একই ব্যাঙ্কে বেনামে ১৭৭ টা অ্যাকাউন্ট। কোটি কোটি টাকার লেনদেন। এরই পাশাপাশি খাদ্য দপ্তরের সঙ্গে যোগ। আর সব থেকে বড় কথা হল সব অ্যাকাউন্টে একটাই সই।কীভাবে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের নজর এড়িয়ে এমন সব অ্যাকাউন্ট চলল দিনের পর দিন তা নিয়ে তৈরি হয়েছে প্রশ্ন। একইসঙ্গে এ প্রশ্নও উঠেছে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষেরএই সব ঘটনা চোখ এড়িয়ে গেছে নাকি দেখেও না দেখার ভান করলেন এই দায়িত্বে থাকা ব্যাঙ্কের আধিকারিকেরা। এবার এই সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে ব্যস্ত সিবিআই।বৃহস্পতিবার বীরভূমের সিউড়িতে সমবায় ব্যাঙ্ক থেকে কেন্দ্রীয় সংস্থার হাতে যে তথ্য উঠে এসেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে এই ১৭৭ টি অ্যাকাউন্ট সবকটি-ই বেনামে খোলা হয়েছিল। আর যাঁদের নামে রয়েছে সে সব অ্যাকাউন্ট, তাঁরা নিজেরাই জানেন না যে তাঁধের নামে খোলা হয়েছে কোনও অ্যাকাউন্ট। পাশপাাশি এটাও জানা গেছে, এই সব অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে মূলত এলাকার গরিব চাষিদের কাছ থেকে নথিপত্র সংগ্রহ করে। এবার এই সব অ্যাকাউন্টের তথ্য তালাশ করতে নিজাম প্যালেসে তলব করা হয় ওই ব্যাঙ্কের ম্যানেজারকে। আর কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার এই নোটিশ পেয়েই শুক্রবার সকালে ব্যাঙ্ক ম্যানেজার অভিজিৎ সামন্ত নথি নিয়ে পৌঁছে যান সিবিআই দপ্তরে। প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার দুপুরে আচমকাই ওই সমবায় ব্যাঙ্কে যায় সিবিআই। সারাদিন তল্লাশি চালানোর পর ১৭৭ টি অ্যাকাউন্ট সিল করা হয়। কারণ, প্রত্যেকটি অ্যাকাউন্টে একজনের সই রয়েছে দেখে সন্দেহ হয় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার আধিকারিকেদর। পরে আরও নথিপত্র ঘেঁটে যে তথ্য সামনে আসে, তাতে দেখা যায়, অন্তত ১০ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে ওই সব অ্যাকাউন্ট থেকে। লেনদেনের সঙ্গে খাদ্য দপ্তরের যোগ আছে বলেও সিবিআই সূত্রে খবর।গরু পাচারের কালো টাকা এর মাধ্যমে সাদা করা হত কি না, এই টাকার সঙ্গে অনুব্রত মণ্ডলের কোনও যোগ আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে সিবিআই সূত্রে খবর। একইসঙ্গে সিবিআই সূত্রে এও জানানো হয়েছে, এমন কিছু তথ্য বা নথি তাদের হাতে এসেছে, যাতে সন্দেহ হওয়াই স্বাভাবিক। কারণ, বর্তমান ম্যানেজার ও প্রাক্তন ম্যানেজারের আমলে খোলা হয়েছে সে সব অ্যাকাউন্ট। এসব দেখেও কেন তাঁদের সন্দেহ হল না, তা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন গোয়েন্দারা। কোনও পদক্ষেপ কেন নেওয়া হয়নি বা এ ব্যাপারে কারও কোনও নির্দেশ ছিল কি তাও জানতে চান সিবিআই আধিকারিকেরা। পাশাপাশি তাঁরা এও জানার চেষ্টা করছেন, টাকার উৎস কী তা নিয়েও। এদিকে সিবিআই সূত্রে খবর, অ্যাকাউন্টগুলি খতিয়ে দেখার জন্য বিশেষ স্ক্রুটিনি টিম তৈরি করা হচ্ছে।হ্যান্ড রাইটিং এক্সপার্টদের দিয়ে সইগুলি পরীক্ষা করা হবে। কারণ, কাদের সঙ্গে লেনদেন চলত, তা খুঁজে বের করতে তৎপর সিবিআই।