাড়িতে চড়াও হয়ে তাকে তুলে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ। বাধা দেওয়ায় তার স্ত্রী সায়েমা বিবিকেও বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। তারপর থেকে বারিকের খোঁজে তল্লাশি চালালেও তার হদিশ মেলেনি। মঙ্গলবার বাসির ধরা পড়তেই তাকে জেরা করে বারিককে খুনের বিষয়ে নিশ্চিত হয় পুলিশ। তারপরেই বাসিরের ছেলে সাদ্দামকে নিয়ে তল্লাশি শুরু হয়।
মৃতের ভাই সাহেবজান হক বলেন, বাসির চায় যে ও একাই এলাকায় রাজত্ব করবে। আমরা বাধা দেওয়ায় একাধিকবার আমাদের উপরে গুলি চালানো হয়েছে। আমাকেও একবার গুলি করা হয়েছিল। কোনও রকমে প্রাণে বেঁচেছি।মৃতের স্ত্রী সায়েমা বিবি বলেন, অভিযুক্তদের যেন ফাঁসি হয় এটাই চাই। জেলা পুলিশ সুপার প্রদীপ কুমার যাদব জানিয়েছেন, ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে। একজন মহিলার যোগাযোগ রয়েছে এই ঘটনায়। তারও খোঁজও শুরু হয়েছে।