শিক্ষক একইসঙ্গে উপ পুরপ্রধান, কীভাবে? দেবজ্যোতি ঘোষকে তলব হাই কোর্টের

ব্যারাকপুর: পাসপোর্ট বলছে তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি পাশ। তা সত্ত্বেও তিনি প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি করছেন কীভাবে?

শিক্ষক দুর্নীতি মামলায় এবার কলকাতা হাইকোর্ট তলব করল ভাটপাড়া পুরসভার উপ-পুরপ্রধান দেবজ্যোতি ঘোষকে। আগামী ১৬ ডিসেম্বর তাঁকে সশরীরে আদালতে হাজিরার নির্দেশ দিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। ব্যারাকপুর পুলিস কমিশনারকে হাজিরা সুনিশ্চিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নির্দেশ অমান্য করলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত।

প্রসঙ্গত, প্রাথমিক শিক্ষক তিনি।জানা গিয়েছে, একসময়  প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অ্যাডহক কমিটির সদস্যও ছিলেন দেবজ্যোতি ঘোষ।তিনি আবার ভাটপাড়া পুরসভার উপ পুরপ্রধান। সূত্রের খবর, ধৃত পর্ষদ সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ এই দেবজ্যোতি ঘোষ। অভিযোগ, প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক হিসেবে বেতন পেলেও, পুরসভার উপ-পুরপ্রধান হিসেবেও তিনি প্রতিমাসে বেতন নিচ্ছেন। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে সরকারি ভাবে তিনি কীভাবে দুই জায়গায় থাকতে পারেন ও বেতন নিতে পারেন?

কোয়েনা দে নামে এক মহিলা তৃণমূল নেতা দেবজ্যোতি ঘোষের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছেন। তিনি প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষক হিসেবে কাজ করেন। মহিলা প্রশ্ন তুলেছেন, একজন প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক কীভাবে ভাটপাড়া পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান হতে পারেন?  কোয়েনা দে-র অভিযোগ, তাঁর যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও দেবজ্যোতি ঘোষের জন্য তিনি চাকরি পাননি। এই অভিযোগ শোনার পরই তাঁকে হাজিরা দেওয়ার কথা বলেছেন বিচারপতি।

সওয়াল জবাব শেষে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় ১৬ ডিসেম্বর তাঁকে আদালতে হাজিরার নির্দেশ দিয়েছেন। এদিকে, ওই মামলা নিয়ে ভাটপাড়ার উপ-পুরপ্রধান দেবজ্যোতি ঘোষ বলেন,  ‘আমার পাসপোর্টে অষ্টম শ্রেণি পাশের উল্লেখ এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা। ওখানে মাধ্যমিক পাস এবং অতিরিক্ত উল্লেখ রয়েছে। ২০১০ সালে এপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জ থেকে কলের মাধ্যমে প্রাথমিক স্কুলে চাকরি হয়েছে।’

দেবজ্যোতির বক্তব্য,  স্কুল থেকে মাইনে পাই  আর পুরসভা থেকে যেটা পাই সেটা সান্মানিক। উপ-পুরপ্রধান দেবজ্যোতি ঘোষের দাবি, তাঁর স্বচ্ছ ভাবমূর্তিকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা চলছে। এসব চক্রান্ত হচ্ছে। এমনকী মামলাকারী কোয়েনা দে-কে তিনি চেনেন না বলে বুধবার দাবি করেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ তিনি আদালতে খণ্ডন করবেন বলে জানিয়েছেন দেবজ্যোতি ঘোষ। এপ্রসঙ্গে বিজেপির ভাটপাড়া মণ্ডল-১ সভাপতি প্ৰদ্যুৎ ঘোষ বলেন, অন্যায় করলে তার ফল ভুগতেই হবে। এক ব্যক্তি সরকারের থেকে দু’ভাবে কখনই বেতন নিতে পারেন না। আসলে বাংলায় একটা পাগলের সরকার চলছে। যার যা খুশি, তাই করছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five × one =