ডিএ ধর্নামঞ্চে রবিবার এসেছিলেন কংগ্রেস নেতা কৌস্তুভ বাগচি। পরদিন সোমবার-ই হাজির বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং সদ্য জেল থেকে জামিনে মুক্তিপ্রাপ্ত ছাড়া পাওয়া আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি। পরপর এই দুই ঘটনায় ডিএ আন্দোলনকারীরা যে বাড়তি অক্সিজেন পেল তা নিঃসন্দেহেই বলা যায়। রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ডিএ আন্দোলনকারীদের পাশে দাঁড়াতে সোমবার সরকারি কর্মচারীদের ধরনা মঞ্চে দুজনেই সশরীরে হাজির হতে দেখা যায় বিরোধী এই দুই নেতাকে।
সোমবার বিধানসভা থেকে বেরিয়ে সরাসরি শহিদ মিনারের ‘সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ’-এর ধর্নায় হাজির হয়ে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী কথা বলেন আন্দোলনকারীদের সঙ্গে। বিনা ‘শর্তে’ আন্দোলনকে সমর্থনের আশ্বাস দিয়ে আসেন তিনি। পাশাাপাশি এও জানান, ‘আমাদের কর্মচারি এবং শিক্ষক সংগঠনও এঁদের সঙ্গে যুক্ত আছেন। রাজনীতির বাইরে থেকে এই আন্দোলনকে আমরা সমর্থন জানাচ্ছি।‘ শুধু তাই নয়, এর পাশাপাশি মঞ্চে দাঁড়িয়েই রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনায় এদিন মুখর হতে দেখা যায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দুকে।
একই পথ অনুসরণ করে বিধানসভা থেকে নওশাদেরও গন্তব্য ছিল ডিএ আন্দোলনকারীদের ধরনা মঞ্চ। এদিনের ধর্নামঞ্চ থেকে নওশাদের বার্তা, শহরের কেন্দ্রবিন্দুতে গজিয়ে ওঠা আন্দোলন আগামী দিনে গ্রামাঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়বে বলে জানান নওশাদ। প্রসঙ্গত, সোমবার ‘সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের উদ্যোগে কেন্দ্রীয় হারে মহার্ঘ্য ভাতার দাবিতে আন্দোলনকারীদের ধর্না ৩৯ দিনে পা দিল।
এদিকে আগামী ১০ মার্চ ডিএ সহ একাধিক দাবিতে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের সংগঠন পশ্চিমবঙ্গ কো-অর্ডিনেশন কমিটি। একাধিক রাজ্য সরকারের কর্মচারীদের সংগঠন সেই ধর্মঘটকে সমর্থন জানিয়েছেন। ধর্মঘটের দিন চারেক আগেই দুই প্রধান বিরোধী নেতার ধর্না মঞ্চে উপস্থিতি বঙ্গ রাজনীতিতে বেশ তাৎপর্যপূর্ণ এক ঘটনা তা মানছেন বঙ্গের রাজনীতিবিদরা। অনেকের আবার এও মনে করছেন, সরকারি কর্মচারিদের আন্দোলনে প্রত্যক্ষ ভাবে না থেকে নীতিগতভাবে এই আন্দোলনকে ‘সমর্থন’ জানিয়ে সরকার বিরোধী জনরোষের ভাগীদার হতে চাইছে প্রত্যেক বিরোধী দলই। তারই প্রতিচ্ছবি দেখা গেল সোমবার।
এদিকে সোমবার এই দুই নেতা আসার পরই আন্দোলনকারীরা জানান, ‘আমাদের আন্দোলন থেকে পিছিয়ে আসার তো কোন প্রশ্নই উঠছে না। দাবি আদায় না হয় পর্যন্ত উলটে আন্দোলনের তীব্রতা আরও বৃদ্ধি পাবে।’ রাজনৈতিক মহলের ধারণা, আবাস যোজনার সমস্যা নিয়ে জেলায়, জেলায় বিক্ষোভের আঁচ অনেকটাই অস্তমিত কেন্দ্র থেকে রাজ্যে রিপোর্ট পাঠানোর পর। এমনই এক প্রেক্ষিতে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে সরকারি কর্মীদের ডিএ আন্দোলনের আঁচে সরকার বিরোধী জনমত গঠনের অস্ত্রকে তাতিয়ে নিতে চাইছে বিরোধী শিবির।