নিজের প্রেমিকাকে খুন করার পরিকল্পনার ছক প্রায় দু’মাস আগে করে ফেলেছিল পুরাতন মালদা থানার বলরামপুর এলাকার কলেজ পড়ুয়া সুশান্ত চৌধুরী। তার জন্য মালদা শহরের রথবাড়ি এলাকায় একটি দোকান থেকে প্রায় ৬-৭ ইঞ্চির একটি ভোজালি আকারের ছুরি কিনছিল সে । আর তারপরই পরিকল্পনামাফিক গত ২ মে রাতে প্রেমিকা সুতপা চৌধুরীকে বহরমপুরের গোরাবাজার এলাকায় প্রকাশ্য রাস্তায় কুপিয়ে খুন করে প্রেমিক সুশান্ত চৌধুরী।
এদিকে এই ঘটনার পর সুশান্তকে নিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে মালদা শহরের রথবাড়ি এলাকায় নেতাজি পুরো মার্কেটে তদন্তে আসে বহরমপুর থানার পুলিশ। মালদা এবং বহরমপুর থানার পুলিশের যৌথ উদ্যোগে ওই এলাকার কোন দোকান থেকে ছুরি কেনা হয়েছিল সেটিও সুশান্তকে নিয়ে তদন্তকারী পুলিশ কর্তারা। যে দোকান থেকে ওই ধারালো ছুরি কিনেছিল অভিযুক্ত সুশান্ত চৌধুরী, সেই দোকানদারের সঙ্গে কথা বলেন বহরমপুরের তদন্তকারী পুলিশ কর্তারা।
যদিও এদিন পুলিশের গাড়িতে লাল টি-শার্ট পড়ে বেশ খোশ মেজাজে ছিল সুতপা কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত সুশান্ত চৌধুরী। কলেজ পড়ুয়া প্রেমিকাকে খুন করে সে যে অনুতপ্ত নয়, তার হাবভাব – ভঙ্গিমায় তা পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাতে মালদা শহরের নেতাজি পুরো মার্কেটে আচমকাই বহরমপুরে কলেজ ছাত্রী খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত সুশান্ত চৌধুরীকে নিয়ে আসতেই ব্যাপক শোরগোল পড়ে যায়। রীতিমতো পুলিশি ঘেরাটোপের মধ্যে গাড়ি করে অস্ত্র কেনার দোকানে নিয়ে আসা হয় সুশান্তকে। এরপর বিভিন্ন ফুটেজ সংগ্রহ করে বহরমপুর এবং ইংরেজবাজার থানার পুলিশ।
উল্লেখ্য, মৃত কলেজ ছাত্রী সুতপা চৌধুরীর বাড়ি ও মালদা শহরের এয়রভিউ কমপ্লেক্স এলাকায় এবং ওই ছাত্রীর আদি বাড়ি বৈষ্ণবনগরে। অভিযুক্ত প্রেমিক সুশান্ত চৌধুরীর বাড়ি পুরাতন মালদা থানার বলরামপুর এলাকায়। কিন্তু সুতপার এয়ারভিউ কমপ্লেক্সের বাড়ির সামনেই সুশান্তর এক আত্মীয়ের বাড়িতে যাতায়াতের সুবাদে সম্পর্ক তৈরি হয় দুজনের মধ্যে। এরপরই প্রেম। দীর্ঘ কয়েক বছর পর পরই তাদের মধ্যে বিচ্ছেদ তৈরি হয়। আর সেখান থেকেই খুনের এই নৃশংস কাণ্ড বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, সুতপাকে খুন করার জন্য ব্যবহৃত ভোজালিটি সুশান্ত যে দোকান থেকে কিনেছিল সেই দোকানের খোঁজে নেতাজি পুর বাজারে যায় তদন্তকারী দলটি। কথা বলেন ওই দোকানের মালিকের সঙ্গে। পুলিশ সূত্রে খবর, সুতাপাকে সরিয়ে ফেলার ছক দীর্ঘদিন ধরেই খুঁজছিল সুশান্ত। তাই খুনের যাবতীয় প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিল সে। পুলিশ আরও জানতে পেরেছে, মেয়েকে উত্যক্ত করার প্রতিবাদে ২০১৭ সালে মালদা মহিলা থানায় সুশান্তর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিল সুতপার পরিবার। বৃহস্পতিবার রাতে তদন্ত সেরে মালদা ছাড়ে তদন্তকারী দলটি।