রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের গতিবিধির উপর নজরদারি চালানো হচ্ছে, এবার এমনই অভিযোগ সামনে এল রাজভবন সূত্রে। আর তাতেই যোগ হল রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাতে এক নয়া মাত্রা। যদিও কলকাতা পুলিশের তরফ থেকে জানানো হচ্ছে, তাদের কাছে এখনও পর্যন্ত কোনও লিখিত অভিযোগ আসেনি। তবে এমনই এক ঘটনাকে ঘিরে আপাতত বঙ্গ রাজনীতিতে উত্তেজনার পারদ ঊর্ধ্বমুখী।
এদিকে রাজভবন সূত্রে দাবি করা হচ্ছে, বেশ কয়েকজন পুলিশকর্মীর গতিবিধির ওপর সন্দেহ করা হচ্ছে। আর সেই কারণেই আপাতত তাঁদের রাজভবনে যেতে বারণ করা হয়েছে। এরই পাশাপাশি রাজভবন সূত্রে এও জানা যাচ্ছে, এই বিষয়টি রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতরেরও নজরে আনা হয়েছে। রাজভবন সূত্রে খবর, এই ঘটনায় স্বরাষ্ট্র দফতরের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলকেও বিষয়টি জানানো হয়েছে বলে খবর। শুধু তাই নয়, রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস এই বিষয়টি নিয়ে কলকাতার পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে কথা বলতে চান বলেও রাজভবন সূত্রে খবর।
প্রসঙ্গত, জগদীপ ধনখড় পরবর্তী জমানায় সিভি আনন্দ বোস বাংলার সাংবিধানিক প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার শুরুর দিকে রাজ্য-রাজভবন সম্পর্ক বেশ সুমধুর-ই ছিল। রাজ্যপালকে বাংলার সঙ্গে আরও আপন করে নিতে, তাঁর হাতখড়ি দেওয়ার ব্যবস্থাও করেছিল রাজ্য সরকার। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে একের পর এক ইস্যুতে রাজ্য-রাজভবনের মধ্যে তৈরি হচ্ছে সংঘাতের বাতাবরণ।
যে শিক্ষামন্ত্রী এককালে রাজ্যপালের পাশে বসে একসঙ্গে সাংবাদিক বৈঠক করেছিলেন, সেই ব্রাত্য বসুই এখন প্রায়ই বিদ্ধ করছেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসকে। রাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়োগ ঘিরে সেই সংঘাতের বাতাবরণ আরও তীব্র হয়েছে। রাজ্যপাল যেভাবে একের পর এক বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ করেছেন, তা একেবারেই না-পসন্দ রাজ্য সরকারের। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু তো বটেই, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এই নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলতেও দ্বিধা বোধ করেননি। এরপরই ধূপগুড়ির বিধানসভা উপনির্বাচনে তৃণমূলের জয়ী প্রার্থী নির্মলচন্দ্র রায়ের বিধায়ক পদে শপথ গ্রহণ নিয়েও তৈরি হয়েছে জটিলতা। যে কারণে এখনও শপথ গ্রহণ করা হয়নি বিধায়কের। রাজ্যের সঙ্গে রাজভবনের একের পর সংঘাতের মাঝে এবার এই চাঞ্চল্যকর দাবি যে সংঘাতের আবহে নতুন মাত্রা যোগ করল তাতে সন্দেহ নেই।