কেন্দ্রীয় এজেন্সির অপব্যবহারের অভিযোগ তুলে শীর্ষ আদালতে ধাক্কা ১৪ বিরোধী দলের

বিরোধীরা ফের ধাক্কা খেল শীর্ষ আদালতে। সিবিআই, ইডি, এনআইয়ের মতো কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলির অপব্যবহার করছে বিজেপি সরকার, এমন অভিযোগ জানিয়ে বিরোধীরা এককাট্টা হয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে মামলা করে সুপ্রিম কোর্টে। তবে তাতে কাজের কাজ কিছু হল না। ১৪ বিরোধী দলের সেই আবেদন খারিজ করে দিল ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। এই প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, এই মামলায় সুনির্দিষ্ট তথ্যের অভাব ছিল যথেষ্ট। আদালতের জন্য আইনের সাধারণ নীতি নির্ধারণ করা একটি বিপজ্জনক প্রস্তাব। এই কারণেই এই প্রস্তাব মেনে নেওযা সম্ভব হচ্ছে না। তাই এই আবেদন খারিজ করে দেওয়া হচ্ছে। সঙ্গে এও জানানো হয়, রাজনীতিবিদদের জন্য আলাদা করে আইন প্রণয়ন সম্ভব নয়। যদি নির্দিষ্ট কোনও অভিযোগ থাকে, সেটা আলাদা করে গ্রহণ করা যেতে পারে। প্রসঙ্গত, বুধবার প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বে তিন বিচারপতির বেঞ্চে অপর দুই সদস্য বিচারপতি ছিলেন পি এস নরসিমা এবং বিচারপতি জে বি পার্দিওয়ালা।
এদিকে শীর্ষ আদালত সূত্রে খবর, এদিকে সূত্রে খবর, এই মামলায় উল্লেখ করা হয়েছিল, কেন্দ্রীয় সরকার সিবিআই, ইডি-র মতো কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলিকে বিরোধী দলের নেতাদের উপর প্রয়োগ করছে অন্যায়ভাবে। কেন্দ্রের বিরোধী মত পোষণ করলেই কেন্দ্রীয় এজেন্সি দিয়ে বিরোধীদের হয়রান করা হচ্ছে, ভয় দেখা হচ্ছে। বিরোধীদের দমন করতে কেন্দ্রীয় সরকার অপব্যবহার করছে কেন্দ্রীয় এজেন্সির। আর এই ইস্যুতেই ১৪ বিরোধী দল এক হয়ে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় এবং বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালার সমন্বয়ে গঠিত একটি ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়। যৌথ আবেদনে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলির জন্য সুনির্দিষ্ট নির্দেশিকা চেয়েছিল তারা। ১৪ বিরোধী দলকে এ বিষয়ে নেতৃত্ব দিয়েছে কংগ্রেস। এছাড়া গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে তৃণমূল কংগ্রেস, ডিএমকে, আরজেডি, বিআরএস-সহ বিজেপি বিরোধী প্রায় সব গুরুত্বপূর্ণ দল। এরপরই প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ এই মর্মে জানান, একটি বাস্তব প্রেক্ষাপট ছাড়া সাধারণত নির্দেশ জারি করতে পারে না আদালত।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি আম আদমি পার্টির নেতা দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয় দিল্লির আবগারি নীতি বাতিলের মামলায়। তাঁর বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে অন্যায়ভাবে ব্যবহার করা হয়েছিল বলে অভিযোগ করে আম আদমি পার্টি। এরপরই ১৪ বিরোধী দলকে সমন্বিত করে একটি পিটিশন দেওয়া হয় সুপ্রিম কোর্টের কাছে।
এখানে বলে রাখা শ্রেয়, গত ২৪ মার্চ আবেদনের দ্রুত শুনানির অনুরোধ করে সিনিয়র আইনজীবী তথা কংগ্রেস নেতা অভিষেক মনু সিংভি বলেছিলেন, ২০১৪ সাল থেকে যে সমস্ত রাজনৈতিক নেতাদের বিরুদ্ধে সিবিআই-ইডি তদন্ত করছে, তাঁদের শতকরা ৯৫ জনই বিরোধী দলের। এটা স্পষ্টত বিরোধীদের কণ্ঠরোধ। বিরোধীদের বক্তব্য ছিল, তারা কোনও তদন্ত প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করতে চান না। কিন্তু যেভাবে গণতন্ত্রের কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে, সেটা নিয়েও আদালতের কিছু করা উচিত। অন্তত নেতাদের গ্রেপ্তারি নিয়ে নতুন গাইডলাইন দিয়ে দেওয়া হোক। তবে এদিন কোনও আবেদনই গ্রহণ করল না শীর্ষ আদালত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

4 − 2 =