ইডি-র তলবে এবার সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে হাজির হতে দেখা গেল কামারহাটি পুরসভায় কর্মরতা শ্বেতা চক্রবর্তীকে। ইডি-সূত্রে খবর, নিয়োগ দুর্নীতি মামলাতেই তাঁকে এদিন তলব করা হয়। এদিকে শ্বেতা কিন্তু প্রথম থেকেই দাবি করে আসছেন, শুধুমাত্র পেশাগত কারণে তাঁর সঙ্গে অয়নের যোগাযোগ ছিল তাঁর। উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার সাড়ে দশটা নাগাদ সিজিও কমপ্লেক্সে হাজিরা দেন শ্বেতা। তবে দপ্তরেপ্রবেশের সময় কোনও কথা বলেননি তিনি। একেবারেই মুখে কুলুপ আঁটা বলতে যা বোঝায় সেটাই করেন তিনি। সোজা প্রবেশ করেন সিজিও কমপ্লেক্সের ভেতরে।
ইডি-র হাতে হুগলির প্রোমোটার অয়ন শীল গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকে সামনে আসে কামারহাটির পুরসভায় কর্মরতা শ্বেতার নামও। তিনি অয়নের ‘বান্ধবী’, পরিচিত মহলে জানা যাচ্ছিল এমনটাই। কিন্তু, অপর একটি সূত্র জানাচ্ছিল, অয়ন শ্বেতাকে ‘ভাগ্নি’ পরিচয় দিত। এদিকে শ্বেতার দাবি, তিনি কাজের সূত্রেই অয়নকে চিনতেন। প্রযোজক অয়নের সঙ্গে তিনি কাজ করেছিলেন।
ইডি-র তরফ থেকে তদন্তকরারী আধিকারিকেরা শ্বেতা সম্পর্কে যা বলছেন তা একেবারে অন্য। তাঁরা সূত্র মারফত জানতে পেরেছেন, শ্বেতার সঙ্গে টাকার লেনদেন হয়েছিল হুগলির এই প্রোমোটারের। অয়ন তাঁকে একটি দামি গাড়িও দিয়েছিলেন। শুধু গাড়ি নয় শ্বেতার সম্পত্তি কেনার ক্ষেত্রেও অয়নের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা দেওয়া হয়েছিল। কেন অয়ন টাকা দিয়েছিলেন তারও উত্তর জানতে শ্বেতাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় ইডি। এদিকে শ্বেতার দাবি, কাজের সুবিধার জন্যই ওই বিলাসবহুল গাড়িটি অয়ন তাঁকে দেন।
এদিকে আপাতত ইডি-র তরফ থেকে প্রাথমিক যে তদন্ত করা হয়েছে তাতে এটাই সামনে এসেছে যে, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন অয়ন। তাঁর বিপুল সম্পত্তির উৎস কী, তা জানতে চান গোয়েন্দারা। কারণ, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় একাই অয়ন ৩৫০ কোটি টাকা পেয়েছে বলে দাবি ইডি-র।
এদিকে ইডি-র তরফ থেকে এও জানানো হয় যে, অয়ন বিভিন্ন সময় ওই সকল নামের তালিকা শ্বেতাকে পাঠিয়েছিলেন। ইডি সূত্রে খবর, তালিকা দেখে রিপ্লাইয়ে বিভিন্ন সাংকেতিক ইমোজি ব্যবহার করেছেন শ্বেতা চক্রবর্তী। কেন শ্বেতার কাছে তালিকা পাঠাতেন জানতে চাইছে ইডি তাও খতিয়ে দেখতে চাইছেন তদন্তকারী আধিকারিকেরা। পাশাপাশি ইডি-র তরফ থেকে এও জানানো হয় যে, অয়ন গ্রেপ্তারহওয়ার পর তাঁর ফোন থেকেই এই সকল টেক্সট মেসেজ পেয়েছে তদন্তকারী সংস্থা।
শুধু শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি নয়, অয়ন শীলের গ্রেপ্তারির পর একাধিক পুরসভার নিয়োগ সংক্রান্ত নথিও গোয়েন্দাদের হাতে পৌঁছায় বলে সূত্রের খবর। শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় এবং কুন্তল ঘোষের গ্রেপ্তারির পরেই ইডি-র স্ক্যানারে আসেন অয়ন শীল। সেক্ষেত্রে শ্বেতাকে তলব অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি অয়ন শীলের বাবা-মাকেও তলব করেছিলেন তদন্তকারীরা। অশক্ত শরীরে তাঁদেরকেও আসতে দেখা যায় ইডি-র দপ্তরে। তাঁরাও কোনও প্রশ্নের জবাব না দিয়ে সরাসরি প্রবেশ করেন সিজিও কমপ্লেক্সে।