বিস্ময়ের বিস্ময়, মাত্র ১৮ মাসেই ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডসে ভ্রাজিষ্ণু!

মহেশ্বর চক্রবর্তী

মুখে এখনও ভালো করে কথা ফোটেনি। কিন্তু সেই ছোট্ট শিশুই হাতের ইশারায় লুপ্ত হয়ে যাওয়া প্রাণী থেকে হাজারো পশু-পাখি, শতাধিক দেশের পতাকা এক লহমায় সঠিকভাবেই দেখিয়ে দিচ্ছে। মাত্র ১৮ মাস বয়সেই অবাক করা ওই শিশুর বিস্ময় মস্তিষ্ককে মান্যতা দিয়েছে ‘ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডস’। ঘটনাটি চুঁচুড়ার কাপাসডাঙা শিবতলা এলাকার। ওই এলাকার বাসিন্দা পেশায় ঘুড়ি ব্যাবসায়ী দিলীপ ভট্টাচার্য ও গৃহবধূ কাকলী ভট্টাচার্যের একমাত্র পুত্র ১৯ মাস বয়সের ভ্রাজিষ্ণু। দুধের বয়স থেকেই ওই শিশুর মতিগতি যে আর পাঁচজনের থেকে আলাদা তা লক্ষ্য করেন কলাবিভাগে মাস্টার্স করা কাকলীদেবী। বছর খানেক বয়স হতেই ভ্রাজিষ্ণুকে বই কিনে দেওয়া শুরু করে তাঁর বাবা-মা। কিন্তু সাধারণ কাগজের বইয়ের পাতা ভ্রাজিষ্ণুর কোমল হাতে কোনওমতেই টিকসই হয় না। একের পর এক বই ছিঁড়ে ফেলে সে। এরপর শুরু হয় প্লাস্টিক কোডের পাতার বই কেনা। ছবি সম্বলিত সেই বই থেকেই শেখার শুরু ছোট্ট ভ্রাজিষ্ণুর। কাকলীদেবীর বক্তব্য কোনও ছবি দেখিয়ে একবার নাম বললেই ওর মাথায় ঢুকে যেত। পরে শুধু নাম বললেই ও সেই ছবির দিকে হাত দেখাতো। বিষয়টি যখন বুঝতে পারলাম তখন ওর বয়স দেড় বছর। সেই সময় থেকেই ওর মাথায় গেঁথে যাওয়া প্রতিটি বস্তুর রঙিন প্রতিলিপি করে ঘরের দেওয়ালে সাঁটানো শুরু করলাম। এযাবৎ প্রায় দুই হাজারের বেশি অবজেক্টের প্রতিলিপি দেওয়ালে সাঁটানো রয়েছে। সেখানে শতাধিক দেশের জাতীয় পতাকা, পৃথিবী থেকে লুপ্ত হয়ে যাওয়া বিভিন্ন প্রাণী, বর্তমান জগতের প্রাণী, ফল-মূল, বিভিন্ন ধরনের গাড়ি; একবার নাম বললেই এক লহমায় হাতের ইশারা সেই ছবির দিকে তাঁক করছে ভ্রাজিষ্ণুর। এরপরই ইন্টারনেট ঘেঁটে ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডসের সঙ্গে যোগাযোগ করে ভ্রাজিষ্ণুর বাবা-মা। রেকর্ডস সংস্থার কথামতো ভ্রাজিষ্ণুর বস্তু পরিচিতির সময়ের বেশকিছু ভিডিও করে পাঠানো হয় গতমাসে। সেই ভিডিও দেখে তাজ্জব ‘ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডস’ সংস্থাও। একমাসের মাথায় ভ্রাজিষ্ণুর বাড়িতে ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডস থেকে শংসাপত্র পৌঁছল ছোট্ট ভ্রাজিষ্ণুর বাড়িতে। এই মুহূর্তে রাজ্যের সবথেকে ছোট শিশু হিসেবে ভ্রাজিষ্ণুর নাম ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডসে এল বলে জানা যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

three × 2 =