মিড-ডে মিলে আর্থিক দুর্নীতি নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীকে চিঠি শুভেন্দুর

এবার মিড-ডে মিল প্রকল্পে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ তুললেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। রাজ্যের বিরোধী দলনেতার অভিযোগ, বাংলায় মিড ডে মিলের টাকা নয়ছয় করা হচ্ছে। পাশাপাসি কেন্দ্রের কাছে তাঁর আর্জি, একটি কেন্দ্রীয় অডিট টিম পাঠিয়ে এই বিষয়টির উপর নজর রাখা হোক।এই মর্মে একটি চিঠিও পাঠিয়েছেন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানকে।

মিড ডে মিল নিয়ে বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে শুভেন্দু অধিকারী উল্লেখ করেন, ‘ফান্ড ডাইভারশন করা হচ্ছে বাংলায়। ‘মিড-ডে মিল’-এর ভুয়ো বিল তৈরি করে টাকা নয়ছয় হচ্ছে।শাসকদল তাদের ব্যক্তিগত স্বার্থেও এই কেন্দ্রীয় বরাদ্দের টাকা ব্যবহার করছে। পাশাপাশি মিড ডে মিল  প্রকল্পের খরচ না হওয়া টাকার সুদ বেআইনিভাবে ব্যবহার করছে রাজ্য। ‘দুয়ারে সরকার’, মুখ্যমন্ত্রীর শুভেচ্ছা বার্তার মুদ্রণ এবং বিতরণ, ফ্লেক্স তৈরির মতো বিষয়ে ব্যবহার করা হচ্ছে এই অর্থ।এমনকী, তৃণমূলের নেতামন্ত্রীদের যাতায়াতের খরচ হিসাবেও এই প্রকল্পের টাকা ব্যবহার করা হচ্ছে।এরই পাসাপাশি  শুভেন্দু এও জানান, বরাদ্দ অর্থ ব্যবহারের গাইডলাইনও অমান্য করছে রাজ্য। কেন্দ্রের নিয়মমতো প্রতিদিন একটি করে ডিম দেওয়ার কথা রাজ্য সরকারি স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের। অথচ, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তা দেওয়া হয় না। তবে নিয়ম করে সেই ডিমের বিল দেখানো হয়। এই ধরনের অনিয়ম রুখতে প্রতিদিনের মেনু স্কুলের একটি বিশেষ জায়গায় টাঙিয়ে দেওয়ার কথা টিচার ইনচার্জ বা নোডাল টিচারের উপর দেওয়া উচিত। অথচ, রাজ্যের বেশিরভাগ স্কুলেই সেই নির্দেশ মেনে চলা হয় না। এই সব ঘটনাকে সামনে এনে এক পূর্ণাঙ্গ তদন্তের আর্জি এদিন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানকে জানিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী।

তবে শুভেন্দুর এই আর্জিকে কতটা মান্যতা দেবে কেন্দ্র তা নিয়েও কিন্তু প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। কারণ, মিড ডে মিল নিয়ে এদিকে এক বড়সড় ঘোষণা করেছে  রাজ্য সরকার। সেখানে বলা হয়েছে, পড়ুয়াদের পুষ্টির সঙ্গে কোনওরকম আপোসে রাজি নয় রাজ্য। আর  সেই কারণে এবার থেকে মিড ডে মিলে থাকবে মুরগির মাংসও।পাশাপাশি তাঁদের সপ্তাহে তিন দিন ডিম দেওয়া হবে এবং মরসুমি ফলও দেওয়া হবে। রাজ্যের তরফে এখনও পর্যন্ত এই মর্মে বরাদ্দ করা হয়েছে প্রায় ৩৭১ কোটি টাকা। সূত্রে খবর, প্রত্যেক পড়ুয়াপিছু ২০ টাকা করে বরাদ্দ বাড়িয়েছে রাজ্য।জানুয়ারি থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত নতুন মেনুতে খাবার দেওয়া হবে ছাত্রছাত্রীদের। ইতিমধ্যেই এই মর্মে জেলাশাসকদের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে রাজ্যের তরফে। উল্লেখ্য, রাজ্যে প্রায় ১ কোটি পড়ুয়ার মিড ডে মিলের খাদ্য তালিকায় মুরগির মাংস ফল যোগ হওয়ার ছাত্রছাত্রীদের পুষ্টির অভাব মিটতে চলেছে বলে মনে করা হচ্ছে। সপ্তাহে ৪ দিন অতিরিক্ত পৌষ্টিক আহার প্রদানের উদ্যোগ নিয়ে ইতিমধ্যেই চর্চা শুরু হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

20 − fifteen =