‘পুলিশকর্মীদের সাসপেন্ড করে কী হবে? সরকারি চাকরিতে সাসপেন্ড করা মানে আরও আরামের ব্যাপার।’ বুধবার পূর্ব মেদিনীপুরের একটি মামলায় এমনই মন্তব্য করতে শোনা গেল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষকে। শুধু তাই নয়, এদিনের এই মামলার প্রেক্ষিতে বিচারপতির ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয় পুলিশকে। এরই রেশ ধরে বিচারপতির এও বলেন, ‘সাসপেন্ড করা হলেও বেতনের একটা অংশ তাঁরা পাবে, আর অভিযুক্তদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বেআইনি কাজ করবে।’ আর এই প্রসঙ্গেই বিচারপতির মন্তব্য, পুলিশ এবং অভিযুক্তদের এই যোগসাজশ ভাঙতে হবে। একইসঙ্গে পুলিশ কর্মীদের আরও কড়া প্রশিক্ষণের প্রয়োজন রয়েছেন বলেও এদিনের মামলায় উল্লেখ করেন তিনি।
এরই পাশাপাশি পুলিশ কর্মীদের প্রশিক্ষণ নিয়ে বিচারপতি জানান, ‘পুলিশ কর্মীদের আইপিসি এবং সিআরপিসি নিয়ে আরও পড়াশোনা করতে হবে। জেলার পুলিশ সুপারকে এবিষয়ে উদ্যোগী হতে হবে।’ প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের একটি মামলায় চার্জশিট জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে দেরি করার অভিযোগ ওঠে তমলুক থানার বিরুদ্ধে। ইতিমধ্যে ৮ জন তদন্তকারী আধিকারিক বদল হয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে বিচারপতি এদিন এ প্রশ্নও করেন, ‘তাহলে শুধু একজনকে সাসপেন্ড কেন করা হয়েছে ? কেন একজন আধিকারিকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত হবে?’ একইসঙ্গে বিচারপতি এও জানান, এই অনিয়মে ৮ জন তদন্তকারী আধিকারিকই যুক্ত আছেন।
২০১৪ সালে তমলুক থানা এলাকায় মোবাইল টাওয়ার বসানো নিয়ে প্রতারণার অভিযোগ ওঠে নিউটাউনের একটি সংস্থার বিরুদ্ধে। সে সময়ে তদন্তে নেমে ১৫ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। কিন্তু সে সময়েও চার্জশিট সময়মত পেশ করা হয়নি বলে অভিযোগ। এরপর ২০২২ এর ডিসেম্বরে নিম্ন আদালতে পুলিশ চার্জশিট পেশ করে। অথচ দেখা যায়, সেই চার্জশিট ২০২২ সালের মার্চ মাসের তারিখের। এর বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন কয়েকজন অভিযুক্ত। পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপারকে সশরীরে হাজির থাকার নির্দেশ দেয় আদালত। সেই নির্দেশ মোতাবেক বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের শুনানিতে হাজির ছিলেন পুলিশ সুপার। বিচারপতির নির্দেশ, আইন মেনে যাতে নিম্ন আদালতে যাতে চার্জশিট পেশ করা হয়, তা নিশ্চিত করবেন রাজ্যের ডিজি।