বিচারপতি নিয়োগে কলেজিয়ামের সব তথ্য প্রকাশ্যে ‘না’, জানাল শীর্ষ আদালত

বিচারপতিদের নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে কলেজিয়াম বৈঠকের তথ্য প্রকাশ্যে আনা সম্ভব নয়, শুক্রবার স্পষ্ট ভাষায় এমনাটই জানিয়ে দিল শীর্ষ আদালত। অর্থাৎ, মামলাকারীর অনুরোধ খারিজ। এই প্রসঙ্গে শুক্রবার সর্বোচ্চ আদালতের তরফ থেকে এও বলা হয়, ‘কলেজিয়াম বৈঠকে যা কিছু আলোচনা হয়েছে, তা প্রকাশ্যে আনা সম্ভব নয়। শুধু মাত্র চূড়ান্ত সিদ্ধান্তই প্রকাশ্যে আসতে পারে।’

উল্লেখ্য, ২০১৮-র ১২ ডিসেম্বর দু’জন বিচারপতির নিয়োগ নিয়ে বৈঠকে বসে সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম। সেই বৈঠকের তথ্য প্রকাশ্যে আনার দাবি জানিয়ে ‘তথ্য জানার অধিকার’ আইনে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন সমাজকর্মী অঞ্জলি ভরদ্বাজ। শুক্রবার তাঁর সেই আবেদন নস্যাৎ করে দেয় শীর্ষ আদালত। এই প্রসঙ্গে সর্বোচ্চ আদালতের তরফে জানানো হয়, ‘কলেজিয়ামের বৈঠকে থাকা একজন বিচারপতির একটি সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে ওই আবেদন করেছিলেন মামলাকারী।‘ তবে এই ইস্যুতে বিচারপতিরা নতুন করে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

২০১৮-র সুপ্রিম কোর্টের ওই কলেজিয়ামের বৈঠকে ছিলেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ। এছাড়াও আরও চারজন বর্ষীয়ান বিচারপতি উপস্থিত ছিলেন সেদিনের বৈঠকে। তাঁরা হলেন, বিচারপতি মদন বি লোকুর, বিচারপতি একে শিকরি, বিচারপতি এসএ বোপডে এবং বিচারপতি এনভি রামানা। সূত্রের খবর, বিচারপতিদের নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রত্যেকেই সহমত পোষণ করেন। পরবর্তীকালে কলেজিয়ামের সুপারিশ করা বিচারপতিদের নিয়োগের ক্ষেত্রে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে টালবাহানার অভিযোগ ওঠে। অন্যদিকে ওই সময়ে কলেজিয়াম বৈঠকের কোনও তথ্যই সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে আপলোড করা হয়নি। ওই বৈঠকের ঠিক এক বছরের মাথায় ২০১৯-এ এই নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন বিচারপতি লোকুর।

শুধু তাই নয়, কলেজিয়ামের সুপারিশ করা বিচারপতিদের নিয়োগের ক্ষেত্রে কেন্দ্রের টালবাহানা নিয়ে চলতি বছরের নভেম্বরেই অসন্তোষ প্রকাশ করে সুপ্রিম কোর্ট। বৃহস্পতিবার এই ইস্যুতে অ্যাটর্নি জেনারেল আর বেঙ্কটরামানিকে বিচারপতি সঞ্জয় কিষণ কউলের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চের তরফে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়, কলেজিয়াম ব্যবস্থা দেশের একটি আইন। তার বিরুদ্ধে সরকারি পদাধিকারীদের মন্তব্যকে আদালত ভাল ভাবে নিচ্ছে না। সরকারকে নির্ধারিত নীতি মেনে চলার জন্য আদালত পরামর্শ দিচ্ছে বলেও বেঞ্চের তরফ থেকে জানানো হয়।

এদিকে সম্প্রতি বিচারপতিদের নিয়োগের ক্ষেত্রে কলেজিয়াম ব্যবস্থার কড়া সমালোচনা করেন উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনকড় এবং কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী কিরেন রিজিজু। পরে এই নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে একটি মামলাও দায়ের হয়। বর্তমানে সেই মামলার শুনানি চলছে বিচারপতি কউলের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

17 − fourteen =